ঢাকার ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রীদের মধ্যে এইচপিভি টিকা না নেওয়ার হার সবচেয়ে বেশি
Published: 21st, April 2025 GMT
দেশের ১০ শতাংশ কিশোরী জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকার বাইরে আছে। এর অন্যতম কারণ, ভয় ও নেতিবাচক প্রচার। ঢাকায় ইংরেজি মাধ্যমে পড়া স্কুলগুলোর ছাত্রীদের মধ্যে টিকা না নেওয়ার হার সবচেয়ে বেশি।
এর মধ্যে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ঢাকার স্কুলগুলোর ছাত্রীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। টিকা না নেওয়ার অন্যতম কারণ ভয় ও নেতিবাচক প্রচার।
আজ সোমবার রাজধানীতে বাংলাদেশে এইচপিভি ক্যাম্পেইন, সমস্যা ও সমাধানবিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা উঠে আসে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইদেশি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সরকারি কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী, গবেষক ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কর্মকর্তারা অংশ নেন।
গত বছরের অক্টোবরে স্বাস্থ্য বিভাগ সারা দেশে এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) ক্যাম্পেইন করে। এই ক্যাম্পেইনের সময় ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এইচপিভি অর্থাৎ জরায়ুমুখ ক্যানসার–প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হয়। এই ক্যানসারের জন্য দায়ী হিউম্যান প্যাপিলোমা নামের ভাইরাস।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পাথ বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি কর্মকর্তা মহিবুল কাশেম বলেন, ৮২ লাখ কিশোরীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। টিকা পেয়েছে ৭৪ লাখ ১০ হাজার কিশোরী। অর্থাৎ ওই বয়সী (১০–১৪ বছর) ৯০ শতাংশ কিশোরী টিকা পেয়েছে।
টিকা কারা নেয়নি, কেন নেয়নি তারও জরিপ করা হয়েছে উল্লেখ করে মহিবুল কাশেম বলেন, টিকা না নেওয়ার অন্তত ২০টি কারণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়, ইনজেকশনের ভয়, বাড়ি থেকে টিকা কেন্দ্র দূরে, টিকার প্রয়োজন সম্পর্কে অজ্ঞতা, টিকা নিলে গর্ভধারণ হবে না—এমন নেতিবাচক প্রচার, টিকা নেওয়ার কথা কেউ বলেনি, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে না পারা, রেজিস্ট্রেশনের জন্য জন্মসনদ না থাকা।
টিকা কার্যক্রমের লাইন ডিরেক্টর আবুল ফজল মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর চেয়ে ঢাকা শহরের ইংরেজি স্কুলে পড়া শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো ছিল কঠিন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের নিয়মিত টিকা কর্মসূচির মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনজরায়ুমুখ ক্যানসার থেকে বাঁচাবে টিকা ১৬ অক্টোবর ২০২৪ভাইরাস–বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মুন্সী জরায়ুমুখ ক্যানসার শনাক্তে ‘ভায়া’ পরীক্ষা কার্যকর পদ্ধতি কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, টিকা দেওয়ার গাইডলাইন পরিবর্তন করতে হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে বিশিষ্ট টিকাবিজ্ঞানী ও আইদেশির প্রতিষ্ঠাতা ফেরদৌসী কাদরি বলেন, এইচপিভি সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। একটি কিশোরী কেন টিকা পেল না, সে কথা কেউ জিজ্ঞাসা করে না। তিনি বলেন, মানুষকে সচেতন করতে, সব কিশোরীকে টিকার আওতায় আনতে সরকারি–বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুনএক ডোজ এইচপিভি টিকা নিন, জরায়ুমুখ ক্যানসার রুখে দিন২৬ অক্টোবর ২০২৪আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) লাইন ডিরেক্টর শাহ আলী আকবর আশরাফী বলেন, এমআইএসের তথ্যভান্ডারে টিকা নেওয়া সব কিশোরীর তথ্য আছে। গবেষকেরা এই তথ্য প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন।
আলোচনার শেষ পর্যায়ে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়েবা আক্তার বলেন, ক্যানসার শনাক্তের পরীক্ষা সহজলভ্য এবং মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আইদেশির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রফিউর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ক্যানসার–বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আশরাফুন্নেসা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক শেখ সাইফুল হক, আয়োজক প্রতিষ্ঠানের সহকারী বিজ্ঞানী তাসরিনা আজাদ।
আরও পড়ুনবিয়ের আগেই কেন মেয়েদের জরায়ুমুখের ক্যানসারের টিকা নিতে হবে২৪ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত অন ষ ঠ ন ব সরক র এইচপ ভ
এছাড়াও পড়ুন:
৪৭ দিন ক্যাম্পে থেকে ১০–১২ দিন অনুশীলন, হতাশ ক্রিকেটাররা
টানা খেলার ধকল কাটাতে জাতীয় দল এখন বিশ্রামে। ‘এ’ দল ও হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) দলের অনুশীলন হচ্ছে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে। তবে দুই দল মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন ক্রিকেটারের অনুশীলনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিকূল আবহাওয়া। বৃষ্টির কারণে অনুশীলন করতে না পারায় ক্রিকেটারদের মধ্যেও হতাশা কাজ করছে।
১০ জুন প্রধান কোচ ডেভিড হেম্পের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রামে ক্যাম্প শুরু করে এইচপি। চট্টগ্রাম থেকে একটি সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৪৭ দিনে সব মিলিয়ে মাত্র ১১ থেকে ১২ দিন মূল মাঠে অনুশীলন করা গেছে। অন্য সময় ভাগে ভাগে স্কিল অনুশীলন ও ফিটনেস নিয়ে কাজ হয়েছে ইনডোরে। তবে ইনডোরে টার্ফ বসানোর কাজ চলায় সেখানেও বিরতি দিতে হয়েছে।
আরও পড়ুনবিসিবির আমন্ত্রণে মাহমুদউল্লাহর ‘না’২৪ জুলাই ২০২৫হাই পারফরম্যান্স দলের ম্যানেজার জুনায়েদ চৌধুরীর দাবি অবশ্য ভিন্ন। তিনি বলেছেন, তাঁরা ২৪-২৫ দিন মূল মাঠে অনুশীলন করেছেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এইচপির একাধিক ক্রিকেটার প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে তাঁরা বেশির ভাগ দিনই অনুশীলন করতে পারেননি। জাতীয় দলের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে এটি তাঁদের জন্য বড় সুযোগ। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে অুশীলন করতে না পারায় তাঁদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে।
প্রতিকূল আবহাওয়ায় চট্টগ্রামে এইচপি দলকে ঠিকমতো অনুশীলন করতে দেয়নি