হেয়ার স্টাইলে পরিবর্তন এনেছেন বার্সেলোনার ১৭ বছর বয়সী সেনসেশন লামিনে ইয়ামাল। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে কোপা দেল রে ম্যাচের আগে বাদামি রঙয়ে চুল সাজান তিনি। মঙ্গলবার ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচের আগে বার্সা তরুণ জানান, ঘরে বসে বিরক্ত লাগায় চুলে রঙ করেছেন তিনি।

প্রথমবার বার্সার প্রেস কনফারেন্সে হাজির হন ইয়ামাল। ১৭ বছর বয়সী তারকার আগমণে প্রেস কনফারেন্স কক্ষ পুরোপুরি ভরাট ছিল। সেখানে একের পর এক প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ইয়ামাল। কখনো চাপ নিয়ে কথা বলেছেন, কখনো মেসির সঙ্গে তুলনা নিয়ে তো আবার শততম ম্যাচ নিয়ে। মন খুলে উত্তরও দিয়েছেন তিনি।

এই যেমন চুলের রঙ নিয়ে বলেছেন, ‘আমি এটা মজা করে করেছি। ঘরে বসে বিরক্ত লাগে। সেজন্য।’ নতুন চুলের স্টাইল করে হেয়ার ড্রায়ারে চুল শুকিয়ে নাকি ভালোই সময় যাচ্ছে তার। বয়স নিয়ে প্রশ্নে বলেন, ‘ফুটবলে কোন বয়স হয় না। এখানে কোয়ালিটি মূল বিষয়, প্রস্তুত থাকলে খেলতে মানা কোথায়। আমাদের দলটা তরুণ এবং আমরা শীর্ষ পর্যায়ে দারুণ খেলছি।’

লামিনে এখনো বেড়ে ওঠার পর্যায়ে আছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমি জিতছি, আমাকে নিয়ে কেউ টু শব্দ করতে পারবে না। যখন হারাবে তখন বলবে।’ সেমিতে প্রতিপক্ষ হিসেবে ইন্টার মিলান কেমন এমন প্রশ্নে বলেন, ‘তারা রক্ষণে খুবই শক্তিশালী। এটাই তাদের সেরা অস্ত্র এবং তারা কাউন্টার অ্যাটাকে বেশ ভালো। তারা খুব ভালো দল, তাদের হারাতে হলে আমরা যেটা এখন পর্যন্ত করে এসেছি সেটাই করতে হবে। তাদের তিন হার কোন সমস্যা করবে না। কারণ এটা ভিন্ন ম্যাচ।’

বার্সার জার্সিতে শততম ম্যাচ খেলতে নামবেন ইয়ামাল। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ধারাবাহিক, ১৭ বছর বয়সে খেলছি, যেটা সকলে পারে না। আমি মেসি বা অন্য কারোর সঙ্গে নিজের তুলনা করতে চাই না। সেটা আমি আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। আমি শুধু প্রতিদিন উন্নতি করতে চাই। মেসির সঙ্গে তুলনার তো প্রশ্নই আসে না। আমি তাকে ইতিহাসের সেরা মনে করি।’

ইন্টার মিলানের বিপক্ষে মেসি কোন গোল করতে পারেননি এমন প্রশ্নে ইয়ামাল জানান, ইন্টারের সঙ্গে না পারলেও অনেক ক্লাবের সঙ্গে অনেক গোল মেসি করেছেন। ক্যারিয়ারের প্রথম সেমিফাইনাল নিয়ে ১৭ বছরের এই বিস্ময় বালক বলেন বহু আগেই চাপ ছেড়ে এসেছেন তিনি, ‘আমি চাপে নেই, এটা আমি বহু আগে মাতেরো পার্কে ফেলে এসেছি। কোপা দেল রে’র ফাইনাল আমি কেবল উপভোগ করেছি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ১৭ বছর ইন ট র

এছাড়াও পড়ুন:

শততম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে চান ইয়ামাল

জুলাইয়ে পা দেবেন আঠারোতে, ড্রাইভিং লাইসেন্সটাও পেয়ে যাবেন তখন। এর আগেই ফুটবলে যে অনেক কিছু পেয়ে গেছেন বার্সার স্প্যানিশ উইঙ্গার লামিনে ইয়ামাল। আজ ঘরের মাঠে বার্সার জার্সিতে নিজের শততম ম্যাচ খেলতে নামছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বার্সার প্রতিপক্ষ ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলান। তাই গতকাল ইয়ামালকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। সেখানে মন খুলে অনেক কথা বলেন ইয়ামাল। জানিয়ে দেন প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল খেলার উত্তেজনা তাঁর মতো দলের অনেকের মধ্যে কাজ করছে। 

মেসি-পরবর্তী সময়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে আর খেলা হয়নি বার্সার। পেদ্রি-ইয়ামালদের দিয়ে সেই অপূর্ণতা কাটানোর দারুণ সম্ভাবনা এখন দলটির সামনে। এস্তাদিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামে মাইলফলকের ম্যাচটি জিতে স্মরণীয় করে রাখতে চান ইয়ামাল। ‘আমি নিজেকে কারও সঙ্গে তুলনা করি না, এমনকি মেসির সঙ্গেও নয়। এটা আমি আপনাদের ওপরই ছেড়ে দিলাম। আমি শুধু খেলাটা উপভোগ করতে চাই আর নিজের মতো করে পথে চলতে চাই। মেসির সঙ্গে আমার কথাও হয় না।’ 

সংবাদ সম্মলনে কেউ একজন মনে করিয়ে দেন মেসি তাঁর ক্যারিয়ারে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে কখনও গোল করতে পারেননি। তথ্যটি জানা ছিল না ইয়ামালের। ‘যেখানে সব দলের বিপক্ষে গোল করেছেন তিনি, সেখানে আমি নিশ্চিত তিনি হয়তো গোল করতে ভুলে গিয়েছিলেন। আশা করছি, আমি সেটি করতে পারব।’ হেসে মাতিয়ে দেন পুরো সংবাদ সম্মেলন।

কোপা দেলরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মাত্র তিন দিনের বিরতি পায় বার্সা। এর মধ্যে পুরো দলকে ফের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের জন্য তৈরি করার একটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের মধ্যে। তবে ম্যাচটি হচ্ছে ঘরের মাঠে, যেখানে বার্সার ইতিহাসে তারা ইন্টারের বিপক্ষে এ পর্যন্ত ছয়বার মুখোমুখি হয়ে কখনও হারেনি। সেই রেকর্ড প্রেরণা দেবে কাতালানদের। এই ম্যাচেও দলের গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাইকার লেভানডস্কিকে পাচ্ছে না বার্সা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইন্টার এবার নাম করছে তাদের কোচ ইনজাঘির ৩-৫-২ ফরমেশনের জন্য। যেখানে তাদের রক্ষণ লোহার দরজার মতো শক্ত! বাস্তোনি, একার্ভি, পাভার্ডদের এই রক্ষণ জার্মান ক্লাব বায়ার্নের গতি আটকে দিয়েছিল। সেখানে গোল করতে হলে বক্সের সামনে তিকিতাকার মতো পাসিং, কিংবা জায়গা বের করে গোলপোস্টের কাছে যাওয়াটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এ ধরনের দলের বিপক্ষে ক্রস পাসিংয়ে হেড থেকে গোল করার সম্ভাবনা তৈরি করে নিতে হয়। সেখানে লেভানডস্কিকে নিশ্চিতভাবে মিস করবেন ফ্লিক। 

বার্সার মাঠে এসে ম্যাচটি ড্র করতে পারলেও ইন্টার মিলান এক প্রকার এগিয়ে থাকবে। সেখানে তাদের কাউন্টার অ্যাটাকের জন্য লাওতারো মার্টিনেজ আর নিকোলো বারেলা রয়েছেন। তবে ইন্টারের এই রক্ষণভাগকে প্রশংসা করে ইয়ামাল জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরাও তৈরি আছেন। ‘ইন্টারের খেলা দেখতে আমার বেশ ভালো লাগে। তাদের লাওতারো, বারেলার মতো খেলোয়াড় রয়েছেন। যারা জানেন, কীভাবে ভালো খেলতে হয়। তবে আমরাও তৈরি আছি।’ 

পেদ্রি আর ডি জং আজও বার্সার মাঝমাঠের প্রাণ হয়ে থাকবেন। আক্রমণভাগে তোরেস, রাফিনিয়াহ আর ইয়ামালতো আছেনই। এ বছর ২৮ ম্যাচের মাত্র একটিতে হেরেছে তারা। গোল করেছে ৮৩টি। তাহলে কি বার্সার সেই ‘মেসি যুগ’-এর মতো এই দলে এখন ‘ইয়ামাল যুগ’ চলছে বলা যায়, ইয়ামালের কাছেই এটি জানতে চেয়েছিলেন এক সাংবাদিক। ‘আমি মনে করি এটি বার্সা যুগ, ইয়ামাল যুগ নয়। আসলে আমার মতো এই বয়সে বার্সার হয়ে এতোগুলো ম্যাচ খেলার সুযোগ অনেকে খুব কমই পেয়েছে, সে হিসেবে আমি ভাগ্যবান। আসলে ফুটবলে কোনো বয়স হয় না। এটি এমন ধরনের খেলা, যার গুণমানই শেষ কথা। বয়স এখানে শুধু সংখ্যা।’ 

ইয়ামাল যেমন নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন, তেমনি বার্সাও তাঁকে আশীর্বাদ হিসেবে মনে করতে পারে। ইয়ামাল ৯৯ ম্যাচ খেলে ২১ গোলের পাশাপাশি ৩৩টিতে অ্যাসিস্ট করেছেন, ৭১ ম্যাচে জয় আর ১৩টি ড্র করেছেন এ সময়ে। হারের স্বাদ পেয়েছেন মাত্র ১৫টিতে। তাই বার্সেলোনা শহরে বৈদ্যুতিক সমস্যা (পাওয়ার কাট) থাকলেও মাঠে ইয়ামালের আলোতে তারা আলোকিত হতে চান। লক্ষ্য যে তাদের মিউনিখের ফাইনালে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শততম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে চান ইয়ামাল