অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের ফাইল ছবি দেবেন
Published: 23rd, April 2025 GMT
এক নারীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) ছানাউল্ল্যাহ গতকাল বুধবার এ আদেশ দেন। আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে গত ১২ মার্চ মেহের আফরোজ শাওন, তাঁর বাবা, ভাইসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিশি ইসলাম নামের এক নারী। তিনি মামলায় বলেছেন, অভিনেত্রী শাওনের বাবা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী তাঁর স্বামী। তিনি আদালতে তাঁদের কাবিননামা জমা দিয়েছেন।
নিশি ইসলামের মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত মেহের আফরোজ শাওনসহ ১২ জনকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারির আদেশ দেন। গতকাল ছিল মামলার হাজিরার দিন। এদিন শাওনসহ ১০ জন আদালতে হাজির না থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
মেহের আফরোজ শাওন ছাড়া তাঁর বাবা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, ভাই মাহিন আফরোজ, বোন সেঁজুতি ও তাঁর স্বামী সাব্বির, শাওনের বাবার বোনের ছেলে মোখলেছুর রহমান, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ, সিটিটিসি ইউনিটের সাবেক এডিসি নাজমুল ইসলাম, সিটিজেন কেবলসের মহাব্যবস্থাপক সুব্রত দাস এবং হিসাব বিভাগের প্রধান মাইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
এ ছাড়া দুজন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। তাঁরা হলেন পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও উপপরিদর্শক শাহ আলম। আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলায় নিশি ইসলাম দাবি করেছেন, আগের স্ত্রীর কথা গোপন রেখে ও প্রতারণা করে ২০২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ৫০ লাখ টাকা দেনমোহরে তাঁকে বিয়ে করেন শাওনের বাবা মোহাম্মদ আলী। তিনি পরে জানতে পারেন যে মোহাম্মদ আলী আগে থেকেই বিবাহিত। পরে বিয়ের কথা গোপন করার জন্য আসামিরা তাঁকে চাপ দেন। ৪ মার্চ মোহাম্মদ আলীর গুলশানের বাসায় বাদীকে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়। অভিনেত্রী শাওনের বিরুদ্ধেও মামলায় নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন বাদী। পরে বাদীকে বাসা থেকে তুলে এনে মামলায় গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার আগে হাজতখানার ভেতর থেকে এ বি এম খায়রুল হককে বের করা হয়। এ সময় তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।
হাজতখানার ভেতর থেকে হাঁটিয়ে আদালতের ভেতরের একটি সরু রাস্তা দিয়ে খায়রুল হককে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে আনা হয়। পরে দুজন পুলিশ কনস্টেবল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের হাত ধরে রাখেন। তিনি হেঁটে হেঁটে নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠেন। পরে দোতলা থেকে আবার হেঁটে হেঁটে তিনতলায় ওঠেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়। তখন সময় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট। নিজের দুই হাত পেছনে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তখনো বিচারক আদালতকক্ষে আসেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে থাকেন। কিছুক্ষণ দেখার পর আবার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতকক্ষে আসেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. ছানাউল্লাহ। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ বি এম খায়রুল হকের নাম ধরে ডাকেন।
তখন রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা শাহবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেক মিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। এসআই খালেক মিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। সেই সংক্ষিপ্ত রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মতপ্রকাশ করেন যে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচন দুটি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলেও সংবিধান সংশোধনের জন্য মত দেন। ওই সংক্ষিপ্ত আদেশটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আদেশের পক্ষে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি), সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) মত দেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের এই তিন বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ মর্মে ঘোষণার বিপক্ষে মত দেন।’
প্রিজন ভ্যানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আজ বুধবার ঢাকার আদালত এলাকায়