পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো সিরিজ খেলবে না ভারত
Published: 24th, April 2025 GMT
দীর্ঘ ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মুখোমুখি হয়নি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। সাম্প্রতিক কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর সম্পর্কের সেই বরফ গলার কোনো আশাও দেখা যাচ্ছে না। বরং বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আবারও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নিকট ভবিষ্যতেও পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে না ভারত।
এই বিষয়ে সোজাসাপটা বার্তা দিয়েছেন বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সহ-সভাপতি রাজিব শুক্লা। মঙ্গলবারের ওই সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই আমাদের অবস্থান। আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলি না, কারণ এটা সরকারের নীতিগত অবস্থান।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘ভবিষ্যতেও দ্বিপক্ষীয় সিরিজে পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অবশ্যই আইসিসির ইভেন্টে আমরা খেলি, কারণ এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার নিয়মের অন্তর্ভুক্ত।’
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হয়েছিল ২০১২-১৩ মৌসুমে। সীমিত ওভারের ওই সিরিজেই শেষবার ভারতের মাটিতে খেলেছিল পাকিস্তান। এরপর থেকে দুই দলের দেখা শুধুই আইসিসি ও এশিয়া কাপের মতো টুর্নামেন্টে।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তান ভারতের মাটিতে খেললেও, ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ক্ষেত্রে হাইব্রিড মডেল গ্রহণ করে ভারত। পাকিস্তানে না গিয়ে নিজেদের ম্যাচগুলো খেলেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে, আর সেই আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোহিত শর্মার দল।
মঙ্গলবার কাশ্মীরের পাহাড়ঘেরা উপত্যকা পহেলগামে মর্মান্তিক হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন। অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা পর্যটকদের ওপর গুলি চালায় বলে জানা যায়। ২০১৯ সালের পর কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা এটি।
এই হামলার দায় স্বীকার করে ‘রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামে একটি গোষ্ঠী। তারা দাবি করেছে, অঞ্চলটিতে ৮৫ হাজার বহিরাগত বসতির প্রতিবাদে এই হামলা চালানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব স স আই
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’
নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।