তিনি বিশ্বব্যাপী নজিরবিহীন শুল্ক যুদ্ধ শুরু করেছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশী ত্রাণ সহায়তা হার কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি ন্যাটো মিত্রদের অবমাননা করেছেন এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ সম্পর্কে রাশিয়ার বক্তব্যকে গ্রহণ করেছেন। তিনি গ্রিনল্যান্ডকে সংযুক্ত করার, পানামা খাল পুনরুদ্ধার করার এবং কানাডাকে ৫১তম রাষ্ট্রে পরিণত করার কথা বলেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিশৃঙ্খল প্রথম ১০০ দিনে অপ্রত্যাশিত প্রচারণা চালিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে ওয়াশিংটন যে নিয়মভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল তার কিছু অংশকে এর মাধ্যমে ট্রাম্প উল্টে দিয়েছেন।

ম্পের প্রথম মেয়াদে ইরান ও ভেনেজুয়েলায় মার্কিন বিশেষ দূত নিযুক্ত হওয়ার আগে রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রিগ্যান এবং জর্জ ডব্লিউ বুশের অধীনে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এলিয়ট আব্রামস।

তিনি বলেন, “আট বছর আগের তুলনায় ট্রাম্প এখন অনেক বেশি উগ্র। আমি অবাক হয়েছি।”

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডা বন্ধুদের বিচ্ছিন্ন করেছে, প্রতিপক্ষদের উৎসাহিত করেছে এবং তিনি কতটা এগিয়ে যেতে প্রস্তুত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তার কর্মকাণ্ড অনিশ্চয়তার সাথে মিলিত হয়ে কিছু সরকারকে এতটাই অস্থির করে তুলেছে যে তারা এমনভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে যা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা কঠিন হতে পারে। এমনকি ২০২৮ সালে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেও তা কঠিন হবে।”

বিদেশি রাষ্ট্র নিয়ে ট্রাম্প যখন এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন তখন দেশে তার পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা করছেন ডেমোক্রেটরা। তার এসব পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের পতনের লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে বিচারকদের উপর মৌখিক আক্রমণ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে চাপ প্রচারণা এবং বৃহত্তর নির্বাসন অভিযানের অংশ হিসাবে অভিবাসীদের কুখ্যাত এল সালভাদর কারাগারে স্থানান্তর।

ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান প্রশাসনের সাবেক মধ্যপ্রাচ্য আলোচক ডেনিস রস বলেছেন, “আমরা যা দেখছি তা বৈশ্বিক সম্পর্ক বিষয়ে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। এই মুহুর্তে কেউ নিশ্চিত নয় যে কী ঘটছে বা পরবর্তীতে কী হবে।”

বর্তমান ও সাবেক প্রায় এক ডজন সরকারি কর্মকর্তা, বিদেশী কূটনীতিক এবং স্বাধীন বিশ্লেষক রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই যে ক্ষতি হয়েছে তার কিছু প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তবে ট্রাম্প যদি তার দৃষ্টিভঙ্গি নরম করেন তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নাও যেতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই কিছু বিষয়ে পিছু হটেছেন, যার মধ্যে রয়েছে তার শুল্কের সময়সীমা এবং মাত্রা।

কিন্তু তারা ট্রাম্পের নাটকীয় পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুব কমই দেখছেন। বরং আশা করছেন যে অনেক দেশ ট্রাম্পের অনিয়মিত নীতি নির্ধারণ থেকে রক্ষা পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্থায়ী পরিবর্তন আনবে। ইতিমধ্যেই এটি শুরু হয়ে গেছে।

উদাহরণস্বরূপ, কিছু ইউরোপীয় মিত্র মার্কিন অস্ত্রের উপর নির্ভরতা কমাতে তাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্রাগার তৈরি নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়েছে। এছাড়া জল্পনা বেড়েছে যে অবনতিশীল সম্পর্কের ফলে মার্কিন অংশীদাররা চীনের কাছাকাছি যেতে পারে, অন্তত অর্থনৈতিকভাবে।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সেই আছিয়ার পরিবারকে গরু ও ঘর দিল জামায়াত

মাগুরায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আলোচিত শিশু আছিয়ার পরিবারকে দুটি গরু ও একটি গোয়ালঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে আছিয়ার পরিবারকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হস্তান্তর করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।

এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এম বি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিনসহ স্থানীয় এবং জেলা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

গত ১৫ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আছিয়ার বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত বিচার চান। সে সময় আছিয়ার পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জামায়াতের আমির। 

আট বয়সী আছিয়া মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর ৮ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।

ঢাকা/শাহীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ