বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১৪৭টির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। এ ছাড়া ১৫টি সুপারিশের সঙ্গে দ্বিমত এবং ৪টি সুপারিশের সঙ্গে আংশিক একমত পোষণ করেছে দলটি।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে খেলাফত মজলিসের এই অবস্থানের কথা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।

আজ সকাল ১০টা থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে খেলাফত মজলিসের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে ছিলেন খেলাফত মজলিসের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা ইউসূফ আশরাফ, মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ ও যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী।

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদের সুপারিশের বিরোধিতার কথা জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন জালালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, তাঁরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদের কোনো স্থান থাকতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে।

জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন তাঁদের জানিয়েছে, বহুত্ববাদ বলতে বহু সংস্কৃতি ও জনগোষ্ঠীর সংযুক্তি বোঝানো হয়েছে। তখন তাঁরা বলেন, বহুত্ববাদ শব্দটি একত্ববাদের বিপরীত। তাই বহু সংস্কৃতির প্রসঙ্গ রাখতে হলে অন্য কোনো শব্দের মাধ্যমে তার স্থান দিতে হবে।

আলোচনায় দেশকে চারটি প্রদেশে বিভক্তির সুপারিশের সঙ্গে দ্বিমতের কথা জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক আয়তন খুবই ছোট। যোগাযোগব্যবস্থাও বেশি দূরত্বের নয়। কাজেই এমন সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে দেশের অর্থনৈতিক ব্যয় বাড়বে।

স্থানীয় সরকার কাঠামোয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, সুপারিশে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা এই সুপারিশের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তাতে জনগণের মতামত উপেক্ষিত হবে। বিপরীতে এমন পদ্ধতিতে অনৈতিক অর্থের কারসাজি ও প্রভাববলয়ে চেয়ারম্যানরা নির্বাচিত হবেন। কাজেই সরাসরি জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে।

বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ল ল দ দ ন আহমদ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।

বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।

গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।

এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত, আরপিওতে পরিবর্তন আসছে
  • তড়িঘড়ি না করে সংবিধান সংস্কারে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান
  • কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
  • রাজধানীর দক্ষিণখানে নিজ বাসা থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
  • নির্বাচনের আগে একটি দল জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চায়: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • দেশের মানুষ ১৭ বছর ধরে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে: সাইফুল হক
  • জুলাই সনদে সই না করা অংশের দায় নেব না: মির্জা ফখরুল
  • ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ‘অশ্বডিম্ব’ বললেন সিপিবি সভাপতি
  • টেকনাফে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, নিহত ১
  • যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান: তুরস্ক