চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ২ হাজার বছরের পুরনো: ঢাবি উপাচার্য
Published: 20th, April 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, “চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ৫০ বছরের নয়। ঐতিহাসিকভাবে এই সম্পর্ক ২ হাজার বছরের পুরনো। আমরা দুই দেশের মধ্যে গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাই। শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচি আরো বাড়াতে চাই।”
রবিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে চীনের ইউনান প্রদেশ ও বাংলাদেশস্থ চীন দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত ‘চীন-বাংলাদেশ পিপল-টু-পিপল এক্সচেঞ্জ ইয়ার: ইউনান অ্যাডুকেশন অ্যান্ড হেলথ প্রমোশন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সহ-আয়োজক ছিল ঢাবি।
উপাচার্য বলেন, “আমরা মনে করি ইউনান প্রদেশ আমাদের পরিবারের অংশ। আমি আশা করি, এই আয়োজনটি একটি নতুন চ্যাপ্টারের উন্মোচন করেছে। এটি আমাদের মধ্যকার সম্পর্ককে আরো অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”
আরো পড়ুন:
ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি
দেশে প্লাস্টিক কমানোয় বিশ্ব সম্প্রদায়েরও আপত্তি আছে: সৈয়দা রিজওয়ানা
চীনের রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৫৪ শতাংশ ছাত্রী রয়েছে, যাদের আবাসনের সমস্যা প্রকট। তারা এ সমস্যা দূর করার জন্য ক্রমাগত দাবি জানিয়ে আসছিল। চীন তাদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে। চীন সরকারের অর্থায়নে ছাত্রীদের জন্য একটি আবাসিক হল নির্মাণের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা বিনিময়ের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুই দেশের মধ্যে একটি সেতু তৈরি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে চীনের একটি শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে শুধু ভাষাগত দক্ষতাই অর্জন করছে না, বরং একই সঙ্গে চীনের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গেও পরিচিত হচ্ছে।”
উপাচার্য আরও বলেন, “দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক শিক্ষা বিনিময়ও সমভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। এ বছর চীনের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮ জন শিক্ষার্থী বাংলা পড়তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে। চীনের শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা স্যার পিজে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলে পৃথকভাবে থাকার ব্যবস্থা করেছি। ভাষা বিনিময় এবং পারস্পরিক বোঝাপোড়ার ক্ষেত্রে এটি আমাদের অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ। এ ধরনের উদ্যোগ শিক্ষা, গবেষণা এবং এর বাইরেও গভীর সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপন করে।”
চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, “ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চীনের শীর্ষ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একাধিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। যা যৌথ গবেষণা, ফ্যাকাল্টি এবং শিক্ষার্থী বিনিময়ের পথ প্রশস্ত করেছে। আজ আরেকটি মাইলফলক তৈরি হয়েছে। চিকিৎসা গবেষণা ও প্রশিক্ষণকে এগিয়ে নিতে আমরা ইউনান ক্যান্সার হাসপাতালের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, ঢাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.
অনুষ্ঠানে চিকিৎসা গবেষণা ও প্রশিক্ষণকে এগিয়ে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সঙ্গে চীনের ইউনান পিকিং ক্যান্সার হাসপাতাল এবং কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আগে চীন ও বাংলাদেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মঞ্চস্থ হয়।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, “বর্তমান সরকারের সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক উঁচু মাত্রায় পৌঁছেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-গবেষণা, সংস্কৃতি, যোগাযোগসহ সব ক্ষেত্রে দুই দেশের এ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো জোরদার হবে।”
অনুষ্ঠানে ‘চায়না-সাউথ এশিয়া ইউথ এক্সচেঞ্জ উইক’ কর্মসূচিরও উদ্বোধন করা হয়। সিনেট ভবনের মিলনায়তনের বাইরে ইউনান প্রদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের ১৭টি বুথ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রদর্শনী করে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য অন ষ ঠ ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব