ঝিনাইদহের মহেশপুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সন্ন্যাসী, সাধক, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিণত হয় পূজা প্রাঙ্গণ। আয়োজন করা হয় গ্রামীণ মেলারও।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরের পাশে এ পূজা ও মেলার আয়োজন করা হয়।

এদিন বিকেল ৪ টায় পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তার আগে সকাল থেকে সন্ন্যাসী, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে পূজা প্রাঙ্গণ।

আরো পড়ুন:

খানজাহান আলীর মাজারে মেলা শুরু, ভক্তদের ঢল

বৈশাখী মেলা সামনে রেখে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা

প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে ফতেপুর গ্রামে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চড়ক পূজার আয়োজন করে আসছেন। শত বছর ধরে বৈশাখের প্রথম সপ্তাহে দিনব্যাপী এ পূজার আয়োজন করা হয়। পূজা উপলক্ষে বসে গ্রামীণ মেলা। পূজায় ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, যশোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পুণ্যার্থীরা অংশ নেন। এ ছাড়াও অন্য ধর্মের অসংখ্য মানুষ পূজা দেখতে আসেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

চড়ক পূজা উপলক্ষে বসানো গ্রামীণ মেলায় বাতাসা, জিলাপি, ছাঁচের মিষ্টি, দানাদার, খই-মুড়কিসহ বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। দোকানে দোকানে সাজিয়ে রাখা হয় কাঠের খেলনা, মাটির পুতুল ও তৈজসপত্র। দোকানগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

সৌমেন হালদার নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‍“বাবা-ঠাকুরদের কাছে শুনেছি, শত বছরের বেশি সময় ধরে ফতেপুরে চড়ক পূজার আয়োজন করা হয়। পূজা উপলক্ষে সন্ন্যাসী, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় পূজা প্রাঙ্গণ। এবারো উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পূজা পালন হচ্ছে।”

আয়োজক কমিটির সদস্য বিপ্লব কর্মকার বলেন, “চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রতি বছর চড়ক পূজার আয়োজন হয়। শত বছরের ঐতিহ্য আমাদের। চড়ক পূজার মাধ্যমে শিবের আরাধনা করা হয়। এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রাচীনকাল থেকে পালন করে আসছেন।”

ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ল র খবর চড়ক প জ র উপলক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়

শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।

সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।

শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।

এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।

জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।

আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।

এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
  • শিগগিরই শ্রম আইন সংশোধন করা হবে: শ্রম উপদেষ্টা 
  • আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসে শিল্পকলা একাডেমির  দুই দিনের আয়োজন
  • মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানো যাবে না, নির্দেশ হাইকোর্টের
  • আইনগত সহায়তা দিবসে আলোচনা সভা-শোভাযাত্রা
  • আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন