মোহাম্মদ আলী হায়দার নির্দেশিত বটতলা’র নন্দিত নাট্য প্রযোজনা ‘খনা’র ৯২তম  মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৮ এপ্রিল রোজ শুক্রবারে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র পরীক্ষণ থিয়েটার হলে।  

খনা এমন এক আখ্যানের মঞ্চকৃতি যা নারী ও শ্রেণির প্রশ্নকে সামনে আনে। গল্পটা পনেরশ বছর আগের হলেও আজো সমান প্রাসঙ্গিক । ঘরের বাইরে পা ফেলা নারীর প্রথম বাধা যে ঘরের ভেতর থেকেই আসে - তার বড় প্রমাণ যে নাট্যের পদে পদে সেই নাট্যের বর্ণনা আমাদের বলে যে - যে জানে সে মূঢ় নয় মূঢ় সেই যে যে জেনেও বোঝে না কত কম জানা যায়। প্রজন্মান্তরে চলা যে কৃষি জ্ঞান ও প্রজ্ঞা খনার নামে বহমান তার ঠিকুজি কুষ্ঠির খোঁজে নাটক খনা চলে চাষিদের বেগুন ক্ষেত, কলা বাগান মাড়িয়ে ছোট্ট উঠানে। আর খনা তার জীবনের নানা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে এক অন্য সত্যের মুখে দাঁড় করান দর্শকদের ।

নারী প্রশ্নে, সমতার প্রশ্নে, শ্রেণির প্রশ্নে ক্ষমতাকাঠামোর নানান সমীকরণের নিবিড় ও বহুমাত্রিক পাঠের প্রস্তাবনা নিয়ে খনা এমনই মঞ্চকৃতি যা  এই সময়ের কথাই বলে দূর অতীতের ইশারাসমেত। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শততম বর্ষপূর্তিতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সহস্র সাধারণের সামনে প্রথম মঞ্চায়ন থেকে শুরু করে গত ৯১ টি প্রদর্শনীতে খনা দেশে-বিদেশে অসংখ্য দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছে। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ এর শুরুতে ‘খনা’র মঞ্চায়ন এই জনপদের আবহমান সংস্কৃতি, কৃত্য উদযাপনেরও উপলক্ষ। এমটিই জানিয়েছে নাট্যদলটি। 

নাটকটিতে অভিনয় করেছেন কাজী রোকসানা রুমা, ইভান রিয়াজ, ইমরান খান মুন্না, তৌফিক হাসান, শারমীন ইতি, শেউতি শাহগুফতা, কামারুজ্জামান সাঈদ, হাফিজা আক্তার ঝুমা, চন্দন পাল, আবদুল কাদের, পংকজ মজুমদার, রিশাদুর রহমান রিশাদ, লায়েকা বশীর,  পলাশ নাথ, সানজিদা ইয়াসমীন, সুমিত তিওয়ারি, রেওয়াজ, সৃষ্টি, অন্তুসহ অনেকেই। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ট যদল বটতল

এছাড়াও পড়ুন:

দোয়ার ফজিলত ও আদব

দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।

প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)

আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)

মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)

‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)

দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)

দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)

নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)

নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)

দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।

হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

[email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ