নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে যড়যন্ত্রের অভিযোগে ঢাকার শাহবাগ থানায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ পাঁচ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১৪ এর বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে খালাসের রায় দেন। 

খালাস পাওয়া অপর আসামিরা হলেন-ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমী, মো.

রফিকুল ইসলাম নয়ন, হাবিবুর রহমান হাবিব ও রবিউল ইসলাম রবি৷ 

খালাসের পর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “মুক্ত বিচার বিভাগ, স্বাধীন বিচার বিভাগ চাই। যেটার জন্য আমরা ১৫/১৬ বছর লড়েছি। বিচারের নামে যে প্রহসনে লাখ লাখ মানুষ আজ নিঃস্ব হয়ে গেছে, জীবন হারিয়েছে, জেলে চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে, পুলিশ কাস্টডিতে মারা গেছে, এর ক্ষতিপূরণ কে দেবে। বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা ছাড়া একটি দেশের গণতন্ত্র টিকতে পারে না।”

বিচার বিভাগের স্বাধীন সচিবালয় গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, “এটা তো আমাদের প্রোপোজাল। এখন যদি এটা বাস্তবায়ন না হয়, আমাদের সময় আমরা বাস্তবায়ন করবো। অবশ্যই করবো।”

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই বাসচাপায় ঢাকার শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হন। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নামে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছাত্র আন্দোলনের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমীর খসরুর একটি কথিত ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়ে। এতে ছাত্র আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার দাবি তুলে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানায় মামলা করেন ডিবি পুলিশের তৎকালীন পল্লবী জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক মো. শামীম আহমেদ।

মামলায় আমির খসরু ও ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করা হয়। ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে তখনকার ছাত্র আন্দোলনে উস্কানির জন্য তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি করা হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মো. আনিসুর রহমান। ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু আদেশ দেন আদালত।

ঢাকা/এম/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পতন চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে গ্লাসগোগামী একটি ফ্লাইটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি লন্ডনের কাছে বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরের বাসিন্দা।

অভয় নায়েক ইজিজেট ফ্লাইটে হামলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার মতো আচরণ করেছেন। তিনি উড়োজাহাজে বোমা ফাটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি মাঝ আকাশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে চিৎকার করেছিলেন, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

ওই ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, অভয় নায়েক স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমেরিকার পতন হোক’, ‘ট্রাম্পের পতন হোক’। এরপরই তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ (যার অর্থ ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’) বলে স্লোগান দেন। পরে দুজন ব্যক্তি তাঁকে কাবু করে উড়োজাহাজের মেঝেতে ফেলে দেন।

ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি কোন ধর্মের অনুসারী, সে ব্যাপারে তাৎক্ষিণক কিছু জানা যায়নি।

ওই ব্যক্তির এমন আচরণের পর পাইলটরা বাধ্য হয়ে গ্লাসগোতে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানেই স্কটিশ পুলিশ এসে অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করে।

স্কটল্যান্ডের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গ্লাসগোতে পৌঁছানো ইজিজেটের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ঘটনাটি এককভাবে ওই ব্যক্তির, অন্য কেউ জড়িত নন। যেসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে, সেগুলো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’

উড়োজাহাজ অবতরণের পরই অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

ইজিজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেপরোয়া আচরণের কারণে একজন যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।’

পাইসলি শেরিফ আদালতে হাজিরার সময় অভয় নায়েক কোনো বক্তব্য দেননি। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ