নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন, কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদন এবং জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন বাতিলের দাবি জানিয়েছে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন। একই সঙ্গে পুরুষের অধিকার রক্ষায় পুরুষ সুরক্ষা কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। এতে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা নারীবিষয়ক কমিশন বাতিল চেয়ে বক্তব্য দেন।

সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষ এবং পুরুষ অধিকারকর্মীদের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নতুন করে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। পাশাপাশি অবিলম্বে পুরুষ সুরক্ষা কমিশনও গঠন করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল কারীম আবরার বলেন, ‘এই কমিশন গুটিকয় মানুষের ব্যক্তিগত মতবাদ এ দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। অবিলম্বে এ কমিশন বাতিল করতে হবে।’ তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কোনো কমিশন গঠিত হলে তা যেন এ দেশের মানুষের ধর্মীয় আবেগকে গুরুত্ব দেয়, সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্টা বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন শুধু ইসলাম ধর্মবিরোধী নয়, একই সঙ্গে এটি খ্রিষ্টান ধর্মসহ যেকোনো ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেবে।

অ্যালবার্ট পি কস্টা বলেন, যেকোনো ধর্মের মানুষের পারিবারিক রীতিনীতি তার নিজ ধর্মের নিয়ম অনুসারে হবে, এটাই স্বাভাবিক। শত শত বছর থেকে তা হয়ে আসছে। কিন্তু হঠাৎ করে কেউ এসে এই নিয়ম বদলে সিভিল ল করবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, এই কমিশনের প্রতিবেদনে পুরুষকে নারীর প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল বলেন, ‘নারীর কাঁধে বন্দুক রেখে এরা (নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন) মূলত এ দেশের মানুষকে ধর্মহীন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কমিশনের প্রতিবেদনে হিন্দু সম্প্রদায়ের আইনের পরিবর্তে সিভিল ল তৈরির প্রস্তাব করেছে। আমরা তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি।’

কমিশনের উদ্দেশে প্রদীপ কুমার পাল আরও বলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের পারিবারিক আইন কেমন হবে, তা এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ঠিক করবে। আপনাদের এটা ঠিক করার কোনো এখতিয়ার নেই।’

এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম বলেন, ‘আমরা মনে করি, মূলত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ধর্মবিদ্বেষী, পুরুষবিদ্বেষী ও পশ্চিমাদের অন্ধ অনুসারী নারীবাদী শ্রোণিদের নিয়ে গঠিত। তারা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক মূল্যবোধ ও পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’

সভাপতির বক্তব্যে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের আইন উপদেষ্টা কাউসার হোসাইন বলেন, এই প্রতিবেদন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তো বটেই, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ও নৈতিকতার সঙ্গেও বৈসাদৃশ্যপূর্ণ।

আরও পড়ুননারীবিষয়ক কমিশন বাতিলসহ সব দাবি না মানলে দেশ অচলের হুঁশিয়ারি হেফাজতের৪ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপসহ ৫ সুপারিশ

‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ দ্রুত জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ ৫ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন।

আরো পড়ুন:

ফেব্রুয়ারিতেই মহোৎসবে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

বেড়ায় রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা

অ্যাসোসিয়েশনের সুপারিশগুলো হলো
১. নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা।
২. প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদন, নতুন পদসৃজন, আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সরবরাহ নিশ্চিতকরণ।
৩. জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর।
৪. আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন ভবনে সব কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন।
৫. নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫ আয়োজনে প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কমিটি গঠন।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘স্বৈরাচারের পতন হলেও ষড়যন্ত্রের অবসান হয়নি’
  • ছাত্রদলের আবেদনের পর মনোনয়নপত্র নেওয়ার সময় বাড়ল
  • গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন হাসিবুল, জানালেন ফেসবুক পোস্টে
  • ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপসহ ৫ সুপারিশ
  • কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
  • নানা আয়োজনে পিপিডিএসের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন
  • ‘ডিসকর্ড’ অ্যাপে আন্দোলনের সূচনা, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতাদেরও বাছাই করছেন সেই তরুণেরা