নাজমুল বললেন, নতুন কিছু দেখতে পাবেন
Published: 19th, April 2025 GMT
রোদচশমাটা ভুল করে ক্যাপের সামনেই রেখে দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন। স্পন্সরের লোগোটা ঢেকে যাচ্ছে তাতে, মনে করাতেই মুচকি হাসলেন, চশমাটা সরিয়ে নিলেন পেছনে। এই মঞ্চ, এমন সংবাদ সম্মেলন তো আর তাঁর জন্য নতুন কিছু নয়। গত বছর দেড়েক ধরেই তাঁকে এগুলো সামলাতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হিসেবে। ওই পথে আরও এগিয়ে যাওয়ার যাত্রাটা তাঁর জন্য এখন অনিশ্চিত।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেই শেষ হয়ে গিয়েছিল নাজমুলের অধিনায়কত্বের মেয়াদ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজেও নেতৃত্বের ভারটা অবশ্য তাঁর কাছেই, কিন্তু কত দিন আর অধিনায়ক থাকবেন? আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে নাজমুলের উত্তর, ‘আপাতত এই সিরিজটা পর্যন্ত আছি।’
দুই টেস্টের সিরিজটা শুরু হচ্ছে আগামীকাল সিলেট টেস্ট দিয়ে, যা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রায় চার বছর পর প্রথম। এমন একটি ম্যাচের আগে অধিনায়ক নাজমুলকে শুরুতেই বলতে হয়েছে দুই যুগেও দেশে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে না নিয়ে, ‘এত বছর টেস্ট খেলার পরে যখন টেস্ট সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের কথা বলতে হয়, এটা অবশ্যই দুঃখজনক। তবে আমার মনে হয়, যদি গত বছর থেকে শুরু করি, আমরা চারটা ম্যাচ জিতলাম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ১২টি টেস্টের মধ্যে। চারটি ম্যাচই বড় দলের বিপক্ষে।’
গত বছর পাকিস্তানের মাটিতে দুটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে একটি এবং ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠের সিলেট টেস্টকে মনে করিয়ে দিলেন নাজমুল।
একই জবাবের শেষ অংশে নাজমুল দেন নতুন শুরুর ঘোষণা, ‘গত বছর থেকেই কীভাবে টেস্ট দলটায় একটা সংস্কৃতি তৈরি করতে পারি বা আমরা কীভাবে খেলাটা খেলতে চাই এই বিষয়গুলো নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছিল। নতুন কোচ আসার পরে তার একটা পরিকল্পনা আছে, সে আসলে কীভাবে দলটাকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে চায়, যেগুলো এরই মধ্যে ক্রিকেটারদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। পাশাপাশি আমরা যারা খেলছি, আমাদের একটা ইনপুট তো ছিলই। আমি আশা করব এ বছর যে পাঁচ-ছয়টা টেস্ট ম্যাচ আছে, নতুন কিছু আপনারা দেখতে পাবেন ইনশা আল্লাহ।’
গত বছর ১০ টেস্ট খেলে তিনটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। সব কটিই দেশের বাইরে। ঘরের মাঠে জয় ছিল না। নাজমুলের সংবাদ সম্মেলনে বারবার ঘুরেফিরে আসা ‘নতুন’ শুরুর ব্যাখ্যাটা আসলে কী? জানতে চাওয়া হয়েছিল তাঁর কাছেই।
নাজমুল উত্তর দিয়েছেন এভাবে—‘অধিনায়ক হিসেবে আমি যেটা চিন্তা করি যে আমরা প্রত্যেকটা ম্যাচ যেন জেতার জন্য খেলি। এখানে কোনো স্বার্থবাদী ক্রিকেট খেলার ইচ্ছা আমাদের কারও নেই। আমি যেটা একটু আগেও বললাম যে নতুন কিছু আমরা চেষ্টা করব এবং এটাও শুরু হবে আগামীকাল থেকে। ওটার জন্য যে ধরনের মনমানসিকতা, প্রস্তুতি থাকা দরকার, ক্রিকেটাররা তা নিচ্ছে। পাশাপাশি আমি আশা করব যে যাঁরা ম্যানেজমেন্টে আছেন বা যাঁরা ক্রিকেট বোর্ডে আছেন, তাঁরাও আমাদের এই বিষয়গুলো নিয়ে সহযোগিতা করবেন।’
বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন দরকার জানিয়ে অধিনায়ক যোগ করেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যেহেতু আমাদের গত ২০-২২ বছরে টেস্ট ক্রিকেট একই রকম ছিল, খুব বেশি উন্নতি হয়নি। তাই এই জায়গাটাতে নিশ্চয়ই আমাদের কিছু পরিবর্তনের দরকার আছে। ওই পরিবর্তনটাই করার চিন্তা করছি। আমি আশা করব যে এই পরিবর্তন আমাদের টেস্ট ক্রিকেটে কাজে লাগবে।’
শরীরী ভাষাতেও নতুন কিছু ফুটিয়ে তোলার প্রত্যয় ছিল নাজমুলের কণ্ঠে, ‘পরিস্থিতি যেমনই হোক, জেতার মনমানসিকতা থাকা। ২০ উইকেট নেওয়ার জন্য বোর্ডে যেমন রান থাকা দরকার, ওই রান যেন আমরা ব্যাটিং ইউনিট দিতে পারি—এই বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ–আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি যেমনই থাক.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র ক নত ন ক ছ গত বছর র জন য দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বিপজ্জনক নজির
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে ২০ কোটি ডলারের চুক্তির মধ্য দিয়ে কয়েক মাসের টানাপোড়েনের অবসান ঘটেছে। তবে শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এটি উচ্চশিক্ষার ওপর সরকারের ‘আক্রমণের’ প্রথম দফা মাত্র।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে হওয়া এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনেক বিষয়ে সমঝোতা করতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর সরকারের নজরদারিও বেড়েছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্য অনেক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেভাবে অনেক ছাড় দিয়েছে ও সরকারের নজরদারি বেড়েছে, তা ভবিষ্যতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপরও একইভাবে চাপ প্রয়োগের নীলনকশা হয়ে উঠতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এই বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এ বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলা করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।
এ অভিযোগের পর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় লাখ লাখ ডলারের ফেডারেল তহবিল হারায়। নতুন গবেষণা অনুদানের জন্য আবেদন করার সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়। গবেষণাগারের জরুরি তহবিল স্থগিত হয়ে যায় এবং অনেক গবেষক চাকরি হারান।
তবে গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারকে ২০ কোটি ডলার দেওয়ার (জরিমানা হিসেবে) ও ইহুদিবিদ্বেষ–সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সরকারি তদন্ত মীমাংসার জন্য অতিরিক্ত ২ কোটি ১০ লাখ ডলার পরিশোধে রাজি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর এত বড় মাত্রায় সরকারি হস্তক্ষেপ আগে হয়নি। সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি।ব্রেনডন ক্যান্টওয়েল, মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকআমেরিকান কাউন্সিল অন এডুকেশনের সভাপতি টেড মিচেল বলেন, আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর আগেই তহবিল কেটে নেওয়ায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একপ্রকার ‘টালমাটাল অবস্থায়’ পড়ে গেছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড পোজেন এতে একমত পোষণ করে বলেন, শুরু থেকেই চুক্তিটি যেভাবে সাজানো হয়েছে, তা বেআইনি ও জোরজবরদস্তিমূলক। তিনি চুক্তিটিকে ‘চাঁদাবাজির বৈধ রূপ’ উল্লেখ করে এর কঠোর সমালোচনা করেন।
এ চুক্তির আওতায় শুধু ইহুদিবিদ্বেষের সমাধানই নয়, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি, ভর্তির সময় জাতি-বর্ণের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা ও ক্যাম্পাসে ছেলে–মেয়েদের আলাদা জায়গাসহ কিছু বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সমঝোতা করতে হয়েছে।
চুক্তির আওতায় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একজন স্বাধীন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিতে রাজি হয়েছে। তাঁর কাজ হলো চুক্তি কার্যকর করা, জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য সরকারকে দেওয়া ও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে