বিতর্কিত নিয়োগ এড়া‌তে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুই থে‌কে তিনজন বিচারপতিদের মধ্য থে‌কে প্রধান বিচারপ‌তি নিয়োগের প্রস্তাব ক‌রে‌ছে বিএনপি। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে এ প্রস্তাব করা হ‌য়ে‌ছে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ। 

জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ করেছে বিচার ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ‌তে দ্বিমত জানিয়েছে বিএনপি। বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেন,  রাষ্ট্রে আগে কিছু অসঙ্গতি দেখা গেছে। সর্বক্ষেত্রে যদি নির্দিষ্ট করে দেই, তা রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর হবে না। অন্তত এক‌টি বিকল্প থাকা উচিত। ত‌বে বিএন‌পির প্রস্তাব এখনও গৃহীত হয়‌নি, এখনো আলোচনা চলছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নেসেসিটি মেকস ল। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হচ্ছে সর্বোচ্চ আইন। ডকট্রিন অব নেসেসিটি বিবেচনা রেখেই কিছু অপশন রাখা সুবিধা। না হলে রাষ্ট্র এমন কোনো ব্যক্তির হাতে পড়ে যাবে, যা রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর হবে না। 

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মন্ত্রী পরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্বে পরিচালিত। কিন্তু ক‌মিশন বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা কর্তৃক সরকার পরিচালিত হ‌বে। তাতে এখানে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব থাকে না। প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব থাক উচিত।

একজন সর্বোচ্চ দুইবার প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের এ প্রস্তাবে দ্বিমত জানিয়েছে বিএনপি। দলটির প্রস্তাবে বলা হ‌য়ে‌ছে, দুইবারের পরে বিরতি দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়া যা‌বে। তবে রোববারে মুলতবি হওয়া বৈঠকে ক‌মিশন প্রস্তাব করে, এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিকল্প প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করুন। আর ক‌মিশনও প্রস্তাবটি আনুষ্ঠা‌নিকভা‌বে দেয়নি। 

তিনি আরও বলেন, একজন ব্যক্তি যাতে প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা পদে না থাকেন এ নিয়ে আলাপ হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদীয় দ‌লের সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রী হয়। এটা জরুরি নয়, দ‌লের প্রধান প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু সু‌যোগ রাখা উচিত। আর প্রধানমন্ত্রী যিনি হবেন, তিনিই সংসদ নেতা হবেন। এটাই রী‌তি। কোনো কোনো দেশে পৃথক সংসদ নেতার নজির র‌য়ে‌ছে। কিন্তু সেখা‌নে সংসদ নেতার নির্বাহী ক্ষমতা নেই। বাংলা‌দেশে সংসদ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী অনেকটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ১৪ জন হবেন, এ‌তে বিএন‌পি একমত। উপদেষ্টামণ্ডলীর রুটিন দা‌য়িত্ব পালন কর‌বে‌, এ‌তে বিএন‌পি একমত। প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য থেকে একজনকে মনোনীত করা হবে, এ সুপা‌রি‌শেও একমত। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে একমত। স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ করা হবে না, এই ব্যাপারে আমরা সম্পূর্ণ একমত।

সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতি‌রো‌ধের সুপা‌রি‌শেও বিএন‌পি মোটামুটি একমত। তবে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা দরকার। কারণ শৃখলাবাহিনী বলতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন বিভাগসহ পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত আছে। সুতরাং ঢালাওভাবে শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষেত্রে একটি বিধান রাখ‌লে, বিশৃঙ্খলা হয়ে যেতে পারে। 

সালাহউদ্দিন আহ‌মেদ বলেন, দ্বিক‌ক্ষের আইনসভা গঠ‌নে বিএন‌পি একমত। উচ্চ কক্ষের নাম সিনেট, নিম্ন কক্ষের নাম জাতীয় সংসদ হ‌বে। নিম্ন কক্ষের ৪০০ আসেন মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এটা নিয়ে আমরা একমত, তবে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত আছে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বলেছি। রাষ্ট্রপতির কা‌ছে কী কী ক্ষমতা অর্পণ করা যায়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া রাষ্ট্রপতি কী কী করতে পারবেন, তা বিস্তারিত থাকবে। ত‌বে এই মুহূর্তে বিস্তারিত উন্মোচন করছি না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র প রস ত ব ন ব চ রপত ম দ বল ন উপদ ষ ট র জন য সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সব দলের সম্মতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে এবি পার্টি

জুলাই সনদকে আইনি বৈধতা দেওয়া ও বাস্তবায়নে বাস্তবসম্মত পদ্ধতি কী হতে পারে সেই বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যে পৌঁছানোর পক্ষে এবি পার্টি।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন এবি পার্টির নেতৃবৃন্দ। 

বৈঠক পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের সামনে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস নির্বাচন কেন্দ্রীক সংশয় ও সন্দেহ প্রকাশ করলেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার ব্যাপারে যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তার সাথে এবি পার্টি একমত। জুলাই সনদের বৈধতা ও বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে সকল দল এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি তাবে অনেক বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দল একমত বলে মনে করি। যে বিষয়ে দলগুলো ঐকমত্যে আসতে পারছে না সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা, পাশাপাশি ঐক‍্যমত‍্য কমিশনে বসে সমাধানে আসা সম্ভব।”

এসময় তিনি জুলাই সনদের বৈধতা তৈরি ও বাস্তবায়নের জন‍্য ব‍্যক্তি ও দলের আকাঙ্ক্ষার ঊর্ধ্বে থেকে জাতীয় আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্ববান করেন। একইসঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে সংবিধানের বাইরে বা ভিতরে থেকে বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করার পক্ষে মতামত দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ ব্যারিস্টার সানী আবদুল হক।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • সব দলের সম্মতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে এবি পার্টি