শেহবাজকে যুদ্ধের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানালো পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা
Published: 6th, May 2025 GMT
ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি সম্পর্কে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে অবহিত করেছে দেশটির সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) এর সদর দপ্তর পরিদর্শন করলে তাকে বিষয়টি অবহিত করা হয় বলে জানিয়েছে ডন অনলাইন।
ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় গত সপ্তাহে ২৬ জন নিহত হয়। এ ঘটনার জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করছে ভারত। হামলার পর পাকিস্তান ভারতের সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা করার কথা বলার প্রায় এক সপ্তাহ পরে আইএসআই সদর দপ্তরে গেলেন শেহবাজ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই সফরে বিদ্যমান নিরাপত্তা পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্রিফিং করা হয়েছিল, বিশেষ করে পাকিস্তানের পূর্ব সীমান্তে ভারতের ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক এবং উস্কানিমূলক অবস্থানের আলোকে প্রচলিত হুমকির জন্য প্রস্তুতির উপর জোর দেওয়া হয়েছিল।”
এতে বলা হয়েছে, “নেতৃত্বকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা উন্নয়ন ও প্রচলিত সামরিক বিকল্প, হাইব্রিড যুদ্ধ কৌশল এবং সন্ত্রাসী প্রক্সি সহ ক্রমবর্ধমান হুমকির গোপন তথ্য সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল।”
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছিলেন উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এবং সেনাবাহিনীর প্রধান।
অনুষ্ঠানে প্রকাশিত একটি গ্রুপ ছবিতে দেখা গেছে, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আসিম মুনির, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ এবং এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর - সফরকারী দলের অংশ ছিলেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে এখনই পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যাতে দেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে যেতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন সময় এসেছে বাংলাদেশকে গুরুত্বসহকারে বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানি বিবেচনা করার, যার মধ্যে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন অন্যতম।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ এবং তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না।
কার্ল পেজ তাঁর বক্তব্যে নতুন প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি ও হাইব্রিড সিস্টেমের সাম্প্রতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এসব প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্য, শূন্য-কার্বন বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। বিশেষ করে ভাসমান বা বার্জ-মাউন্টেড রিঅ্যাক্টর তুলনামূলকভাবে কম খরচে, কম রক্ষণাবেক্ষণে, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প খাতের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করতে পারবে।’
পেজ আরও বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তি আজ আর বিশ্বব্যাংকের মতো বড় উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থাগুলোর কাছে নিষিদ্ধ বিষয় নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ ইতিমধ্যেই তাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে এ প্রযুক্তি গ্রহণ করছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, উদ্ভাবনে বাংলাদেশের শক্তিশালী রেকর্ড রয়েছে, তাই দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে পারে। এর সুফল হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা এবং শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
পেজ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র এবং পারমাণবিক উদ্ভাবনে শান্তিপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতি প্রণয়ন করেছে, যাতে সৌর জ্বালানির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিকল্প নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কঠোর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই অপরিহার্য।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এসব সুযোগ অনুসন্ধান করব। তবে প্রতিশ্রুতিশীল এসব প্রযুক্তি নিয়ে গভীর গবেষণা দরকার। কোনো সন্দেহ নেই—বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা দ্রুত হ্রাস করতেই হবে।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সরকারের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।