গ্রামীণ সড়কের সুরক্ষাপ্রাচীর খুলে নিজের পুকুরে স্থাপন করলেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা
Published: 17th, April 2025 GMT
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রামীণ সড়কের সুরক্ষাপ্রাচীর (গাইডওয়াল) খুলে নিজ বাড়ির পুকুরে স্থাপন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই কর্মকর্তার বাড়ি জেলার উলিপুর পৌরসভা এলাকার নারিকেলবাড়ী ব্যাপারীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত সড়কের সুরক্ষাপ্রাচীর খুলে ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকরে ব্যবহার করার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
গতকাল বুধবার দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, উলিপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নারিকেলবাড়ী ব্যাপারীপাড়া থেকে ভাটিয়াপাড়া এলাকার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০২৪ সালে গ্রামীণ সড়কের পাশে পুকুরপাড়ে প্রায় ২৫০ ফুট গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয়। সম্প্রতি ওই এলাকার বাসিন্দা নাগেশ্বরী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজাহারুল আনোয়ার ক্ষমতার অপব্যবহার করে গাইডওয়ালের ১৫০ ফুট খুলে নেয়। এরপর সেই গাইডওয়াল তাঁর নিজস্ব পুকুরে স্থাপন করেন। গাইডওয়াল খুলে নেওয়ায় পুকুরপাড়–সংলগ্ন কাঁচা সড়কটির মাটি ধসে পড়েছে। এতে ওই এলাকার ব্যাপারীপাড়া, ভাটিয়াপাড়া ও থেতরাই ইউনিয়নগামী কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের সড়কটির মাটি ধসে পড়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ সৃষ্টিসহ ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিন নারিকেলবাড়ী ব্যাপারীপাড়া এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হাকিম (৫৯), শফিকুল ইসলাম (৪২), লুৎফর হোসেনসহ (৬১) কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মানুষের হাঁটাচলার সুবিধার জন্য জেলা পরিষদ থেকে কাঁচা রাস্তাটি রক্ষায় পুকুরে গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল। অথচ মাজাহারুল আনোয়ার তা খুলে নিয়ে নিজের বাড়ির পুকুরের গাইডওয়াল করেছেন। এতে করে চলাচলের রাস্তাটি ধসে পড়তে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি শুরু হলে রাস্তাটির সব মাটি পুকুরে চলে যাবে এবং মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাগেশ্বরী পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজাহারুল আনোয়ার বলেন, ‘আমার বাড়ি–সংলগ্ন পুকুরের গাইডওয়াল নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ নিয়েছিলাম। পরবর্তী সময়ে পাশের ওই কাঁচা সড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ায় মানবিক দিক বিবেচনা করে এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পাশে পুকুরপাড়ে গাইডওয়ালের কাজ করা হয়েছিল। কয়েক দিন আগে জানতে পারি, উলিপুর পৌরসভার থেকে ওই সড়কটি মেরামত করা হবে। তাই গাইডওয়াল খুলে নিয়ে পূর্বের বরাদ্দকৃত জায়গায় স্থাপন করেছি।’
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুতই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত প রসভ র এল ক র উল প র সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
সোনাপুর-নোবিপ্রবি সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণে অংশীজন সভা
নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গামী (নোবিপ্রবি) সড়কটি বাংলাবাজার পর্যন্ত চার লেনে উন্নীতকরণ বিষয়ে অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে নোবিপ্রবি উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রোসয়েল ফাউন্ডেশন কনসালটেন্ট এর আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইলের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহিনুজ্জামান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তামজিদ হোছাইন চৌধুরী ও নোবিপ্রবি প্রধান প্রকৌশলী মো: জামাল হোসেন।
আরো পড়ুন:
নোবিপ্রবির পুকুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গোসলের ছবি ভাইরাল, ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন
গ্রীষ্মের ছুটি বাতিল করেছে নোবিপ্রবি
এছাড়াও নোয়াখালী জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, নোয়াখালী পৌরসভা, গণপূর্ত অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, উপকূলীয় বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, নোয়াখালী সদর/সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, নোয়াখালী সদর/সুবর্ণচর উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে, সোনাপুর, নোয়াখালী প্রেসক্লাব, সোনাপুর পৌরবাজার কমিটি, সোনাপুর পৌর সুপার মার্কেট পরিচালনা কমিটি এবং প্রোসয়েল ফাউন্ডেশন কনসালট্যান্ট এর কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দোতলা বাসগুলো শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে। ফলে এ সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা যেন এ সড়কের কাজ দ্রুত শুরু করতে পারি, তার জন্য আপনাদের সবার সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “এই সড়ক চার লেনে উন্নীত করার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমাদের দিক থেকে যতটুকু সহযোগিতা লাগে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা করার চেষ্টা করবো। পাশাপাশি আপনাদের সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।”
সভায় সোনাপুর থেকে নোবিপ্রবি (বাংলাবাজার) সড়কাংশ চার লেনে উন্নীতকরণসহ বাংলাবাজার-সুবর্ণচর উপজেলা হেডকোয়ার্টার সড়ক (জেড-১৪৫১) যথাযথ মানে উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপি’র এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট প্রণয়নে মতামত প্রদান করেন বক্তারা।
এছাড়া বক্তারা ওই সড়ক চার লেনে উন্নীত করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন এবং নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়কটি নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বাধাগ্রস্ত হবেনা বলে জানানো হয়।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী