শ্রমজীবী মানুষের জীবনসংগ্রাম নিয়ে টেরাকোটার রঙ্গোত্তর প্রদর্শনী
Published: 1st, May 2025 GMT
শিল্পকলাকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে মহান মে দিবসে দিনব্যাপী এক বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হলো রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে। চিত্রকলা, আলোকচিত্র, ডিজিটাল মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষের জীবনসংগ্রামকে তুলে ধরা হয়েছিল এই প্রদর্শনীতে।
মে দিবস উপলক্ষে শিল্পী ও চিন্তকদের সৃজনশীল ভাবনা বিকাশের সংগঠন টেরাকোটা ক্রিয়েটিভস এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে। তারা ২০১৭ সাল থেকে মে দিবসে শ্রমজীবী মানুষদের নিয়ে উন্মুক্ত পরিসরে দিনব্যাপী রঙ্গোত্তর শিল্প প্রদর্শনী নামের এই আয়োজন করে আসছে।
আজ ১ মে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শুরু হয় দিনব্যাপী রঙ্গোত্তর শিল্প প্রদর্শনী। এবার প্রদর্শনীতে দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের ৬৪ জন শিল্পীর বিভিন্ন মাধ্যমের ৯০টি শিল্পকর্ম এতে প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া ছিল পারফরম্যান্স আর্ট।
টেরাকোটার যাত্রা শুরু ২০১২ সালে। ‘শিল্পের মাধ্যমে শান্তির প্রচার’—এই লক্ষ্য নিয়ে চারুশিল্প, আলোকচিত্র, লেখালেখিসহ বিভিন্ন সৃজনশীল মাধ্যমের শিল্পীরা এই সংগঠনে কাজ করে যাচ্ছেন।
এবারের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী চারুশিল্পীদের মধ্যে ছিলেন এ এফ এম মনিরুজ্জামান, অমিতাভ সরকার, অমিয় শংকর দাস, অপূর্ব দাস, আসাদুজ্জামান, আশিকুল ইসলাম, জাহিদ জামিলসহ অনেকে। আলোকচিত্রীদের মধ্যে ছিলেন হাসান সাইফুদ্দিন চন্দন, পল ডেভিড বারিকদার, মৃত্তিকা কামাল, দেবাশীষ মণ্ডল, সাবিনা ইয়াসমিন প্রমুখ।
আরও ছিল মোরশেদ মিশু, রাগীব এখওয়ান ও সাদবিন হোসেনের ডিজিটাল আর্ট।
পারফরম্যান্স আর্টে ছিলেন উম্মে হাবিবা, তারেক শুভ, মাখনুন জান্নাত ও হোসাইন জীবন। প্রদর্শনী চলে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রদর শ
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।