বৈশ্বিক রেটিং এজেন্সি মুডিস বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলবে। এছাড়া সরকারের চলমান রাজস্ব একত্রীকরণকে ব্যাহত করবে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে বাধাগ্রস্ত করবে। খবর দ্য ডনের 

মুডিস বলছে, উত্তেজনার ধারাবাহিক বৃদ্ধি বহির্বিশ্ব থেকে পাকিস্তানে বিনিয়োগের বিষয়টিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এর ফলে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে, যা আগামী কয়েক বছরের জন্য বিদেশি ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন, সে চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হবে।  

মুডিস আরও বলেছে, সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। খোদ পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এক বিবৃতিতে এই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেকোনো মুহূর্তে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।’ 

মুডিস এই বিষয়কে সূত্র ধরে বলেছে, চলমান উত্তেজনার মধ্যে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এতটাই তলানিতে পৌঁছেছে যে ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করতেও পিছপা হয়নি। এর ফলে পাকিস্তানে পানির সরবরাহ মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে।  

অন্যদিকে এই পরিস্থিতিতে ভারতের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছে মুডিস। এজেন্সিটি বলছে, ‘সীমান্তে ধারাবাহিক উত্তেজনা বৃদ্ধির পরিস্থিতিতেও আমরা ভারতের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের বিঘ্ন আশা করি না। কারণ পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের তেমন কোনো অর্থনৈতিক সম্পর্ক নেই।’ 

মুডিসের আশঙ্কা, প্রতিবেশী এই দুটি দেশ স্বাধীনতার পর থেকে এমন একাধিক উত্তেজনায় জড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটবে। তবে এটি ‘ব্যাপক সামরিক সংঘাতে’ পরিণত হবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রব দ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে এখনই পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যাতে দেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে যেতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন সময় এসেছে বাংলাদেশকে গুরুত্বসহকারে বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানি বিবেচনা করার, যার মধ্যে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন অন্যতম।’

গত বৃহস্পতিবার রাতে অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ এবং তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না।

কার্ল পেজ তাঁর বক্তব্যে নতুন প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি ও হাইব্রিড সিস্টেমের সাম্প্রতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এসব প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্য, শূন্য-কার্বন বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। বিশেষ করে ভাসমান বা বার্জ-মাউন্টেড রিঅ্যাক্টর তুলনামূলকভাবে কম খরচে, কম রক্ষণাবেক্ষণে, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প খাতের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করতে পারবে।’

পেজ আরও বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তি আজ আর বিশ্বব্যাংকের মতো বড় উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থাগুলোর কাছে নিষিদ্ধ বিষয় নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ ইতিমধ্যেই তাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে এ প্রযুক্তি গ্রহণ করছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, উদ্ভাবনে বাংলাদেশের শক্তিশালী রেকর্ড রয়েছে, তাই দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে পারে। এর সুফল হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা এবং শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।

পেজ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র এবং পারমাণবিক উদ্ভাবনে শান্তিপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতি প্রণয়ন করেছে, যাতে সৌর জ্বালানির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

তবে তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিকল্প নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কঠোর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই অপরিহার্য।

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এসব সুযোগ অনুসন্ধান করব। তবে প্রতিশ্রুতিশীল এসব প্রযুক্তি নিয়ে গভীর গবেষণা দরকার। কোনো সন্দেহ নেই—বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা দ্রুত হ্রাস করতেই হবে।’

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সরকারের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা