সমাজে বিদ্যমান ভূমিবৈষম্য দূর করতে কৃষি ও ভূমি সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে দেশের ১৩ নাগরিক সংগঠন। তারা বলেছে, তাদের দায়িত্ব দেওয়া হলে এক মাসের মধ্যে কৃষি ও ভূমি সংস্কারবিষয়ক প্রতিবেদন সরকারের কাছে উত্থাপন করতে পারবে।

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের সার্বিক ভূমি ও কৃষি সংস্কারের নাগরিক প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষি খাসজমিতে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা, পাহাড়ে-সমতলে ভূমিবৈষম্য দূর করা, ভূমিতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অভিগম্যতা নিশ্চিত করাসহ ৩৬টি দাবি উত্থাপন করা হয়।

নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে ভূমিবিরোধের সঙ্গে জড়িত। তাই সরকারের কাছে শুরু থেকে ভূমি সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু সরকার সেটা গ্রহণ করেনি।

জাকির হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা সরকারকে ফ্রি সার্ভিস দিতে চাই। আমাদের কোনো সম্মানী বা পারিশ্রমিক লাগবে না। কমিশনের দায়িত্ব আমাদের দেওয়া হলে আমরা মাত্র এক মাসের মধ্যে সরকারের কাছে আমাদের কমিশনের প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী তাসলিমা আহমদ বলেন, ‘৩৬টি দাবিকে আমরা তিনটি পয়েন্টে নিয়ে আসতে পারি। আমরা চাচ্ছি ভূমিসংক্রান্ত জটিলতা, বৈষম্য এবং সহিংসতা নিরসনে প্রয়োজনে আইন ও নীতিমালা যেটা যেখানে প্রয়োজন, সেটা নিশ্চিত করা।’

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান বলেন, সর্বশেষ বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী দেশে ৩ কোটি ৩০ লাখ খানা আছে। এর মধ্যে ২৩ লাখ খানায় কোনো বাড়ি-ভিটে নেই। অথচ দেশে কৃষি খাসজমি আছে ৩৩ লাখ একর। প্রত্যেককে এক একর করে জমি দিলে কেউ ভূমিহীন থাকে না।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজের পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, ‘কৃষিজমির সুরক্ষা, ভূমিবৈষম্য দূর করতে এ কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি। কৃষিতে দেশের ৪৪ শতাংশ মানুষ নিয়োজিত। এ খাতকে পাশ কাটিয়ে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

‘নিজেরা করি’র সমন্বয়ক খুশী কবিরের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।

টিআইবি, ব্লাস্ট, এইচডিআরসি, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বারসিক, নাগরিক উদ্যোগ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম ও কাপেং ফাউন্ডেশন ও নিজেরা করি, বেলা, এএলআরডি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এবং মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন: বিবিসি বাংলাকে নাহিদ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন এমন খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন নাহিদ ইসলাম।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নাহিদসহ দুই উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের

নাহিদ বলেন, “দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম।”

প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন ইসলাম।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি... যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণ অভ্যুত্থানের পর। দেশের পরিবর্তন, সংস্কার.....। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে।”

“আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো,” বলেন নাহিদ ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন গঠিত দলটির নেতা নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, “আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সবগুলা দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন। সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।”

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন বলে জানান নাহিদ ইসলাম।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “হ্যাঁ যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ।”

এই আলোচনার পরে প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে জানিয়েছেন ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’ তিনি। উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবতেছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।”

পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়..সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?”

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ