‘স্বদেশ পর্যায়ের গানে খেয়াল করলাম দর্শকেরা চোখ মুছছেন’
Published: 21st, April 2025 GMT
দীর্ঘদিন পর রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী, শিক্ষক অণিমা রায় যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। ব্যক্তিগত ভ্রমণ হলেও এবারের যাত্রায় নিউইয়র্ক, ডালাসসহ বেশ কিছু রাজ্যে সংবর্ধিত হলেন তিনি। ১৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো শহরে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে অণিমা রায়কে সংবর্ধনা জানানো হয়। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বায়োস্কোপ ফিল্মস। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সানফ্রান্সিসকোর ফ্রিমন্ট এলাকার একটি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ সংবর্ধনা দেন বায়োস্কোপ ফিল্মসের কর্ণধার রাজ হামিদ ও নওশাবা রুবনা রশীদ। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী শিল্পী নন্দিতা ইয়াসমিন প্রমুখ।
‘বৈশাখে রবীন্দ্রসংগীতের আসর’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের শুরুতে শায়লা জামান দিনা ও রাজশ্রী গান শোনান। এরপর মূল পরিবেশনায় একে একে ১৫টি রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে শোনান অণিমা রায়। শিল্পী তাঁর অনুষ্ঠান শেষ করেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ গানটির মাধ্যমে। এ গানের সময় দর্শকদের আপ্লুত হতে দেখা যায়।
আয়োজন প্রসঙ্গে শিল্পী অণিমা রায় বলেন, ‘আমার এবারের ভ্রমণ একেবারেই ব্যক্তিগত। সন্তানকে নিয়ে পরিবারের সঙ্গে অল্প কিছুদিনের জন্য সময় কাটানো। সেখানে এত এত মানুষের ভালোবাসা পাব, তা সত্যিই আনন্দের। একজন শিল্পী এই ভালোবাসা কুড়াতেই গান করেন। সেখানে নিউইয়র্ক, ডালাস ও সানফ্রান্সিসকোতে যে সম্মানটুকু পেলাম, তা সত্যিই অনেক দিন আরও ভালো কিছু গান করার শক্তি জোগাবে। বিশেষ স্বদেশ পর্যায়ের গানে খেয়াল করলাম দর্শকেরা চোখ মুছছেন। সত্যিই এ এক অভূতপূর্ব প্রাপ্তি আমার। কৃতজ্ঞতা ক্যালিফোর্নিয়ার দর্শকদের প্রতি। এত নিবিষ্ট শ্রোতা–দর্শকের সামনে সত্যিই গাইতে ইচ্ছে করে।’
অনুষ্ঠানে অণিমা রায়ের পরিবেশনায় ছিল ‘আকাশ ভরা সূর্যতারা’, ‘এরা সুখের লাগি’, ‘গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙামাটির পথ’, ‘কতবারও ভেবেছিনু’, ‘প্রাণ চায় চক্ষু না চায়’সহ একাধিক রবীন্দ্রসংগীত ও তিন কবির গানের পরিবেশনা। একটি অংশে ‘কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি’ পরিবেশনা অণিমা রায়ের গানের সঙ্গে রাজ হামিদের আবৃত্তি ও নওশাবা রুবনা রশীদের নৃত্য অনুষ্ঠানে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন যারীন তাসনিম।
অনুষ্ঠানে অণিমা রায়কে সংবর্ধনা জানানো হয়। ছবি: সংগৃহীত.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সোনার টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে উঠছে, সর্বনিম্ন দর কত জানেন
নিলামঘর সদবিস গতকাল শুক্রবার ইতালীয় শিল্পী মরিজিও ক্যাটেলানের তৈরি সম্পূর্ণ সোনার টয়লেটটি নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেছে। এ ভাস্কর্যটির নাম ‘আমেরিকা’।
সদবিস জানিয়েছে, এ শিল্পকর্ম এটাই দেখাতে চায়, কখনো কখনো শিল্পের ‘মূল্য’ আর তার বাজারে বিক্রির ‘মূল্য’ এক নয়। এটি শুধু শিল্পকর্মই নয়, একটি পুরোপুরি ব্যবহারযোগ্য টয়লেটও। এ টয়লেটেরই অনুরূপ একটি সংস্করণ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদ থেকে চুরি হয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে।
১৮ নভেম্বর নিউইয়র্কে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। টয়লেটটির সর্বনিম্ন দর ধরা হয়েছে এর সোনার বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী। এতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ১০১ দশমিক ২ কিলোগ্রাম (২২৩ পাউন্ড) খাঁটি সোনা, যার দাম এখন প্রায় ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) মার্কিন ডলার (প্রায় ১২২ কোটি টাকা)।
সদবিসের নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান ডেভিড গ্যালপারিন বলেন, ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।
ক্যাটেলান শুধু বিতর্ক সৃষ্টিকারীই নন; বরং অত্যন্ত সফল শিল্পী। তাঁর আরেকটি কাজ, ‘কমেডিয়ান’। অর্থাৎ দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা। গত বছর নিউইয়র্কের এক নিলামে ৬২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল শিল্পকর্মটি।
‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।এর আগে ২০১৬ সালে ক্রিস্টিস নিলামে ক্যাটেলানের আরেকটি ভাস্কর্য ‘হিম’ ১ কোটি ৭২ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। ভাস্কর্যটিতে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারকে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দেখা যায়।
ক্যাটেলান নিজেই বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’
‘আমেরিকা’র দুটি সংস্করণ ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল। যেটি এবার নিলামে উঠছে, সেটি ২০১৭ সাল থেকে এক অজ্ঞাত সংগ্রাহকের কাছে রয়েছে। অন্য সংস্করণটি ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরের একটি বাথরুমে প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয়। সেখানে ১ লাখের বেশি দর্শক সার বেঁধে এসেছিলেন।
মরিজিও ক্যাটেলান হচ্ছেন এমন একজন শিল্পী, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সবাইকে ভাবাতে ও চমক দিতে পছন্দ করেন।ডেভিড গ্যালপারিন, সদবিস-এর নিউইয়র্ক শাখার সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধানওই সময় গুগেনহাইম ভাস্কর্যটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে ধার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কারণ তিনি জাদুঘর থেকে একটি ভ্যান গঘ চিত্রকর্ম ধার নিতে চেয়েছিলেন।
২০১৯ সালে ‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হয় উইনস্টন চার্চিলের জন্মস্থান হিসেবে বিখ্যাত ব্লেনহাইম প্রাসাদে। কিন্তু প্রদর্শনীর কয়েক দিনের মধ্যেই একদল চোর ভবনে ঢুকে সেটি পাইপলাইন থেকে খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।
চলতি বছরের শুরুতে দুই ব্যক্তিকে ওই চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সোনার টয়লেটটি আজও উদ্ধার করা যায়নি। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, এটি সম্ভবত ভেঙে গলিয়ে ফেলা হয়েছে।
গ্যালপারিন বলেন, তিনি অনুমান করতে চান না ‘আমেরিকা’ শেষ পর্যন্ত কত দামে বিক্রি হতে পারে। তবে তাঁর ভাষায়, ক্যাটেলানের ‘ডাকটেপে আটকানো কলা’ শিল্পকর্মটি যেমন ‘অমূল্য ধারণা থেকে মূল্য তৈরি করা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, ‘আমেরিকা’ ঠিক তার উল্টো। এখানে মূল উপকরণটিই (সোনা) অত্যন্ত মূল্যবান, যা বেশির ভাগ শিল্পকর্মে থাকে না।
ক্যাটেলান বলেছেন, তাঁর ‘আমেরিকা’ ভাস্কর্যটি অতিরিক্ত সম্পদ ও বিলাসিতাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘তুমি ২০০ ডলারের দুপুরের খাবার খাও বা ২ ডলারের হটডগ, শেষ ফলাফল টয়লেটে গিয়ে একই হয়।’‘আমেরিকা’ প্রদর্শিত হবে সদবিসের নতুন নিউইয়র্ক কার্যালয় ব্রয়্যার বিল্ডিংয়ে, ৮ নভেম্বর নিলাম শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত। এটি একটি বাথরুমে স্থাপন করা হবে, যা দর্শকেরা কাছ থেকে দেখতে পাবেন।
তবে গুগেনহাইম ও ব্লেনহাইম প্রাসাদের মতো এবার দর্শকদের টয়লেটটি ব্যবহার করার সুযোগ থাকবে না। তাঁরা শুধু দেখতে পারবেন, কিন্তু ফ্লাশ করতে পারবেন না।
আরও পড়ুনসোনার আস্ত একটি কমোড চুরি করেছিলেন তিনি০৩ এপ্রিল ২০২৪