কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রামীণ সড়কের সুরক্ষাপ্রাচীর (গাইডওয়াল) খুলে নিজ বাড়ির পুকুরে স্থাপন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই কর্মকর্তার বাড়ি জেলার উলিপুর পৌরসভা এলাকার নারিকেলবাড়ী ব্যাপারীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত সড়কের সুরক্ষাপ্রাচীর খুলে ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকরে ব্যবহার করার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

গতকাল বুধবার দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, উলিপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নারিকেলবাড়ী ব্যাপারীপাড়া থেকে ভাটিয়াপাড়া এলাকার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০২৪ সালে গ্রামীণ সড়কের পাশে পুকুরপাড়ে প্রায় ২৫০ ফুট গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয়। সম্প্রতি ওই এলাকার বাসিন্দা নাগেশ্বরী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজাহারুল আনোয়ার ক্ষমতার অপব্যবহার করে গাইডওয়ালের ১৫০ ফুট খুলে নেয়। এরপর সেই গাইডওয়াল তাঁর নিজস্ব পুকুরে স্থাপন করেন। গাইডওয়াল খুলে নেওয়ায় পুকুরপাড়–সংলগ্ন কাঁচা সড়কটির মাটি ধসে পড়েছে। এতে ওই এলাকার ব্যাপারীপাড়া, ভাটিয়াপাড়া ও থেতরাই ইউনিয়নগামী কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের সড়কটির মাটি ধসে পড়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ সৃষ্টিসহ ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিন নারিকেলবাড়ী ব্যাপারীপাড়া এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হাকিম (৫৯), শফিকুল ইসলাম (৪২), লুৎফর হোসেনসহ (৬১) কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মানুষের হাঁটাচলার সুবিধার জন্য জেলা পরিষদ থেকে কাঁচা রাস্তাটি রক্ষায় পুকুরে গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল। অথচ মাজাহারুল আনোয়ার তা খুলে নিয়ে নিজের বাড়ির পুকুরের গাইডওয়াল করেছেন। এতে করে চলাচলের রাস্তাটি ধসে পড়তে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি শুরু হলে রাস্তাটির সব মাটি পুকুরে চলে যাবে এবং মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাগেশ্বরী পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজাহারুল আনোয়ার বলেন, ‘আমার বাড়ি–সংলগ্ন পুকুরের গাইডওয়াল নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ নিয়েছিলাম। পরবর্তী সময়ে পাশের ওই কাঁচা সড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ায় মানবিক দিক বিবেচনা করে এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পাশে পুকুরপাড়ে গাইডওয়ালের কাজ করা হয়েছিল। কয়েক দিন আগে জানতে পারি, উলিপুর পৌরসভার থেকে ওই সড়কটি মেরামত করা হবে। তাই গাইডওয়াল খুলে নিয়ে পূর্বের বরাদ্দকৃত জায়গায় স্থাপন করেছি।’

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুতই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত প রসভ র এল ক র উল প র সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় নোয়াখালীর হাতিয়া ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। হাতিয়া ও রামগতি উপজেলার মাঝামাঝি এই সেতুর অবস্থান। আর ধসে পড়া সংযোগ সড়কটি পড়েছে রামগতির তেগাছিয়া বাজারে। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে প্রবল জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ে। এতে স্থানীয় স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ দুই উপজেলার বাসিন্দারা যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেতুর পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়কের একাংশের মাটি সরে ধসে পড়েছে। বিষয়টি রামগতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) জানানো হয়েছে। তবে বিকেল নাগাদ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ধসের কারণে সড়কটি দিয়ে যানবাহন, এমনকি মানুষজনের চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত সেতু দিয়ে উভয় উপজেলার বাসিন্দারা তেগাছিয়া বাজারে যাতায়াত করেন। তেগাছিয়া বাজারের বড় অংশটি হাতিয়ার মধ্যে। আরেক অংশ রামগতি সীমানার ভেতরে। এ ছাড়া স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক ও সেতু।

স্থানীয় টাংকির বাজারের ঘাটে আসা ইলিশ লক্ষ্মীপুর হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় এই সড়ক দিয়ে। তাই সেতুর সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় দুটি উপজেলার মাছ ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দ্রুত সংযোগ সড়ক মেরামত না করলে মূল সেতুই ঝুঁকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা ওই এলাকার বাসিন্দাদের।

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রামগতি উপজেলা প্রকৌশলী স্নেহাল রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাতিয়া-রামগতি উপজেলা সড়কের তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির সংযোগ সড়কের কিছু অংশ জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে বলে শুনেছেন। কিন্তু পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। তিনি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলে দ্রুত যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেহাল সড়ক
  • মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন