ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে কংগ্রেস নেতা–নেত্রীদের অভিমত শোনার সুযোগ দেওয়া হলো। দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউর বিশেষ আদালতের বিচারপতি আজ শুক্রবার এই কারণে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীসহ অন্য অভিযুক্তদের নোটিশ দিয়েছেন।

এই নেতা–নেত্রীদের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রের অর্থ ও সম্পত্তি বেআইনিভাবে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) মামলা করেছে। অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইনে (পিএমএলএ) দায়ের হওয়া ওই মামলায় সোনিয়া, রাহুলসহ অন্যান্য কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে ইডি ইতিমধ্যেই অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।

বিশেষ আদালত ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ২২৩ ধারায় সোনিয়া–রাহুলদের ওই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৮ মে।

বিশেষ আদালতের বিচারপতি বিশাল গোগনে ওই নোটিশ জারি করে বলেন, মামলাটি আদালতের বিচারাধীন। অভিযোগপত্র দাখিলের পর তা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনা প্রয়োজন। সেই অধিকার আইন তাঁদের দিয়েছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থেই ওই অধিকার দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই অধিকার পিএমএলএ আইনের বিধানের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ নয়।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই ওই মামলার বিরোধিতা করা হচ্ছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, ন্যাশনাল হেরাল্ড কাগজ কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেছিল। কংগ্রেস তা চালাতে টাকা খরচ করেছিল। কংগ্রেসের তরফে অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (এজেএল) সংস্থা ওই কাগজ চালাত।

কংগ্রেস বলছে, পরবর্তী সময়ে ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থা এজেএল অধিগ্রহণ করে। ইয়ং ইন্ডিয়ান কোনো লাভজনক সংস্থা নয়, যা ছিল কংগ্রেসের, পরবর্তী সময়েও তা কংগ্রেসেরই আছে। একটি টাকাও হস্তান্তর হয়নি।

এই মামলা করেছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেস রাজনৈতিক দল। তাই তারা কোনো বাণিজ্যিক সংস্থাকে ঋণ দিতে পারে না। কিন্তু কংগ্রেস ঋণ দিয়েছিল এজেএলকে। এবং ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থা খুলে সেই সংস্থা অধিগ্রহণ করে নেয়। ইডি ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল হেরাল্ডের দিল্লি, মুম্বাই ও পাটনার স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, “জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রধান অংশীদার ও পরীক্ষিত বন্ধু। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)-এর মাধ্যমে দেশটি বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে আসছে। আগামী দিনে বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে।”

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত Saida Shinichi-এর সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃষি খাতে সহযোগিতা বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, ২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামাতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’তে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, কৃষি বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যু সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “জাপান বাংলাদেশের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।” 

উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামা'তে ‘আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’ অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক এ এক্সপো'তে বাংলাদেশকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ।”

উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আর জাপান কৃষি খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারী দেশ। তাই জাপান বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা করতে পারে।” 

তিনি বলেন, “জাপান বাংলাদেশের কৃষি পণ্য সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার স্থাপন ও কুলিং ভ্যান সরবরাহ করে সহযোগিতা করতে পারে। তাছাড়া জাপান আমাদেরকে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সহায়তা করতে পারে।” 

তিনি এসময় রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “কৃষি বিষয়ক দু'দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সর্বশেষ সভা ২০২৪ সালের মে মাসে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দ্রুত এ সংক্রান্ত পরবর্তী সভা আয়োজন করা দরকার।” 

উপদেষ্টা জানান, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা এ বছরের অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সভা আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “বর্তমানে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। তবে এটির আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে এবং আমরা এ ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছি।” 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো সুযোগ নেই, বরং দিন দিন এটির উন্নতি ঘটবে বলে আমি আশা করছি।”

পুলিশের সামর্থ্য ও গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতির তুলনায় বর্তমানে পুলিশের সামর্থ্য, মনোবল ও বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি বেড়েছে।” 

তিনি এসময় আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জাপানের সহায়তা কামনা করেন। তাছাড়া তিনি নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডকে পেট্রোল ভেসেল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগিতা এবং অধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে জাপানে উন্নত প্রশিক্ষণে প্রেরণের জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন। 

রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী ইন্টারপোল নির্বাচনে নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে জাপানের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রদান করা হবে। উপদেষ্টা এ পদে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনিয়া-রাহুলকে আদালতের নোটিশ
  • ১৬ বছর গণমাধ্যমের ভূমিকা মূল্যায়নে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হবে
  • ইসির বক্তব্য একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে
  • আইফোনের যেসব মডেলে ব্যবহার করা যাবে না হোয়াটসঅ্যাপ
  • সরকার প্রকৃতই বৈষম্যবিরোধী হলে মে মাসেই ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা উচিত: মুজাহিদুল ইসলাম
  • মালাইকার বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  • ‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
  • একটি টাইম স্কেল-সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তদের দুটি উচ্চতর গ্রেড পেতে আইনি বাধা কাটল
  • আট অঞ্চলে বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত