গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মায়ের কোল থেকে ছিটকে কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়েছে এক শিশু। এ ছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মায়ের সঙ্গে বেড়াতে এসে নছিমনচাপায় প্রাণ গেছে আরেক শিশুর।
 
পলাশবাড়ীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে আলেয়া (৩) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। সোমবার দুপুরে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের উপজেলার ঢোলভাঙ্গা বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। শিশু আলেয়া উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়নের পূর্ব গোপীনাথপুর গ্রামের মাহামুদ মিয়ার মেয়ে। মাহামুদ সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন।

পুলিশ ও নিহতের স্বজন জানান, শিশু আলেয়া তার মায়ের সঙ্গে সেনাসদস্য বাবার কর্মস্থল সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিল। পথে ঢোলভাঙ্গা বাজার এলাকায় বেপরোয়া গতির অপর একটি রিকশাভ্যান আলেয়া ও তার মাকে বহনকারী রিকশাভ্যানটিকে সামনে থেকে ধাক্কা দেয়। এতে মায়ের কোল থেকে সড়কে ছিটকে পড়ে আলেয়া। এ সময় গাইবান্ধাগামী একটি কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় শিশুটি।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সোমবার দ্রুতগতির নছিমনের ধাক্কায় মুন্না (২) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। বিকেলে উপজেলা পৌর সদরের চণ্ডীপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। শিশুটি দু’দিন আগে মায়ের সঙ্গে চণ্ডীপুরে নানাবাড়িতে বেড়াতে আসে। সে কালীগঞ্জ উপজেলার কলেজ মোড় এলাকার আনারুল হোসেনের ছেলে। 

শিশুর মামা আব্দুস সালাম জানান, বাড়িতে যাওয়ার জন্য মায়ের সঙ্গে মুন্না রাস্তায় বের হয়। এ সময় একই সড়ক ধরে একটি নছিমন দ্রুতগতিতে রাস্তার বিপরীত পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মুন্নাকে ধাক্কা দেয়। এতে সড়কে সে ছিটকে পড়ে। পরে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 
 
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ন হত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সব সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অপারেটররা

অবশেষে সিমের সব স্লট ‘লক’ রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে দেশের মোবাইল অপারেটররা।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল অপারেটরদের এ সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২৭ অক্টোবর বিটিআরসির ৩০০তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্তের বিবরণী অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ নিয়ম কার্যকর হবে।

আরও পড়ুনঅবৈধ মুঠোফোন বন্ধ হবে ১৬ ডিসেম্বর থেকে, কীভাবে জানবেন বৈধ কি না৩০ অক্টোবর ২০২৫

মোবাইল অপারেটররা এখন কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রি করছে। তবে সে ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের সব সিম লক করতে পারে না তারা। বড় মোবাইল অপারেটররা দীর্ঘদিন ধরে সব সিম লকের বিধান চেয়ে আসছিল।

এখন বিটিআরসি বলছে, স্মার্টফোনের সিমের সব স্লট লক করার সুবিধা পাবে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধসাপেক্ষে গ্রাহকের পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো অপারেটরের সিম ব্যবহারের জন্য লক খুলে দিতে হবে।

মুঠোফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ‘ডিভাইস লকিং’ অ্যাপসের মাধ্যমেও স্মার্টফোন কিস্তিতে বিক্রয় করা যাবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।

সিম লকিং বা নেটওয়ার্ক লকিং হলো, যে অপারেটর থেকে কিস্তিতে স্মার্টফোন কেনা হবে, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেই অপারেটরের সিম বা নেটওয়ার্ক ছাড়া অন্য সিম বা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থাৎ সিম বা নেটওয়ার্ক লকিং ও ডিভাইস লকিং—উভয় পদ্ধতিতে একসঙ্গে অথবা এককভাবে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রি করা যাবে।

এ ক্ষেত্রে সিম লকিং বা নেটওয়ার্ক লকিং হলো যে অপারেটর থেকে কিস্তিতে স্মার্টফোন কেনা হবে, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেই অপারেটরের সিম বা নেটওয়ার্ক ছাড়া অন্য সিম বা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যদিকে মুঠোফোন বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান থেকে কিস্তিতে স্মার্টফোন কেনা হলে টাকা শোধ না হওয়া পর্যন্ত ডিভাইসটি লক থাকে। সে ক্ষেত্রে ডিভাইসে অন্য সিম ব্যবহার করতে না পারা, বিক্রি করতে না পারাসহ বিভিন্ন শর্ত থাকে। এটা ডিভাইস লকিং হিসেবে পরিচিত।

আরও পড়ুন১০টির বেশি সিম থাকলে এসএমএস-বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বন্ধ হবে ধাপে ধাপে৩০ জুলাই ২০২৫

নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি আরও বলেছে, মোবাইল অপারেটররা স্মার্টফোন আমদানি, উৎপাদন ও সংযোজন করতে পারবে না। তবে তারা স্মার্টফোন উৎপাদনকারী বা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে। চুক্তির মাধ্যমে বিটিআরসি অনুমোদিত স্মার্টফোন তারা কিস্তিতে বিক্রি করতে পারবে।

এটি ভালো উদ্যোগ। যাঁরা একসঙ্গে অনেক টাকা দিয়ে স্মার্টফোন কিনতে পারেন না, তাঁদের জন্য সুবিধা হবে। তবে কেউ যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব টাকা দিতে না পারেন বা বের হয়ে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে করণীয় কী হবে, তা উল্লেখ থাকা দরকার। অর্থাৎ শর্ত প্রযোজ্যের বিষয়গুলো স্পষ্ট থাকতে হবে।বি এম মইনুল হোসেন, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউট

কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির ক্ষেত্রে বিটিআরসির অনুমতি নিয়ে অপারেটররা বিভিন্ন প্যাকেজ ও বান্ডেল অফার দিতে পারবে। দেশে প্রচলিত আর্থিক আইন, ব্যাংকিং বিধিমালা, ভোক্তা সুরক্ষা নীতিমালাসহ প্রযোজ্য অন্যান্য আইন অপারেটরদের মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি গ্রাহকের ডিভাইসের (স্মার্টফোন) তথ্যের নিরাপত্তা অপারেটরদের নিশ্চিত করতে হবে।

স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়ানোসহ তা সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে ২০২৩ সালে একটি সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সিদ্ধান্ত দিয়েছিল বিটিআরসি। কিন্তু স্মার্টফোনের সব সিমই লক চেয়ে বিটিআরসির কাছে আবেদন করেছিল মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি।

আরও পড়ুনব্যক্তি পর্যায়ে মুঠোফোন সিমের ব্যবহার আরও কমাচ্ছে সরকার২৪ জুন ২০২৫

এই দুই অপারেটরের যুক্তি ছিল, একটি সিম উন্মুক্ত রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রি তাদের জন্য সুবিধাজনক নয়।

যদিও তখন বাংলালিংক সব সিম লক করার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। কারণ হিসেবে বাংলালিংক বলেছিল, স্মার্টফোন বিক্রিতে বড় অপারেটররা ভর্তুকি দেবে। আর এতে ছোট অপারেটররা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে।

তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলালিংক চিঠি দিয়ে বিটিআরসিকে জানায়, সিমের সব স্লট লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রি নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। তবে তারা নিজেদের প্রস্তুতির জন্য সময় চায়। আগামী জানুয়ারি মাসে এই বিধান কার্যকরের অনুরোধ জানায় তারা।

বিটিআরসি চলতি বছরের এপ্রিলে ডিভাইস লকিংয়ের মাধ্যমে স্মার্টফোন বিক্রির অনুমতি দেয়। স্মার্ট টেকনোলজি বাংলাদেশ লিমিটেড নামের মুঠোফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নাইজেরিয়াভিত্তিক আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পামপের সঙ্গে যৌথভাবে ডিভাইস লকিংয়ের মাধ্যমে স্মার্টফোন বিক্রি শুরু করে। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে বিটিআরসি জানায়, ডিভাইস লকিং চালুর পর স্মার্টফোন বিক্রি বেড়েছে ২৮ শতাংশ।

মুঠোফোন বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান থেকে কিস্তিতে স্মার্টফোন কেনা হলে টাকা শোধ না হওয়া পর্যন্ত ডিভাইসটি লক থাকে। সে ক্ষেত্রে ডিভাইসে অন্য সিম ব্যবহার করতে না পারা, বিক্রি করতে না পারাসহ বিভিন্ন শর্ত থাকে। এটা ডিভাইস লকিং হিসেবে পরিচিত।

বিটিআরসির ধারণা, ডিভাইস লকিংয়ের পাশাপাশি সব সিম বা নেটওয়ার্ক লকিং সুবিধায় কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির অনুমোদন ব্যবহার আরও বাড়বে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি ভালো উদ্যোগ। যাঁরা একসঙ্গে অনেক টাকা দিয়ে স্মার্টফোন কিনতে পারেন না, তাঁদের জন্য সুবিধা হবে। তবে কেউ যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব টাকা দিতে না পারেন বা বের হয়ে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে করণীয় কী হবে, তা উল্লেখ থাকা দরকার। অর্থাৎ শর্ত প্রযোজ্যের বিষয়গুলো স্পষ্ট থাকতে হবে।’

দেশেই তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের স্মার্টফোন, বাড়ছে কর্মসংস্থানচার মাসে মুঠোফোনের গ্রাহক কমেছে ৬১ লাখমুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ, কিন্তু জনপ্রিয় হয়নি কেনদেশে সবার জন্য কিস্তিতে মুঠোফোন কেনার সুবিধা নেই

সম্পর্কিত নিবন্ধ