ভাস্কর মানবেন্দ্রর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড: অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা, আওয়ামী লীগের ৪ জন গ্রেপ্তার
Published: 17th, April 2025 GMT
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন (৫৪), সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন ওরফে পিয়াস (২২) ও অর্থবিষয়ক সম্পাদক আল আমিন ওরফে তমাল (২২) এবং সদর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী মীর মারুফ (২১)।
জেলা প্রশাসন ও সদর থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এবার পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাবয়বসহ বিভিন্ন ভাস্কর্য তৈরির অভিযোগে ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষকে ফেসবুকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। গত মঙ্গলবার ভাস্কর মানবেন্দ্র সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দইর ঘোষের বাজার এলাকায় তাঁর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। গতকাল ভোর চারটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় গতকাল ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুনহুমকি পেয়ে সন্ধ্যায় থানায় জিডি, রাতে আগুনে পুড়ল ভাস্কর মানবেন্দ্রর বাড়ি২১ ঘণ্টা আগেমানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ছাড়া এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিভিন্নভাবে তাঁদের (পোস্ট দাতাদের) সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। তিনি শেখ হাসিনার মুখাবয়ব তৈরি করেননি, যেন তা পোস্টদাতারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে বোঝার চেষ্টা করেন। তিনি একটি বাঘের ভাস্কর্য (মোটিভ) তৈরি করেছিলেন, যা আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল। তাঁর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পুলিশ ও প্রশাসন তদন্ত করে দেখছে। কেন আগুন দেওয়া হলো, কীভাবে দেওয়া হলো—এর প্রতিকার হওয়া জরুরি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত পাঁচ বিএনপিকর্মী
নোয়াখালীর হাতিয়ায় হামলায় আহত হয়েছেন বিএনপির পাঁচ কর্মী। তাদের মধ্যে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তমরদ্দি বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ জন্য একই দলের অন্য নেতার অনুসারীদের দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা।
আহত ব্যক্তিরা হলেন– সোহেল উদ্দিন (৩০), রুবেল (২৫), মো. রনি (২৬), এরশাদ (৩৫) ও পায়েল (২৫)। তাদের বাড়ি তমরদ্দি ইউনিয়নের আঠারোবেকী গ্রামে। আহত সবাই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের কর্মী-সমর্থক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তমরদ্দি বাজারের একটি চা দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। এ সময় কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাঁচজন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিহাব উদ্দিনের ভাষ্য, সবার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। কিছু আঘাত অনেক গভীর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনেকের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ জন্য চারজনকে রাতেই হাতিয়ার বাইরে চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের ভাষ্য, মঙ্গলবার ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে আসার পথে হামলায় তাঁর কয়েকজন কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় দুটি মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। ওই আসামিরাই বৃহস্পতিবারের হামলায় জড়িত। তারা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোক।
তবে আলমগীর কবিরের দাবি, হামলায় তাঁর কোনো নেতাকর্মী জড়িত ছিলেন না। এমন অভিযোগ সত্য নয়।
হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, বিএনপি নেতা তানভীর হায়দার ও আলমগীর কবিরের লোকজনের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাদের বিরোধ অনেক পুরোনো। আগের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।