চার আইনজীবীকে কারাগারে নেওয়ার সময় ডিম নিক্ষেপ
Published: 21st, April 2025 GMT
কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামীপন্থি চার আইনজীবীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান এ আদেশ দেন। তাদের কারাগারে নেওয়ার পথে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা আইনজীবীদের লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মেরে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন।
এছাড়াও পলাতক দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আজ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা আদালতের পিপি কাইমুল হক রিংকু।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশ লাইনস এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি তারা।
চার আইনজীবী হলেন– কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পিপি মুস্তাফিজুর রহমান লিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও জাকির হোসেন। আদালতে হাজির না হওয়ায় জিয়াউল হাসান চৌধুরী সোহাগ এবং সাবেক এপিপি এ এন এম মহিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
মামলা থেকে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৩ আগস্ট কুমিল্লা পুলিশ লাইনস এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের কুমিল্লা মহানগর শাখার সংগঠক মো.
মামলা শুনানির সময় আদালত চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতাকর্মী আসামিদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় চার আইনজীবীকে প্রিজনভ্যানে করে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথে আইনজীবীদের লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারা হয়। এ সময় ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন তারা।
আদালতের পিপি কাইমুল হক রিংকুর ভাষ্য, উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২৬ আইনজীবীর মধ্যে ২৪ জন আদালতে হাজির হন। চারজনের জামিন নামঞ্জুর এবং পলাতক দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন আদালত। তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি, ছাত্র-জনতার ওপর নারকীয় হামলা হয়েছে। অনেকেই আহত হয়েছেন। এ ঘটনার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইনজ ব আওয় ম ল গ চ র আইনজ ব ছ ত র জনত
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।