চারদিকে ইন্টারনেট, সামাজিক মাধ্যম ও আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব এখন দেখার মতো। খেলার মাঠও প্রায় এগুলোর দখলে চলে গেছে বললে ভুল হবে না। কেউ কেউ তাই চোখে আঙুল দিয়ে প্রশ্ন করতে কার্পণ্য তো করেন-ই না; উপরন্তু একটু রূঢ় কণ্ঠেই আমাদের প্রজন্ম অর্থাৎ জেনারেশন জেড সংক্ষেপে জেন–জির কাছে প্রশ্ন করে বসেন, একাডেমিকের বাইরে তোমরা কোনো বই পড়েছ?
সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছিলেন, ‘বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয় না।’ বই কিনে সত্যিই কি কেউ দেউলিয়া হন না? বইপ্রেমীদের মধ্যে এই প্রশ্নটি নিয়েও চলে মধুর তর্ক। যা সহজে শেষ হয় না। তবে তর্কবিতর্ক যা–ই থাকুক না কেন, আজ ২৩ এপ্রিল সব পেছনে ফেলে বই নিয়ে উদ্যাপনের দিন। বিস্তৃত করে বললে বই কেনার দিন, পড়ার দিন, বই উপহার দেওয়ার দিন। আজ বিশ্ব বই দিবস। প্যারিসে অনুষ্ঠিত ১৯৯৫ সালের ইউনেসকোর সাধারণ অধিবেশনে ২৩ এপ্রিলকে বই দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। দিনটি ‘বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’ হিসেবেও অনেকের কাছে পরিচিত। বই পড়া, বই ছাপানো, বইয়ের কপিরাইট সংরক্ষণ করা এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোই বই দিবসের মূল উদ্দেশ্য।
পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যমতে, স্পেনের লেখক ভিসেন্ত ক্লাভেল আন্দ্রেসের কাছ থেকে বই দিবসের মূল ধারণাটি আসে। আন্দ্রেস ছিলেন ক্ল্যাসিক উপন্যাস ‘লা মানচার দন কিহোতে’র স্রষ্টা সেরভান্তেসের ভাবশিষ্য। মূলত মিগেল দে সেরভান্তেসের স্মৃতিতেই ১৯২৩ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে আন্দ্রেস স্পেনে বই দিবস পালন করা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে দিবসটি ইউনেসকো কর্তৃক স্বীকৃতি পায়। মিগেল দে সেরভান্তেস, উইলিয়াম শেক্সপিয়ার ও ইনকা গার্সিলাসো দে ভেগার প্রয়াণ দিবস ২৩ এপ্রিল হওয়ায় দিনটিকে বই দিবস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। উল্লেখ্য, বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান নির্মাতা ও লেখক সত্যজিৎ রায়েরও প্রয়াণ দিবস আজ।
একটি বইয়ের গল্প
বাংলা সাহিত্য দিনে দিনে অনেক মণি–মুক্তায় সমৃদ্ধ থেকে সমৃদ্ধতর হয়ে উঠেছে। আজ বই দিবসে বাংলা সাহিত্যের তেমনই একটি বই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক, প্রকাশের ১৪৬ বছর পরেও যে বইটির জৌলুশ ফুরায়নি। শুধু তা-ই নয়, বইটি পড়ে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ মুগ্ধ হয়েছিলেন। লেখককে নিয়ে প্রবন্ধ লিখেছিলেন।
১৮৮০ থেকে ১৮৮২ সালের মধ্যে বইটি রচনা করেন সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ছয় কিস্তিতে এটি প্রকাশিত হয়। প্রমথনাথ বসু ছদ্মনামে সঞ্জীব তখন বইটি প্রকাশ করেছিলেন। পত্রপত্রিকা সূত্রে জানা যায়, সঞ্জীবের গবেষণামূলক গ্রন্থ Bengal Ryots: Their Rights and Liabilities (১৮৬৪) পড়ে তৎকালীন লেফটেন্যান্ট গভর্নর খুশি হন। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে তাঁর প্রতিভার প্রশংসা করেন। উপহারস্বরূপ ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে তাঁকে চাকরি দেন। আর এই চাকরির সূত্রেই লেখককে পালামৌ যেতে হয়।
রচনার শুরুতেই সঞ্জীব উল্লেখ করেছেন যে পালামৌ যাওয়ার পর দু-একজন বন্ধু পালামৌ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখতে তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি লিখতে সম্মত তো হন-ইনি, উপরন্তু উপহাস করেছিলেন। উপহাস করলেন কেন? পালামৌ যাওয়ার আগে তৎকালীন ইংরেজি পত্রিকা ‘হরকারা’য় পালামৌ সম্পর্কে একজন সেনা কর্মকর্তার লেখা পড়ে পালামৌর একটা ছবি সঞ্জীবের মনে চিত্রিত হয়েছিল। যা বাস্তবের পালামৌয়ের সঙ্গে মেলেনি। উপহাস করার পেছনে এটি একটি কারণ হতে পারে। পাশাপাশি প্রশ্ন ওঠাও স্বাভাবিক যে এতই যখন বিরক্তি ঘটা করে দশ-বারো বছর পরে লিখলেন কেন? সঞ্জীবের অভিব্যক্তি থেকেই প্রশ্নটির উত্তর খোঁজা যাক। পালামৌর বর্ণনা করতে গিয়ে প্রসঙ্গান্তরে তিনি বলেছেন, ‘অদ্য যাহা ভালো লাগিতেছে না, দশ বৎসর পরে তাহার স্মৃতি ভালো লাগিবে। অদ্য যাহা সুখ বলিয়া স্বীকার করিলাম না, কল্য আর তাহা জুটিবে না। যুবার যাহা অগ্রাহ্য, বৃদ্ধের তাহা দুষ্প্রাপ্য। দশ বৎসর পূর্বে যাহা আপনিই আসিয়া জুটিয়াছিল, তখন হয়তো আদর পায় নাই, এখন আর তাহা জুটে না, সেই জন্য তাহার স্মৃতিই সুখদ।’ বোধ করি, পালামৌ সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের তেমনই এক ‘সুখদ স্মৃতি’। অথবা সঞ্জীব যেমনটা বলেছেন, ‘গল্প করা এ বয়সের রোগ, কেহ শুনুন বা না শুনুন—বৃদ্ধ গল্প করে।’
আরও পড়ুনসবচেয়ে বেশি বই পড়েন মার্কিনরা, বাংলাদেশিদের অবস্থান কততম৫ ঘণ্টা আগেসঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অগ্রজ (দাদা)। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তাঁর প্রতিভার প্রশংসা করে প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তাঁকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের আক্ষেপও ছিল। ‘সঞ্জীবচন্দ্র (পালামৌ)’ শিরোনামের প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, সঞ্জীবচন্দ্রের মধ্যে ‘প্রতিভার ঐশ্বর্য’ থাকলেও ‘গৃহিণীপনার’ অভাব ছিল। ‘গৃহিণীপনার’ আবরণে সঞ্জীবের চেষ্টা ও একাগ্রতার অভাবের যে আশঙ্কার কথা রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, সঞ্জীবের জীবনেও তার যথেষ্ট দৃষ্টান্ত আছে। পড়ালেখা, চাকরি—কোনো কিছুতেই সঞ্জীবচন্দ্র বেশি দিন থিতু হতে পারেননি।
কথাসাহিত্যের দর্শনে লেখকের ব্যক্তিসত্তার যেমন প্রতিফলন ঘটে, তেমনি প্রতিভাও বিকশিত হয়। প্রকৃত অর্থেই পালামৌতে সঞ্জীবের প্রতিভার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কী অসাধারণ বর্ণনাশৈলী, ভাষার প্রয়োগ, অলংকার, রূপক ও উপমার ব্যবহার; বইটা পড়ার পর এক অমোঘ ভালো লাগায় মন আবিষ্ট হয়ে থাকে।
পালামৌ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ‘অসম্পূর্ণতার অভিশাপে’র কথা বলেছেন। বারবার প্রসঙ্গ পরিবর্তন করা এর একটি কারণ হতে পারে। যদিও এই প্রসঙ্গান্তরকে ‘সৌষ্ঠবহানি’ বলেছেন রবীন্দ্রনাথ। তবে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে পালামৌ যত না অসম্পূর্ণ, তার চেয়ে অনেক বেশি প্রাণবন্ত। প্রকৃতিপ্রেমের পাশাপাশি এই রচনায় সঞ্জীবচন্দ্রের স্বদেশপ্রেম ও স্বাজাত্যবোধেরও পরিচয় মেলে। যাত্রাপথে কুলিদের মুখে ‘সাহেব’ সম্বোধন শুনে তিনি মর্মাহত হন। চিৎকার করে বলেন, ‘আমি সাহেব নই, আমি বাঙালি।’
ভ্রমণ বর্ণনার পাশাপাশি এই রচনায় পলান্ডু (পিঁয়াজ) থেকে শুরু করে রাধাকৃষ্ণের কাহিনি, মৌয়াগাছের নামকরণ (লেখকের দেওয়া নাম), লাতেহার পাহাড় ভ্রমণ, নববধূ প্রসঙ্গসহ বিবিধ বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির আলোকপাত যেমন করেছেন। তেমনি কখনো ছেলেবেলার স্মৃতি যোগ করেছেন তো কখনো যোগ করেছেন পূর্ব অভিজ্ঞতা। পালামৌ কি ভ্রমণকাহিনি না উপন্যাস, না অন্য কিছু? গঠনশৈলী বিবেচনায় পালামৌ না ভ্রমণকাহিনি, না উপন্যাস—এটি সঞ্জীবের একটি মুক্ত রচনা। ‘পালামৌ’কে মুক্তগদ্য বলা–ই যুক্তিযুক্ত হবে।
‘পালামৌ’তে প্রকৃতির বর্ণনা যেমন আছে, তেমন আছে মানুষ ও ওই অঞ্চলের তৎকালীন সমাজব্যবস্থার কথাও। যা এই রচনার প্রাণশক্তি। কোল অধ্যুষিত পালামৌ অঞ্চলের ভ্রমণবৃত্তান্ত লিখতে গিয়ে কোলদের আনন্দ-বেদনা, হাসি–আনন্দ বর্ণনা করতে কার্পণ্য করেননি সঞ্জীবচন্দ্র। কোলদের বিবাহপদ্ধতিও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্ণনা করেছেন। শুধু তা–ই নয়, হিন্দু মহাজন কর্তৃক কোলদের জীবনের দুর্দশার চিত্র; ঋণ নিয়ে, ঋণগ্রহীতা থেকে দাস বনে যাওয়ার দুর্দশা দেখে মর্মাহত হয়েছিলেন তিনি। তাই তো প্রসঙ্গান্তরে ঋণব্যবস্থা নিয়েও আলোকপাত করেছেন। ১৪৬ বছর আগে বিবাহের আয়োজনে আড়ম্বর করতে গিয়ে ঋণ নিয়ে ঋণী হওয়া এবং ঋণব্যবস্থা নিয়ে যে আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছিলেন আজও তা নদীর মতো প্রবহমান।
‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।’ কোলদের চেহারার বর্ণনা দিতে গিয়ে এই রচনায় বলেছেন সঞ্জীবচন্দ্র। উক্তিটি আজ মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ভাবসম্প্রসারণ থেকে চাকরির নানা পরীক্ষায় ‘উক্তিটি’র বিশ্লেষণ জানতে চাওয়া হয়।
সঞ্জীবচন্দ্র পালামৌ রচনায় প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষেরও জয়গান করেছেন। মানুষ হিসেবে মানুষের অধিকারের কথা তুলে ধরেছেন। যে কারণে যুগ থেকে যুগে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পাঠক ‘পালামৌ’কে আপন করে নিয়েছে। ১৪৬ বছর পরেও ‘পালামৌ’র জৌলুশ কমেনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ল ন প রসঙ গ বল ছ ন কর ছ ন রচন য়
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি দিল র্যাব, চায় সাইবার ইউনিট
অপরাধের ধরন বদলে যাচ্ছে। অভিনব কৌশলে সক্রিয় সাইবার অপরাধীরা। প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলা করা নতুন চ্যালেঞ্জ। এ জন্য স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট চেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার কর্মপরিকল্পনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। সেখানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), র্যাবসহ একাধিক ইউনিট একুশ শতকের জটিল অপরাধ ও তা নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির বিষয়টি সামনে আনে। গতকাল পুলিশের যে ইউনিটগুলো পরিকল্পনা তুলে ধরেছে, তা হলো হাইওয়ে পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), নৌ পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), শিল্প পুলিশ, র্যাব, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট, রেলওয়ে পুলিশ ও সিআইডি।
কীভাবে প্রত্যন্ত এলাকার ভুক্তভোগী র্যাবের সহযোগিতা পেতে পারেন, সে বিষয়টি উপস্থাপন করেন বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান। তিনি দ্রুত গুজব প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থার ওপর জোর দেন। র্যাবের জন্য আলাদা একটি সাইবার ইউনিটের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন। র্যাব জনবান্ধব হওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিজি বলেন, ‘কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও মানবাধিকার বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ র্যাব। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে তদন্ত সেলকে শক্তিশালী করা হয়েছে। একটি মানবাধিকার সেলও গঠন করা হয়েছে।’
রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত সূত্রের মতে, র্যাব ডিজির উপস্থাপনায় মূলত বাহিনীর অর্জনগুলো তুলে ধরা হয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিআইডি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়। সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি (ভারপ্রাপ্ত) গাজী জসীম অনুষ্ঠানে জানান, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী মামলার অনুসন্ধানে সিআইডি বিশেষ টিম গঠন করেছে। সাবেক মন্ত্রী, প্রভাবশালীদের সন্দেহজনক সম্পদের উৎস ও প্রকৃতি নিয়ে নিবিড়ভাবে চলছে তদন্ত। এস আলম, বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, নাবিল, ইউনিক, সিকদার গ্রুপসহ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা ও অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এ সময় প্রায় ৫ হাজার ৮০০ শতাংশ জমি ও হাজার কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ শনাক্ত করা হয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফের একটি মামলায় ১০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
সিআইডির উপস্থাপনায় আরও বলা হয়, ফরেনসিক শাখা দিন দিন অপরাধ বিশ্লেষণের নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। জনবল, সরঞ্জাম এবং অর্থের সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি সিআইডিতে আছে কাঠামোগত ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ। কোনো জেলা ইউনিটে একটিও অপারেশনাল যানবাহন নেই। এ ছাড়া অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অনিয়মিত বদলি আতঙ্ক রয়েছে। সাইবার পুলিশ সেন্টারে রয়েছে সরঞ্জামের অভাব। ফরেনসিক ল্যাবে সফটওয়্যারের জন্য বাজেট-স্বল্পতার কথা তুলে ধরেন তারা।
হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়। মহাসড়কে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে চলমান কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে মহাসড়কের সিসিটিভি থেকে হাইওয়ে পুলিশ ডিজিটাল অটো ফাইন সিস্টেম, ট্রাফিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, ক্লোন নাম্বারপ্লেট শনাক্ত, হাইস্পিড ডিটেকশন করে থাকে।
এর আগে মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পক্ষ থেকে তাদের কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। সেখানে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(২) ধারায় তালিকাভুক্ত ব্যক্তিকে ডিটেনশনে (নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনা বিচারে আটক রাখা) নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সে জন্য তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ডিটেনশনে নেওয়া উচিত। সরকারের অনুমতি পেলে এসবির পক্ষ থেকে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের বিস্তারিত জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে। ডিটেনশনে নেওয়ার জন্য যাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তাদের কেউ কেউ পেশাদার অপরাধী।