চট্টগ্রামে জোড়া খুনের মামলায় ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাসহ তিনজনকে সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক আজ রোববার এ আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামে জোড়া খুনের মামলায় তামান্নাসহ তিনজন আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ তাঁদের চার সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.

আসাদ উদ্দিন।

পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক প্রথম আলোকে বলেন, জোড়া খুনের মামলায় আসামি তামান্না, মোবারক হোসেন ও মো. বোরহান—এই তিনজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের জন্য হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ তিনজনকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করে এ আদেশ দেওয়া হয়।

জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটে গত ২৯ মার্চ রাতে। ওই দিন রুপালি রঙের একটি প্রাইভেট কার কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডে আসতে থাকে। গাড়িটি শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর পেছন থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেল সেটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। প্রাইভেট কারের ভেতর থেকেও মোটরসাইকেল আরোহীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। গুলিতে অনেকটা ঝাঁঝরা হয়ে যায় গাড়িটি। নিহত ব্যক্তিরা হলেন বখতিয়ার হোসেন (৩০) ও মো. আবদুল্লাহ (৩২)। তাঁরা সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

আরও পড়ুনচট্টগ্রামে জোড়া খুনের আগে চার ঘণ্টা বৈঠক করেন ‘সন্ত্রাসীরা’০৮ এপ্রিল ২০২৫

এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের করা মামলায় বলা হয়েছে, দুই সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও সরোয়ার হোসেনের বিরোধের জের ধরে আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে।

সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনকে হুকুমের আসামিসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে বাকলিয়া থানায় মামলা করেন নিহত বখতিয়ারের মা ফিরোজা বেগম। মামলার বাকি পাঁচ আসামি হলেন মো. হাছান, মোবারক হোসেন, মো. খোরশেদ, মো. রায়হান ও মো. বোরহান। তাঁরা সবাই সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মলে ঘোরাঘুরি করার সময় সাজ্জাদকে আটক করে তেজগাঁও থানা–পুলিশ। এর আগে তাঁকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনের বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে তামান্না শারমিনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে (স্বামী) নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’

আরও পড়ুন‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের স্ত্রী বললেন, ‘বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব’১৬ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ষ ট রপক ষ আপ ল ব ভ গ র একট

এছাড়াও পড়ুন:

চোখে আলো ফেলা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে কৃষককে হত্যা

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় চোখে টর্চলাইটের আলো পড়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ছুরিকাঘাতে এরশাদ আলী (৩৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত এরশাদ আলী উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খবর পেয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে মানিক মিয়ার মুদিদোকানে যান এরশাদ আলী। এ সময় এরশাদ আলীর চোখে টর্চলাইটের আলো ফেলে বিরক্ত করেন একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সাকিব মিয়া। এ নিয়ে দুজন বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ালে স্থানীয় লোকজন মিটমাট করে দেন। পরে এরশাদ আলীসহ সবাই যে যার মতো বাড়িতে চলে যান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে এরশাদ আলীকে ডেকে নিয়ে আবার কথা-কাটাকাটি ও মারামারিতে জড়ান সাকিব ও তাঁর সঙ্গে আসা কয়েকজন। একপর্যায়ে এরশাদ আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয় লোকজন আহত এরশাদ আলীকে উদ্ধার করে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে অভিযুক্ত সাকিব মিয়াসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।

ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন সরকার বলেন, পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। নিহত এরশাদ আলীর শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা
  • চোখে আলো ফেলা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে কৃষককে হত্যা