বাংলা নববর্ষ উদযাপনে পান্তা ইলিশের একটি রেওয়াজ আছে। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ এলে বাজারে ইলিশের চাহিদা ও দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এবার বাজারে বড় সাইজের ইলিশের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক থাকলেও ক্রেতা কম বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক কেজি বা একটু বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সুইটি রানী রাইজিংবিডিকে বলেন, “পয়লা বৈশাখে পান্তা ইলিশ না খেলে নববর্ষ উদযাপন হবে কী করে? তাই স্বামীকে নিয়ে ইলিশ নিতে এসেছি। এখানে ভালো মানের ইলিশ পাওয়া যায়। আমি এক কেজি ওজনের দুটি ইলিশ নিয়েছি। আমার কাছ থেকে চার হাজার টাকা রেখেছে। গত সপ্তাহেও এই দামে নিয়েছি।”
আরো পড়ুন:
কড়া নাড়ছে ঈদ, চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা
শেষ মুহূর্তে জমজমাট ঈদের কেনাকাটা
সাজ্জাদুল ইসলাম নামের আরেকজন ক্রেতা রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমাদের অফিসের জন্য ১৫ কেজি ইলিশ নিয়েছি। অফিসের সবাই ইলিশ দিয়ে নববর্ষ উদযাপন করব। ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম রেখেছে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে। অন্য সময় হয়তো ১ হাজার ৫০০ তে পেতাম। তবে এখানকার মাছগুলো টাটকা।”
পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা কাইয়ুম মজুমদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে অন্য বছরের তুলনায় ইলিশের দাম কম দেখলাম। বড় ইলিশ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মধ্যে। কিন্তু যারা মধ্যবিত্ত রয়েছে তাদের পক্ষে এই দামেও ইলিশ কেনা সম্ভব না।”
কারওয়ান বাজারে সুজন মৎস্য আড়ৎ এর স্বত্বাধিকারী মো.
বাবুল মৎস্য আড়ৎ এর ইলিশ বিক্রেতা বাবুল মোল্লা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে ইলিশের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এর অন্যতম কারণ বড় ইলিশ মাছের সরবরাহ ঠিক আছে।”
ঢাকা/রায়হান/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
যাঁরা কল্পকাহিনিভিত্তিক সিনেমার ভক্ত, তাঁদের অনেকের কাছে সুপারম্যান ভীষণ প্রিয়। সুপারম্যান সিরিজে দেখা যায়, সুপারম্যান যেখানকার মানুষ, সেই কাল্পনিক গ্রহের তেজষ্ক্রিয় পদার্থ ক্রিপ্টোনাইট। কাল্পনিক ক্রিপ্টোনাইটের বিপরীতে জ্যাডারাইট নামের সাদা ও পাউডারময় একটি পদার্থ নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এই পদার্থ কোনো বিকিরণ নির্গত করে না। এটি সার্বিয়ার একটি অঞ্চল থেকে আসে। বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, ‘ক্রিপ্টোনাইটের মতো এই উপাদান আমাদের গ্রহের জন্য সবুজ ভবিষ্যৎ তৈরির সুযোগ দিচ্ছে।’ যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি জাদুঘরের গবেষকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন। বিরল লিথিয়াম বহনকারী এই খনিজ পৃথিবীর শক্তির চাহিদার জন্য একটি গেমচেঞ্জার হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
জ্যাডারাইট সার্বিয়ার জ্যাডার অববাহিকা অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই খনিজের সঙ্গে কাল্পনিক ক্রিপ্টোনাইটের আশ্চর্যজনক মিল রয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বৈদ্যুতিক যানবাহনের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত শক্তি সরবরাহ করার জন্য পর্যাপ্ত লিথিয়াম সরবরাহ করতে পারে এই খনিজ। এখন বছরে এক লাখ টন লিথিয়াম উৎপাদিত হয়। পেট্রোল ও ডিজেল গাড়ির বিপরীতে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যাটারির চাহিদা মেটাতে লিথিয়াম প্রয়োজনীয় পরিমাণের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ পাওয়া যায়।
বিজ্ঞানী রবিন আর্মস্ট্রং বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তির চাহিদা মেটাতে লিথিয়ামের অব্যাহত চাহিদা রয়েছে। খনন করে সংগ্রহ করা হলে জ্যাডারাইটের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের বেশির ভাগ লিথিয়াম স্পোডুমিন নামক একটি খনিজ থেকে আসে। জ্যাডারাইট থেকে লিথিয়াম বের করার চেয়ে স্পোডুমিন থেকে লিথিয়াম সংগ্রহে বেশি শক্তি লাগে। লিথিয়াম সংগ্রহের সময় একটি দরকারি উপজাত হিসেবে বোরন পাওয়া যায়।
জ্যাডারাইট ২০০৪ সালে রিও টিন্টো নামক একটি খনি কর্পোরেশনের মাধ্যমে প্রথম আবিষ্কৃত হয়। ভূতাত্ত্বিকেরা একে অনন্য উপাদান বললেও প্রকৃত সম্ভাবনা উপলব্ধি করতে পারেননি। ২০০৬ সালের ‘সুপারম্যান রিটার্নস’ সিনেমায় ক্রিপ্টোনাইটের জন্য উদ্ভাবিত সূত্রের সঙ্গে রাসায়নিক সূত্রের মিল পাওয়া যায়। সিনেমায় সুপারম্যানের চিরশত্রু লেক্স লুথার ক্রিপ্টোনাইট চুরি করে কাল্পনিক এক সূত্র দিয়ে। সোডিয়াম লিথিয়াম বোরন সিলিকেট হাইড্রোক্সাইড উইদ ফ্লোরিনের কথা বলা হয় সিনেমায়। যেখানে জ্যাডারাইটের রাসায়নিক গঠন সোডিয়াম লিথিয়াম বোরন সিলিকেট হাইড্রোক্সাইড। এ আবিষ্কারের পর থেকে বিশেষজ্ঞেরা নতুন লিথিয়ামের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। বিজ্ঞানীদের মতে, জ্যাডারাইট তৈরির জন্য ক্ষারসমৃদ্ধ হ্রদ, লিথিয়াম–সমৃদ্ধ আগ্নেয়গিরির কাচ ও খনিজ পদার্থের স্ফটিক কাঠামোর কাদামাটিসহ বিরল অবস্থার প্রয়োজন হয়।
সূত্র: এনডিটিভ