নির্বাচন ছাড়া দেশ আর কতদিন চলবে: রিজভী
Published: 19th, April 2025 GMT
নির্বাচন ছাড়া দেশ আর কতদিন চলবে এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, “মানুষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চেয়েছে। তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছে। দেরিতে নির্বাচন হলে দেশের মানুষ হতাশায় ভুগবে।”
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে নাটোর জেলা পরিষদ অডিটেরিয়ামে জিয়া পরিষদ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
আসুন সবাই ড.
ঝটিকা মিছিলের মধ্যে ফ্যাসিবাদ লুকায়িত : এ্যানি
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আমাদের নিজস্ব আত্মপরিচয়ে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব তা শিখিয়ে গেছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলকে নেতৃত্ব দিয়ে সুসংগঠিত করেছেন। বিএনপি জনসম্পৃক্ত দল, জনগণের পক্ষের দল। এ দল নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র চলে না। যারাই ষড়যন্ত্র করে তারা আজ কোথায়।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, “সরকারের কিছু উপদেষ্টা সংস্কার নিয়ে কথা বলছেন। সংসদে বসে বসে সংস্কার করে তা সংশোধন করা হয়েছে। তাহলে কেন এত সংস্কারের কথা বলছে। আপনারা বলছেন, বিএনপি তড়িঘড়ি করে নির্বাচন চাচ্ছে। সংস্কার একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার। যে দল নির্বাচিত হবে, সে দল বাকি সংস্কার করবে।
তিনি প্রশ্ন করেন, “নির্বাচন ছাড়া দেশ আর কতদিন চলবে। আট মাস তো হয়ে গেছে, আপনারা বলেছেন ডিসেম্বরে নির্বাচন। তাহলে সংস্কার করতে আর কত সময় লাগবে আপনাদের।”
বিএনপির সিনয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “দেশের মানুষ হাসিনার পতন দেখতে চেয়েছে। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে তা দেখতে চেয়েছে। দেরি হলে দেশের মানুষ হতাশায় ভুগবে।”
তিনি বলেন, “ভারত শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে প্রশ্রয় দিয়েছিল। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশ হাতে রাখতে। তাদের হুকুমে বাংলাদেশ চলবে এমন নীতিতে তারা ছিল। এখন তাদের মায়া কান্না, কারণ হাসিনা বলেছিল, ‘আমি ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে। সে কথা দেশের মানুষ আজ বুঝেছে। যার জন্য আজ পালিয়ে যাওয়া হাসিনাকে সব ধরনের সহযোগিতা করছে ভারত।”
নাটোর জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও সভাপতি আহমুদুল হক চৌধুরি স্বপনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্যে দেন- অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। অন্যদের মধ্যে বক্তব্যে দেন- জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী মহাসচিব প্রফেসর ড. মো. এমতাজ হোসেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, জিয়া পরিষদের রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম, রাজশাহী জিয়া পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সালাম বিল্পব, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ, সদস্য সচিব মো. আসাদুজ্জামান আসাদ।
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।