শিকল পরিয়ে স্ত্রীকে খুঁটিতে বেঁধে রাখলেন স্বামী, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
Published: 13th, April 2025 GMT
শিকল পরিয়ে স্ত্রীকে বাড়ির পিলারের সঙ্গে বেঁধে রেখেছেন স্বামী। পাশে উৎসুক জনতা। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়।
গৃহবধূর দাবি, তার স্বামী অন্য মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। আর স্বামীর দাবি, তার স্ত্রী পরকীয় করেন এবং টাকা নিয়ে পালিয়েছেন।
শিকলবন্দি ওই গৃহবধূর নাম নাসরিন বেগম (২৪)। ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারি ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে। নাসরিন ওই গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী। তিনি একই ইউনিয়নের বাহারা গ্রামের ওসমান শেখের মেয়ে।
ভিডিওতে দেখ গেছে, গৃহবধূ নাসরিনের কোমরে শিকল পরানো। শিকলের অপর প্রান্ত পিলারের সঙ্গে তালা দিয়ে আটকানো। একটি বেঞ্চে বসে আছেন গৃহবধূ নাসরিন। তার পাশে বসে আছেন স্বামী আব্দুর রহমান, তার কাছে বড় ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। সামনে অন্য একটি মেয়ের কোলে তাদের ছোট ছেলে। চারপাশে উৎসুক জনতার ভিড়।
নাসরিন বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৩ সালে সামাজিকভাবে আব্দুর রহমানের সঙ্গে নাসরিনের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ৩ সন্তান রয়েছে। কয়েক মাস আগে আব্দুর রহমান অন্য মেয়েদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে তা তার স্ত্রী জানতে পারেন। এরপর নাসরিন বেগম টিকটক আইডি খোলেন। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে তার স্বামী নাসরিনকে গালাগাল ও মারধর করেন। ২৫ শে ফেব্রুয়ারি বেধড়ক মারধর করলে স্বামীর সংসার করবেন না বলে জানান নাসরিন। ওইদিন তিনি বাড়ি থেকে বের যান এবং ওঠেন বোনের বাসায়। পরে সেখান থেকে খুলনায় চলে যান। গতকাল (শনিবার) নাসরিনের ভাই মিটল শেখকে দিয়ে খুলনা থেকে স্ত্রীকে বাগিতে নিয়ে আসেন এবং কোমরে শিকল পরিয়ে ঘরের পিলারের সঙ্গে বেঁধে রাখেন আব্দুর রহমান।
নাসরিনের বোন আসমা বেগম বলেন, ‘গতকাল নাসরিনকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিল। রাতে তার শিকল খুলে দেওয়া হয়। এর আগেও কয়েকবার আমার বোনকে মারধর করা হয়। আজ বিকেলে পরিবারের লোকদের নিয়ে বসার কথা রয়েছে। প্রয়োজন হলে মামলা করব।’
আব্দুর রহমান বলেন, ‘নাসরিন অন্য ছেলেদের সঙ্গে পরকীয়া করে। ২৫ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। নাসরিনের নামে ব্যাংকে আরও টাকা রয়েছে। এসব টাকা উত্তোলন করতে হবে। এমন কথা বলে তার ভাইকে দিয়ে খুলনা থেকে এনে শিকলবন্দি করে রেখেছিলাম। রাতে খুলে দিয়েছিলাম।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ হবধ গ প লগঞ জ গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পতন চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে গ্লাসগোগামী একটি ফ্লাইটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি লন্ডনের কাছে বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরের বাসিন্দা।
অভয় নায়েক ইজিজেট ফ্লাইটে হামলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার মতো আচরণ করেছেন। তিনি উড়োজাহাজে বোমা ফাটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি মাঝ আকাশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে চিৎকার করেছিলেন, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
ওই ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, অভয় নায়েক স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমেরিকার পতন হোক’, ‘ট্রাম্পের পতন হোক’। এরপরই তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ (যার অর্থ ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’) বলে স্লোগান দেন। পরে দুজন ব্যক্তি তাঁকে কাবু করে উড়োজাহাজের মেঝেতে ফেলে দেন।
ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি কোন ধর্মের অনুসারী, সে ব্যাপারে তাৎক্ষিণক কিছু জানা যায়নি।
ওই ব্যক্তির এমন আচরণের পর পাইলটরা বাধ্য হয়ে গ্লাসগোতে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানেই স্কটিশ পুলিশ এসে অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করে।
স্কটল্যান্ডের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গ্লাসগোতে পৌঁছানো ইজিজেটের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ঘটনাটি এককভাবে ওই ব্যক্তির, অন্য কেউ জড়িত নন। যেসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে, সেগুলো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’
উড়োজাহাজ অবতরণের পরই অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
ইজিজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেপরোয়া আচরণের কারণে একজন যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।’
পাইসলি শেরিফ আদালতে হাজিরার সময় অভয় নায়েক কোনো বক্তব্য দেননি। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।