বগুড়ায় বিগত সরকারের আমলে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা ‘রাজনৈতিক’ মামলা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপে আদালতে বিচারাধীন ২৪১টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে ৩২৮টি মামলা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন শাখা-১ প্রথম ধাপে ২৪১টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত দিয়ে ৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার গেজেটের চিঠি বগুড়ায় আসে বলে জানিয়েছেন বগুড়া জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল বাছেদ।

পিপি আবদুল বাছেদ প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক ৭৬৬টি মামলা আদালতে এখনো বিচারাধীন। মামলাগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ করে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর অনুবিভাগের উপসলিসিটরের কাছে পাঠানো হয়। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই শেষে মামলা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন শাখা-১ প্রথম ধাপে ২৪১টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে। দ্বিতীয় ধাপে ২০ এপ্রিল সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টার সভাপতিত্বে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে গঠিত কমিটির ১১তম সভায় বগুড়ার আরও ৩২৮টি মামলা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের পর থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত সরকারবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বগুড়ায় বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এক হাজারের বেশি মামলা হয়। এর মধ্যে বেশ কিছু মামলার রায়ে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন নেতা-কর্মীরা। আদালতে বিচারাধীন ছিল ৭৬৬টি মামলা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সদস্যসচিব করে পুলিশ সুপার ও সরকারি কৌঁসুলিকে (পিপি) সদস্য করে একটি কমিটি করা হয়। কমিটি ওই ৭৬৬টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে।

তবে এক–এগারো সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন পর্যন্ত দায়ের হওয়া সব মামলা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনায় প্রত্যাহারের দাবি করেছেন বগুড়ার বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তবে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম ধ প র জন ত ক ব এনপ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কোটি টাকা ছিনতাই করতে সড়কে অপেক্ষায় ছিল দুর্বৃত্তরা: পুলিশ  

রাজধানীর উত্তরায় এক কোটি ১৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত বলে জানিয়েছে পুলিশ। আগে থেকে ব্যাগভর্তি টাকা ছিনতাই করতে সড়কে অপেক্ষায় ছিল দুর্বৃত্তরা। 

পুলিশ জানিয়েছে, টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ছাড়াও প্রযুক্তিগত তদন্ত করছে আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

শনিবার সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর উত্তরার ১২ ও ১৩ নম্বর সড়কের মোড়ে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, দুটি মোটরসাইকেলে থাকা চার আরোহীকে গতিরোধ করে একটি মাইক্রোবাস। র‌্যাবের পোশাক পরিহিত তিনজন মাইক্রোবাস থেকে নেমে আসে। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহীদের দু’জন ভয়ে তাদের কাছে থাকা টাকা ভর্তি দুটি ব্যাগ নিয়ে দৌড় দেন। তাদের পিছু নেয় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা। মোটরসাইকেলের এক আরোহীকে ধরে এনে মাইক্রোবাসে তুলে ১ কোটি ১৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ভুক্তভোগীদের একজন বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উত্তরায় ছিনিয়ে নেওয়া টাকা মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদের এক এজেন্টের।

পুলিশের উত্তরা বিভাগের ডিসি মহিদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, দুটি মোটরসাইকেলে যখন নগদের এজেন্টের লোকজন টাকা নিয়ে ১২ ও ১৩ নম্বর সড়কের সংযোগস্থল অতিক্রম করছিল তখন তাদের ব্যারিকেড দেওয়া হয়। মাইক্রোবাস থেকে নেমে র‌্যাবের পোশাক পরিহিত তিনজন মোটরসাইকেল আরোহীদের গতিরোধ করে। ঘটনাস্থলে আগে থেকে মাইক্রোবাস নিয়ে দুর্বৃত্তরা অপেক্ষা করছিল। এটি পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ক্লু ধরেই তদন্ত চলছে। প্রতিষ্ঠানের ভেতরের কোনো প্লট রয়েছে কি–না সেটিও দেখা হচ্ছে।  

তদন্ত সংশ্লিষ্ট আরেক কর্মকর্তা বলছেন, ছিনতাইকাণ্ডে যে গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে সেটির নম্বর প্লেট ভুয়া ছিল। পেশাদার অপরাধী চক্র, আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স নাকি অন্য কোনো গ্রুপ এর সঙ্গে জড়িত তা বের করার চেষ্টা চলছে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ছুটির দিন সকালে ঘটনাস্থলে দুর্বৃত্তরা আগেভাগে হাজির হয়। এরপর কোটি টাকা ছিনতাই করে ১৭ নম্বর সেক্টর হয়ে তুরাগের দিকে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।   

নগদের ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়ন বলেন, ঈদের ছুটিতে ব্যাংক বন্ধ থাকায় টাকা জমা দেওয়া যায়নি। ছুটির মধ্যে ব্যবসার টাকা আমার বাসায় রাখা ছিল। শনিবার উত্তরার ইসলামী ব্যাংক শাখা বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা ছিল। তাই ব্যাংকে এবং বুথে জমা দেওয়ার জন্য চার কর্মচারীকে দিয়ে ওই টাকা অফিসে পাঠানো হচ্ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ