পেশাদার মানসিকতায় ছোট-বড় দলের পার্থক্য নেই, দাবি শান্তর
Published: 19th, April 2025 GMT
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কারণ একে তো টেস্ট সিরিজ তার ওপর প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। এই সিরিজে তাই ভক্তদের আগ্রহ নেই। কিন্তু জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের অনীহা দেখানোর সুযোগ নেই।
সিলেটে রোববার সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে শান্ত জানান, ভক্তরা ছোট ও বড় দল টেনে তুলনা করতে পারেন। কিন্তু খেলোয়াড়দের পার্থক্য করার সুযোগ নেই। কারণ তারা পেশাদার। তারা ওই পার্থক্য করেনও না।
শান্ত বলেন, ‘যারা খেলা দেখেন তারা এই তুলনাগুলো করেন, যে জিম্বাবুয়ে ছোট দল বা ওটা বড় দল। কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমরা বল বাই বল চিন্তা কির। সে যে দলই হোক। আমরা জিম্বাবুয়ের সঙ্গে যে খেলাটা খেলবে সেই মানসিকতা, শরীরি ভাষা, চিন্তা-ভাবনা যেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও থাকে।’
শান্ত জানান, তারা ছোট-বড় এই পার্থক্য করেন না, ‘এই জায়গায় যেন আপনাদের (সংবাদ মাধ্যম) মধ্যেও ভিন্নতা তৈরি না হয়। আবার আমাদের দিক থেকেও যেন কোন পার্থক্য না থাকে। আমাদের দিক থেকে ছোট দল না বড় দলের সঙ্গে খেলছি এই পার্থক্য নেই।’
বাংলাদেশ ঘরের মাঠে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে ভালো ক্রিকেট খেলেনি। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিল। তার আগে ভারতের বিপক্ষেও টেস্টে ভরাডুবি হয়েছে। তবে নতুন বছরের নতুন টেস্ট সিরিজে মনোযোগ রাখতে চান অধিনায়ক শান্ত। তিনি দাবি করেন, অনুশীলনে তাদের ব্যাটিং ভালো হয়েছে।
শান্ত বলেন, ‘ব্যাটিং ভালো হচ্ছে। ভুলগুলো নিয়ে আমরা কাজ করেছি। আমি বলব যে, নতুন করে শুরু হচ্ছে। বছরের প্রথম টেস্ট আমাদের, যেন শুরুটা ভালো করতে পারি। আমি আশা করবো ব্যাটাররা ভালো করবে।’ এছাড়া নাহিদ রানাকে নিয়েও কথা বলেন বাঁ-হাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটার। জানান যে, নাহিদকে কখনো ১৪০ কিলোমিটারের নিচে বোলিং করতে দেখেনি। তার আশা, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও সেভাবেই বোলিং করবেন ডানহাতি এই পেস সেনসেশন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বড় দল
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]