দীর্ঘ ৭ বছর ডুবে ডুবে জল খেয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা ও অভিনেতা জহির ইকবাল। ২০২৩ সালের ২৩ জুন দুই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন এই প্রেমিক যুগল।
সোনাক্ষী-জহির দম্পতির বিয়ের বয়স ১ বছর ৯ মাস। গত কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ভাসছে, ভেঙে যাচ্ছে এ দম্পতির সংসার। এ নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে অন্তর্জালে। তবে পুরোপুরি নীরব ছিলেন তারা। অবশেষে কড়া জবাব দিলেন সোনাক্ষী।
জহিরের সঙ্গে তোলা একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন সোনাক্ষী। তাতে একজন মন্তব্য করেন, “খুব শিগগির তো আপনাদের ডিভোর্স হতে চলেছে।” নেটজেনের এমন মন্তব্য দেখে মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি সোনাক্ষী। আক্রমণ করে ওই ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে সোনাক্ষী লেখেন, “প্রথমে তোর বাবা-মা বিচ্ছেদ করুক, তারপর না হয় আমরা করব। প্রতিজ্ঞা করছি।”
সোনাক্ষীর এই পোস্ট অনেকেরই নজরে পড়েছে। নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নেটিজেনরা। কেউ কেউ সোনাক্ষীর মন্তব্যের সঙ্গে সহমত জানিয়ে লেখেন, “যোগ্য জবাব।”
৩৭ বছরের সোনাক্ষী হিন্দুধর্মের অনুসারী আর ৩৫ বছর বয়সি জহির ইকবাল মুসলিম। দু’জন দুই ধর্মের অনুসারী হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিয়ের আগেই চর্চা শুরু হয় নেট দুনিয়ায়। তারপর খবর চাউর হয়, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন সোনাক্ষী সিনহা। কিন্তু এসব খবর সত্যি নয়। বরং তারা ভারতের স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৪ অনুযায়ী বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন।
২০২০ সালে সালমান খান একটি পার্টির আয়োজন করেন। সেই পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবাল। প্রথমে গুঞ্জন শোনা যায়, ওই বছরই সম্পর্কে জড়ান তারা। কিন্তু এ জুটি ২০১৭ সালে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। ২০২২ সালে অ্যামি ভির্ক ও আশিস কৌরের গাওয়া ‘ব্লকবাস্টার’ গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেন জহির ইকবাল ও সোনাক্ষী।
২০২২ সালে ‘ডাবল এক্সেল’ সিনেমায় অভিনয় করেন সোনাক্ষী-জহির। একই বছরে এ জুটির প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে জহিরের সঙ্গে কাটানো ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন সোনাক্ষী। এতে তাদের প্রেমের গুঞ্জনের পালে নতুন করে হাওয়া লাগে। যদিও প্রেমের কথা কখনো স্বীকার করেননি সোনাক্ষী কিংবা জহির। সর্বশেষ ২০২৩ সালে বিয়ের মাধ্যমে গুঞ্জনকে বাস্তবে রূপ দেন এই যুগল। দাম্পত্য জীবনে দারুণ সময় পার করছেন তারা।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)