চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা মঞ্চ, প্যান্ডেল, চেয়ার, ব্যানারসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বেশ কয়েকজন যুবক এসব সরঞ্জাম ভেঙে তছনছ করেন বলে জানান আয়োজকরা। 

এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকালের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। 

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো.

আলমগীর হোসেন বলেন, ভাঙচুরের ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিসি হিলে নববর্ষ উদযাপন পরিষদের অন্যতম সংগঠক প্রণব চৌধুরী সমকালকে বলেন, পহেলা বৈশাখের বর্ণাঢ্য আয়োজনকে ঘিরে এখানে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে পুরো ডিসি হিলে প্যান্ডেল তৈরিসহ নানা সাজসজ্জা করা হয়েছিল। তবে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন যুবক প্রবেশ করে মঞ্চ থেকে শুরু করে সবকিছু ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। বৈশাখের আগের দিন এমন ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি বড় ধাক্কা। এমন ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। এর প্রতিবাদে ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। 

বর্ষবরণের প্রস্তুতির মধ্যেই আজ রোববার ডিসি হিলে ‘সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ’ পহেলা বৈশাখের নানা আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। 

পরিষদের সমন্বয়কারী সুচরিত দাশ খোকন বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে ৪০-৫০ যুবক এসে ডিসি হিলে আমাদের অনুষ্ঠান মঞ্চে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় প্যান্ডেলসহ মঞ্চের সামনে থাকা বেশকিছু চেয়ার। সোমবার সকাল থেকে এখানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরুর কথা ছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঞ্চ তৈরি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। এখন দুর্বৃত্তদের হামলায় সবকিছুই তছনছ হয়ে গেছে। তাই এখানে আর পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আবদুল করিম বলেন, ‘মঞ্চ ভাঙচুরের বিষয়টি আমরা শুনেছি। ঘটনাস্থলে আমাদের একটি টিম আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ খ র অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।

মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।

জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।

এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ