‘মিশন কমপ্লিট’ লিখে ফেসবুকে মন্তব্য ছাত্রলীগ নেতার
Published: 17th, April 2025 GMT
আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ নির্মাণকারী শিল্পীর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন ছয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আগুন দেওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আগুনের ঘটনায় গতকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল) পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্দহভাজন ছয়জনকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেয়। এদেরকে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলের দিকে আদালতে তোলা হবে। আজকেও ওই বাড়ি পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊদ্ধর্তন কর্মকর্তারা।
মানিকগঞ্জে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনায় আটককৃতরা হলো- আল আমিন তমাল (২২) অর্থ বিষয়ক সম্পাদক, সদর উপজেলা ছাত্রলীগ, মাইনউদ্দিন আহাম্মদ পিয়াস (২২) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উপজেলা ছাত্রলীগ, বাবুল হোসেন (৫৪) ৩নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগ, মীর মারুফ (২১), ছাত্রলীগ নেতা আমিনুর রহমান (২৪), ছাত্রলীগ নেতা খান মোহাম্মদ রাফি ওরফে সিজন (১৮)।
আটকদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা খান মোহাম্মদ রাফি ওরফে সিজন (১৮) চিত্রশিল্পীর বাড়িতে আগুন দেওয়ার পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘মিশন কমপ্লিট’ লিখে একটি স্ট্যাটাস দেন।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাত তিনটার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোষের বাজার এলাকায় ভাস্কর্য শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের গ্রামের বাড়ির একটি ঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে আগুনের বিষয়ে মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও একটি ঘরের ভেতরে থাকা সব আসবাবপত্র, ভাস্কর্যসহ একটি মোটরসাইকেল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এ ঘটনায় ছয় সদস্যবিশিষ্টি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। এ কমিটি তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ জানান, আটককৃতদের মধ্যে খান মোহাম্মদ রাফি ওরফে সিজন গত মঙ্গলবার রাতে অগ্নিসংযোগের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল ‘মিশন কমপ্লিট’। আশা করা যাচ্ছে তার কাছ থেকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।
এ ঘটনায় চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি।
ঢাকা/চন্দন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ন কগঞ জ র ঘটন য় হ ম মদ
এছাড়াও পড়ুন:
ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় ৬৮ আফ্রিকান অভিবাসী নিহত: হুতি
হুতি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি আটককেন্দ্রে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৬৮ জন আফ্রিকান অভিবাসী নিহত হয়েছেন বলে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির টিভি চ্যানেল আল মাসিরাহ জানিয়েছে। সূত্র: বিবিসি
আল মাসিরাহর বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাদা প্রদেশে অবস্থিত ওই আটককেন্দ্রে হামলার ফলে আরও ৪৭ জন অভিবাসী আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগের অবস্থা সংকটজনক। আল মাসিরাহ টেলিভিশন হামলার দৃশ্যের গ্রাফিক ফুটেজ প্রচার করেছে, যেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে থাকা বহু মরদেহ দেখা গেছে।
তবে মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য আসেনি।
এই হামলার কিছুক্ষণ আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৫ মার্চ হুতিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা জোরদার করার নির্দেশের পর থেকে তারা ৮০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
সেন্টকম জানায়, এসব হামলায় শত শত হুতি যোদ্ধা এবং অসংখ্য হুতি নেতা নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
হুতির কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, মার্কিন হামলায় অনেক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যদিও তারা হুতি সদস্যদের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম উল্লেখ করেছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, হামলার সময় সাদা প্রদেশের ওই অভিবাসী আটক কেন্দ্রে ১১৫ জন আফ্রিকান অভিবাসী ছিল।
১১ বছরের সংঘাতের কারণে ইয়েমেনে মানবিক সংকট সত্ত্বেও, অভিবাসীরা এখনও আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল থেকে নৌকায় করে ইয়েমেনে আসছে। তাদের বেশিরভাগের লক্ষ্য সৌদি আরবে পৌঁছে কাজ খোঁজা। কিন্তু বাস্তবে তারা শোষণ, আটক, সহিংসতা এবং যুদ্ধক্ষেত্র পেরিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার মুখোমুখি হয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
আইওএম আরও জানিয়েছে, শুধু ২০২৪ সালেই প্রায় ৬০ হাজার ৯০০ অভিবাসী ইয়েমেনে পৌঁছেছে, যাদের অধিকাংশের বেঁচে থাকার কোনো উপায় নেই।
এর আগে মাসের শুরুতে হুতি-চালিত সরকার জানিয়েছিল, রেড সি উপকূলের রাস ইসা তেল টার্মিনালে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, সেন্টকম জানায়, ওই হামলা রাস ইসার জ্বালানি গ্রহণের সক্ষমতা ধ্বংস করেছে, যা হুতিদের পরিচালনা এবং সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থ সংগ্রহের ক্ষমতাকে হ্রাস করবে।
গত মাসে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ব্যাপক হামলার নির্দেশ দেন এবং হুতিদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার হুমকি দেন। তিনি ইরানকেও সতর্ক করেন, যাতে তারা হুতিদের অস্ত্র সরবরাহ না করে। যদিও ইরান বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।