বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম পুরোদমে এগিয়ে চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন আগামী জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশন।

বুধবার বিকেল ৫টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তদন্ত কমিশনের সদস্যরা তাকে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের দেওয়া বিবৃতিতে এ তথ্য জানা গেছে।

কমিশন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.

) আলম ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যেহেতু ১৬ বছর আগের ঘটনা তাই অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। অভিযুক্ত অনেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, আমরা কারাগারে থাকা কয়েকজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তদন্তের জন্য যোগাযোগ করা প্রয়োজন এমন ২৩ জন বিদেশে অবস্থান করছেন। তার মধ্যে ৮ জন সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন‍্য যোগাযোগ করেছেন।

কমিশন প্রধান  বলেন, আমরা হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের প্যাটার্নটা নিয়ে তদন্ত করছি। ডিজিকে হত্যার পর বাকিদের হত্যা করা হয়েছিল। এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পরিকল্পনা ছাড়া এমন হত্যাকাণ্ড হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, এটা যেন একটা পলাশীর পুনরাবৃত্তি। এটার শেকড় আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।

কমিশনের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, ‘এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকেও সরানো হয়নি। কাউকে দায়ী করা হয়নি। এটি গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক বাহিনী এবং রাজনৈতিক ব্যর্থতা।

তদন্ত কমিশনকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নৃশংসভাবে নিজেদের অফিসারদেরই তারা মেরেছিল। মসৃণভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

পুরো জাতি তদন্ত কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, আমরা সবাই উত্তর খুঁজছি। কমিশনকে এ ঘটনা তদন্তে সফল হতেই হবে। এ রহস্য উদঘাটন করতেই হবে। 

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনের সদস্য বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান, মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, ড. এম আকবর আলী, মো. শরীফুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ খান চন্দন, এ টি কে এম ইকবাল।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ড আর ব দ র হ য গ য গ কর তদন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে ৩৮ হাজার গ্যালন নিয়ে কার্গো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৪ 

যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যে ৩৮ হাজার গ্যালন নিয়ে একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ জন। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে উড্ডয়নের পরপরই এটি বিমানবন্দরের পাশের শিল্প এলাকায় গিয়ে পড়ে। সেখানে থাকা কেন্টাকি পেট্রোলিয়াম রিসাইক্লিং ও গ্রেড এ অটো পার্টস নামের দুটি প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরে যায়। আগুনের লেলিহান শিখায় আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবনও পুড়ে যায়।

বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় এতে প্রায় ৩৮ হাজার গ্যালন (প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার লিটার) জেট জ্বালানি ছিল। এই বিপুল পরিমাণ জ্বালানিই আগুনের ভয়াবহতা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকায় বিপুল পরিমাণ জেট জ্বালানি ছড়িয়ে পড়ে, ফলে আরও বিস্ফোরণের আশঙ্কায় পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দমকলকর্মীরা কয়েক ঘণ্টা পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি।
কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত অন্তত চারজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি, তবে সংখ্যাটি বাড়তে পারে। আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।” 

তিনি বলেন, “যারা ভিডিওগুলো দেখেছেন, তারা জানেন এটি কতটা ভয়াবহ ছিল। অনেক পরিবার এখন উদ্বেগে অপেক্ষা করছে। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সঠিক তথ্য দিতে কাজ করছি।” 

লুইসভিল মেট্রো পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই একাধিক সংস্থা ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। আপাতত স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইউপিএস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত এমডি-১১ মডেলের কার্গো বিমানে তিনজন ক্রু সদস্য ছিলেন। তারা জীবিত আছেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।

দুর্ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, বিমানটি উড্ডয়নের সময় হঠাৎ আগুন ধরে যায় এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিস্ফোরিত হয়ে পড়ে যায়।

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে বিস্তারিত তদন্ত চলছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা আবহাওয়া-সংক্রান্ত কারণ নিশ্চিত করা যায়নি।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ