মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন (৫৪), সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন ওরফে পিয়াস (২২) ও অর্থবিষয়ক সম্পাদক আল আমিন ওরফে তমাল (২২) এবং সদর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী মীর মারুফ (২১)।

জেলা প্রশাসন ও সদর থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এবার পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাবয়বসহ বিভিন্ন ভাস্কর্য তৈরির অভিযোগে ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষকে ফেসবুকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। গত মঙ্গলবার ভাস্কর মানবেন্দ্র সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দইর ঘোষের বাজার এলাকায় তাঁর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। গতকাল ভোর চারটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় গতকাল ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।

আরও পড়ুনহুমকি পেয়ে সন্ধ্যায় থানায় জিডি, রাতে আগুনে পুড়ল ভাস্কর মানবেন্দ্রর বাড়ি২১ ঘণ্টা আগে

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ছাড়া এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ বিষয়ে ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিভিন্নভাবে তাঁদের (পোস্ট দাতাদের) সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। তিনি শেখ হাসিনার মুখাবয়ব তৈরি করেননি, যেন তা পোস্টদাতারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে বোঝার চেষ্টা করেন। তিনি একটি বাঘের ভাস্কর্য (মোটিভ) তৈরি করেছিলেন, যা আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল। তাঁর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পুলিশ ও প্রশাসন তদন্ত করে দেখছে। কেন আগুন দেওয়া হলো, কীভাবে দেওয়া হলো—এর প্রতিকার হওয়া জরুরি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল সদর থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পতন চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে গ্লাসগোগামী একটি ফ্লাইটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি লন্ডনের কাছে বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরের বাসিন্দা।

অভয় নায়েক ইজিজেট ফ্লাইটে হামলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার মতো আচরণ করেছেন। তিনি উড়োজাহাজে বোমা ফাটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি মাঝ আকাশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে চিৎকার করেছিলেন, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

ওই ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, অভয় নায়েক স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমেরিকার পতন হোক’, ‘ট্রাম্পের পতন হোক’। এরপরই তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ (যার অর্থ ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’) বলে স্লোগান দেন। পরে দুজন ব্যক্তি তাঁকে কাবু করে উড়োজাহাজের মেঝেতে ফেলে দেন।

ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি কোন ধর্মের অনুসারী, সে ব্যাপারে তাৎক্ষিণক কিছু জানা যায়নি।

ওই ব্যক্তির এমন আচরণের পর পাইলটরা বাধ্য হয়ে গ্লাসগোতে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানেই স্কটিশ পুলিশ এসে অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করে।

স্কটল্যান্ডের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গ্লাসগোতে পৌঁছানো ইজিজেটের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ঘটনাটি এককভাবে ওই ব্যক্তির, অন্য কেউ জড়িত নন। যেসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে, সেগুলো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’

উড়োজাহাজ অবতরণের পরই অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

ইজিজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেপরোয়া আচরণের কারণে একজন যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।’

পাইসলি শেরিফ আদালতে হাজিরার সময় অভয় নায়েক কোনো বক্তব্য দেননি। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ