জাপানের হাত ধরে অবশেষে শুরু হচ্ছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ। ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি জেটির সমন্বয়ে একটি টার্মিনাল নির্মাণে জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। জাইকার অর্থায়নে ২০২৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে এর নির্মাণ কাজ। ২০৩০ সালের শুরু থেকেই মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা।

দেশের সমুদ্রবাণিজ্যের চেহারা পাল্টে দিতে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথম দিকে ভারত ও চীন উভয়েই গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে আগ্রহী হওয়ায় দেখা দেয় ভূরাজনৈতিক জটিলতা। তবে শেষ পর্যন্ত উন্মুক্ত দরপত্রে দুই দেশকে পেছনে ফেলে এগিয়ে আসে জাপান।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বন্দরের একটি টার্মিনাল নির্মাণে জাপানি প্রতিষ্ঠান পেন্টা ওশান এবং থোয়া করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চুক্তি অনুযায়ী ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আগামী ৪ বছরে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ একটি কনটেইনার জেটি এবং ৩০০ মিটার দীর্ঘ আরো একটি মাল্টি পারপাস জেটিসহ টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে।

সাড়ে ১৪ মিটার গভীরতার কৃত্রিম এই চ্যানেলের কারণে ৮ থেকে ৯ হাজার টিইইউএস ধারণ ক্ষমতার জাহাজও সহজেই নোঙর করতে পারবে মাতারবাড়িতে। এই বন্দর বাংলাদেশকে বাণিজ্যিক হাবে পরিণত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান।
 
তিনি বলেন, কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করবে জাপানি প্রতিষ্ঠান। এই বন্দর চালু হলে এই অঞ্চলে বাংলাদেশ বাণিজ্যিক হাবে পরিণত হবে। সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দরের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা কমবে।
 
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রকল্পের কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হবে বলে জানান নৌপরিবহন উপদেষ্টা ড.

এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়ে কিংবা জনগণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো প্রকল্প বা উদ্যোগ নেওয়া হবে না। ২০৩০ সালের শুরু থেকে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম চালু হবে।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ত রব ড়

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ামির স্বপ্নভঙ্গ, ইতিহাস গড়লো ভ্যানকুভার এফসি

কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে লিওনেল মেসি ও তার দল ইন্টার মায়ামিকে উড়িয়ে দিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে নাম লিখিয়েছে কানাডার ক্লাব ভ্যানকুভার এফসি। বৃহস্পতিবার (বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা), মায়ামির চেইস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে দর্শকদের উপহার দেওয়া হয় গোল, নাটক এবং ৩২টি ফাউলের নাটকীয় এক সন্ধ্যা।

প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ২-০ গোলে জয় পেয়ে আগেই সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল ভ্যানকুভার। তাই দ্বিতীয় লেগে ইন্টার মায়ামির জন্য লক্ষ্যটা ছিল বেশ কঠিন, কমপক্ষে তিন গোলের ব্যবধানে জয়। কিন্তু সেই লক্ষ্য অধরাই থেকে গেল। উল্টো ৩-১ গোলের হার সইতে হলো ডেভিড বেকহ্যামের মালিকানাধীন দলটিকে। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে উড়েই ফাইনালে উঠে যায় কানাডার ক্লাবটি।

ম্যাচের শুরুটা অবশ্য ইন্টার মায়ামির জন্য আশা জাগানিয়া ছিল। নবম মিনিটেই মেসি ও সুয়ারেজের দারুণ কম্বিনেশনের ফসল হিসেবে জর্ডি আলবা গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। প্রথমার্ধ শেষে ১-০ গোলের লিডে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা।

আরো পড়ুন:

দুয়োতে ম্যাচ হেরে কনফাকাফ থেকে বিদায়ের শঙ্কায় মেসিরা

২০২৬ বিশ্বকাপ খেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন মেসি

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নামে ভ্যানকুভার। ম্যাচের ৫১ মিনিটে ব্রেইন হোয়াইট গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। এরপর মাত্র দুই মিনিটের ব্যবধানে ইন্টার মায়ামির রক্ষণভাগের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যান পেদ্রো ভিতে। এরপর ম্যাচে ফিরে আসার অনেক চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি মেসির দল।

৭১ মিনিটে ভ্যানকুভারের হয়ে তৃতীয় ও শেষ গোলটি করেন সেবাস্তিয়ান বারহেল্টার। যা ম্যাচের নিয়তি নির্ধারণ করে দেয়। এরপর ইন্টার মায়ামি একাধিকবার আক্রমণ করলেও প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক ও শক্ত রক্ষণদেয়াল ভাঙতে ব্যর্থ হয়।

ম্যাচটিতে দুই দলই ১৬টি করে ফাউল করে। যা মিলিয়ে মোট ফাউলের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২। ইন্টার মায়ামি ১৭টি শট নেয়, যার মধ্যে ৬টি ছিল অন টার্গেটে এবং মাত্র একটিই জালে ঠাঁই পায়। অন্যদিকে, ভ্যানকুভারের ১০টি শটের ৬টিই লক্ষ্যে ছিল এবং এর মধ্যে তিনটি জালে জড়ায়।

এই হারের ফলে কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের ফাইনালে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হলো মেসি-সুয়ারেজদের। আর ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালের টিকিট কাটলো ভ্যানকুভার এফসি।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ