কার্লো আনচেলত্তির পিছু ছোটা থেকে এখনো সরে আসেনি ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন জানিয়েছে, এই ইতালিয়ান কোচের জন্য গতকাল অপেক্ষা করার সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিএফ। লা লিগার শিরোপা দৌড়ে রিয়াল মাদ্রিদের ভাগ্য নির্ধারিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় সিবিএফ।

ব্রাজিল জাতীয় দলে কোচের দায়িত্ব আনচেলত্তির হাতে তুলে দিতে অনেক দিন ধরেই তাঁর পিছু ছুটছে সিবিএফ। কয়েক দিন আগেও জানা গিয়েছিল, রিয়াল মাদ্রিদ কোচের দায়িত্ব ছেড়ে জুনে ব্রাজিলের দায়িত্ব নেবেন আনচেলত্তি। কিন্তু এরপরই ভেসে আসে নেতিবাচক খবর। আনচেলত্তির সিবিএফকে মৌখিক সম্মতি দেওয়ার খবর জানার পর কঠোর হয়ে ওঠেন রিয়ালের বোর্ড পরিচালকেরা।

আরও পড়ুনব্রাজিলের কোচ হচ্ছেন না আনচেলত্তি, কেন ভেস্তে গেল আলোচনা৩০ এপ্রিল ২০২৫

২০২৬ সালের জুনে রিয়ালে আনচেলত্তির বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে এবং তিনি যেহেতু তার আগেই চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ কারণে তাঁর বর্তমান চুক্তির বাকি সময়ের অর্থ পরিশোধ করতে রাজি হয়নি মাদ্রিদের ক্লাবটি। ইএসপিএনও জানিয়েছিল, চুক্তির বাকি সময়ের অর্থ রিয়াল দিতে রাজি না হওয়ায় আনচেলত্তির ব্রাজিল যাত্রা থমকে যায়। কিন্তু গতকাল রাতে ইএসপিএনের খবর অনুযায়ী, আনচেলত্তির ব্রাজিলের কোচ হওয়ার পথ এখনো রুদ্ধ হয়ে যায়নি।

লা লিগায় ৩৩ ম্যাচে ৭৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে ৭২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রিয়াল। ১১ মে লিগের শেষ ক্লাসিকোয় মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। দুই দলই লিগে আর পাঁচটি করে ম্যাচ খেলবে। লা লিগায় রিয়াল নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে ২৪ অথবা ২৫ মে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে।

আরও পড়ুনপ্রিমিয়ার লিগে ‘বাতিল’ ইউনাইটেড–টটেনহামই এখন ইউরোপে ফাইনালের পথে২৯ মিনিট আগে

ইএসপিএনকে সূত্র জানিয়েছে, আনচেলত্তি যে সময়ে এবং যেভাবে ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে অসন্তুষ্ট হয়েছে রিয়াল। ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার আগে এই সমস্যাটা তাঁকে সমাধান করতে হবে।

২৬ মে এর মধ্যে নতুন কোচ নিয়োগ দিতে চায় সিবিএফ। জুনে ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ সামনে রেখে সেদিন ব্রাজিলের স্কোয়াড ঘোষণা করা হবে। ইএসপিএন চলতি সপ্তাহের শুরুতে জানিয়েছিল, আনচেলত্তি ও রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ এ বিষয়ে আলোচনায় বসবেন।

সিবিএফ সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেজ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব এফ

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা

ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।

ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।

ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।

গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে।  এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। 

হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার  বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ