খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা এবং পানছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ৬৬ জনকে ‘পুশইন’ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোর থেকে তাদের পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। এ ছাড়া কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্ত হয়ে ৩০ জনকে পুশইন করার তথ্য পাওয়া গেছে। যাদের পুশইন করা হয়েছে তাদের কাছে কোনো দেশের পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্র নেই। 

বিজিবির সূত্র বলছে, তাদের নাগরিকত্ব ও পরিচয় বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া শেষে প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভারত থেকে বাংলা ভাষাভাষী যাদের অবৈধভাবে পুশইন করা হয়েছে তারা বিজিবির হেফাজতে রয়েছে। এরই মধ্যে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই ধরনের পুশইনের ঘটনার জোরালো প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিএসএফের বিভিন্ন স্তরের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়। যদি তারা ভারতীয় নাগরিক বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের ফেরত পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বিজিবির পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়।  

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান বলেছেন, ভারত থেকে এভাবে পুশইন করাটা সঠিক প্রক্রিয়া নয়। আমরা এরই মধ্যে ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।

গতকাল বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই মন্তব্য করেন তিনি। নাগরিকদের পুশইন করার বিষয়ে খলিলুর রহমান বলেন, আমরা প্রতিটি কেস আলাদাভাবে নিরীক্ষণ করছি। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আমাদের দেশের নাগরিক যদি কেউ হয়ে থাকেন, আর সেটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের আমরা গ্রহণ করব। তবে এটা আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় হতে হবে। এভাবে পুশইন করাটা সঠিক প্রক্রিয়া নয়।

এটা নিয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, আমরা এটা নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোরে মাটিরাঙা উপজেলার ৪০ বিজিবি জোনের আওতাধীন শান্তিপুর বিওপির আওতাধীন দক্ষিণ শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ৩ পরিবারের ২৭ জন, পানছড়ি উপজেলার রূপসেনপাড়া বিওপি এলাকা দিয়ে ২৪, বিটিলা বিওপি এলাকা দিয়ে ৬ এবং মাটিরাঙার তাইন্দং দিয়ে আরও ৯ জনসহ ৬৬ জনকে ভারত থেকে পুশইন করা হয়েছে। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। 

সীমান্তের একটি সূত্র বলছে, পুশইন অনেককে প্রথমে গুজরাট থেকে ফ্লাইটে সীমান্তে নিয়ে আসা হয়। এরপর বিএসএফ ওপার থেকে এপারে পুশইন করে। আরও অনেককে পুশইন করতে গুজরাট ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে নিয়ে আসা হয়। 

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানান, মাটিরাঙা ও পানছড়ির সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে পুশইন করা ব্যক্তিরা বিজিবির অধীনে রয়েছে। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। 

এদিকে ভারত থেকে কুড়িগ্রামে অনুপ্রবেশ করা ৩৫ রোহিঙ্গাসহ ৪৪ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল সকালে জেলার রৌমারী থেকে ২১ রোহিঙ্গা ও ৯ বাংলাদেশি এবং ভূরুঙ্গামারী থেকে ১৪ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে নারী-শিশুও রয়েছে।   

গতকাল ভোরে রৌমারী উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভাওয়ারকুরি সীমান্তে দিয়ে তাদের ফেরত পাঠায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। ঘোরাঘুরির সময় স্থানীয়রা তাদের আটক করে বিজিবির হাতে তুলে দেয়। 

রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান জানান, ভোররাতে রৌমারী বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ৩০ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এদের মধ্যে ২২ জন রোহিঙ্গা। আটককৃতদের পরিচয় যাছাই করছে বিজিবি।

কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.

কর্নেল মোহাম্মদ মাহবুব উল হক জানান, ভূরুঙ্গামারীর ভাওয়ালকুরি সীমান্ত এলাকায় ৮ নারী শিশুসহ ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা সবাই রোহিঙ্গা। 

চার বাংলাদেশি আটক

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার জগদল সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে ৪ বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে বিএসএফ। ভোরে সীমান্ত পিলার ৩৭৪/১-এস থেকে প্রায় ২০০ গজ ভারতের ভেতরে এই ঘটনা ঘটে। 

আটককৃতরা হলেন– রানীশংকৈল উপজেলার ঢোলপুকুর জগদল গ্রামের মৃত বশির উদ্দীনের ছেলে মো. আলম (৪৫), বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহিড়ী বেলপুকুর গ্রামের তরিকুল ইসলামের ছেলে মো. মিস্টার (৩০), মোড়লহাট জিয়াবাড়ী এলাকার আব্দুল হকের ছেলে হামিদুল ইসলাম (৩০) এবং একই এলাকার আনসারুল ইসলামের ছেলে শামীম (২৩)।

৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজীর আহমেদ বলেন, মাদকদ্রব্যসহ ৪ বাংলাদেশিকে আটক করে বিএসএফ। তাদের ফিরিয়ে আনতে এ বিষয়ে পতাকা বৈঠকের জন্য চিঠি দিয়েছি। পতাকা বৈঠকের পর বিস্তারিত জানা যাবে। 

সীমান্তবর্তী জেলায় পুলিশ সতর্ক  

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৩২টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি সীমান্ত জেলা রয়েছে। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি ড. বাহারুল আলম।

গতকাল রাতে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ সমকালকে বলেন, কোনো দু্র্বৃত্ত যাতে সীমান্তের ওপার থেকে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি। সীমান্তবর্তী যেসব থানা রয়েছে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। 

(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, রৌমারী প্রতিনিধি ও মানিকছড়ি সংবাদদাতা)   

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম ন তবর ত উপজ ল র ব এসএফ সতর ক গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

মাত্র ২০ মিনিটে পাসপোর্ট আবেদন করা যাবে যেখানে

হাজারীবাগের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম। সাতসকাল থেকে ব্যবসার কাজে আড়তে ঢোকেন। সেখান থেকে বের হতে হতে রাত ১২টা। অনেক দিনের ইচ্ছা তিনি পাসপোর্ট করবেন। কিন্তু হাজারীবাগ থেকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পাসপোর্ট করার সময় কোথায় তাঁর। তাঁকে দেখা গেল ঢাকার নীলক্ষেতের নাগরিক সেবা কেন্দ্রে। পত্রিকায় সংবাদ দেখে এসেছেন পাসপোর্টের ফরম পূরণ করতে। তিনি বলেন, ‘আমার সময় কম। সারা দিন অনেক কাজ। এরই মধ্যে আবার পাসপোর্টের ফরম পূরণ বা পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার জন্য সুযোগ নেই। পত্রিকায় নাগরিক সেবা কেন্দ্রের খবর দেখে এসেছি পাসপোর্ট করাতে। মাত্র ২০ মিনিটে পাসপোর্টের সব তথ্য পূরণ করতে পারছি এখান থেকে। এখানে এসে জেনেছি, এখন পাসপোর্টসহ ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন, এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) সংক্রান্ত সেবা মিলবে এখানে।’

মোহাম্মদ সেলিমের পাসপোর্টের কাগজপত্র পূরণে সহায়তা করছিলেন নাগরিক সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা মো. জাহিদ হাসান। ২০২৫ সালে স্থাপত্য ডিপ্লোমা করেন এই তরুণ। তিনি নীলক্ষেত নাগরিক সেবা কেন্দ্রের দায়িত্বে আছেন।

জাহিদ বলেন, ‘আমার এই কেন্দ্র থেকে ১০-১৫ জন নানা ধরনের নাগরিক সেবা নিতে আসেন। বেশির ভাগ মানুষই জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন, এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) সংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদ করতে আসেন। এখান থেকে মাত্র ১০০-২০০ টাকার মধ্যে সব সেবা নেওয়া যাচ্ছে।

সব মিলবে এক কেন্দ্রে

সরকারি বিভিন্ন সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে অনলাইনে ‘এক ঠিকানায় সকল নাগরিক সেবা’ স্লোগানে চালু হয় নাগরিক সেবা বাংলাদেশ। গত মে মাসে এই কার্যক্রমের পাইলট প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রশিক্ষিত নাগরিক সেবা উদ‍্যোক্তারা এই সেবাগুলো নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে সাধারণ নাগরিকদের প্রদান করছেন। পাইলট প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর গুলশান, উত্তরা ও নীলক্ষেত এলাকায় নাগরিক সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। সম্প্রতি ঢাকার গুলিস্তান, বনশ্রী ও মোহাম্মদপুরে আরও তিনটি নাগরিক সেবা কেন্দ্র চালু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং সরকারের আইসিটি বিভাগের তত্ত্বাবধানে চলছে এই সেবা। এই সেবার আওতায় সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারের সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা সৃষ্টির জন্য নিয়মিতভাবে সেবার হালনাগাদ ও সমন্বয়ের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। এই ওয়েবসাইট (https://www.nagoriksheba.gov.bd/) থেকে দেখা যায়, জনপ্রিয় সেবার মধ্যে রয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র, ই-রিটার্ন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ই-মিউটেশন, ভূমি কর, ই-পরচা, অনলাইন জিডি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রত্যয়ন, সার্টিফিকেট সত্যয়ন ও ই-পাসপোর্ট সেবা।

যেসব সেবা মিলছে

নীলক্ষেত সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্ত জাহিদ হাসান বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র আবেদন থেকে শুরু করে ইউটিলিটি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এখানে। প্রতিটি কেন্দ্রে আধুনিক সরঞ্জাম রয়েছে নাগরিকদের জন্য। নাগরিক সেবা কেন্দ্র সাধারণ মানুষের দীর্ঘ ভ্রমণ বা লাইনের প্রয়োজন দূর করছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ই-মিউটেশন, ই-পরচা, ভূমি কর; রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের জন্মনিবন্ধন, মৃত্যুনিবন্ধন; বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নতুন ভোটার নিবন্ধন, কার্ড পরিবর্তন; বাংলাদেশ পুলিশের অনলাইন জিডিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া কাপড় বিক্রয়ের লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষানবিশির জন্য আবেদন, ময়ূর ক্রয়ের জন্য আবেদন, নার্সারি থেকে অনলাইনে চারা ক্রয়ের জন্য আবেদনের মতো বিভিন্ন বিষয়ে আবেদন করা যাচ্ছে এসব কেন্দ্র থেকে।

সুযোগ থাকলেও সেবা নেই

২২ অক্টোবর গুলশানের নাগরিক সেবা কেন্দ্রে নিজের জন্মনিবন্ধন করার উদ্দেশ্যে আসেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আলিমুল হাসান। তিনি বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম অনেক সুবিধা পাব এখানে, ভেবেছিলাম এক স্থান থেকেই সেবা নিয়ে ঘরে ফিরতে পারব। কিন্তু জন্মনিবন্ধন করাতে গিয়ে দেখি এখান থেকে কেবল আবেদন করা যাচ্ছে, যেটা নিয়ে আমাকে আবার কমিশনার কার্যালয়ে যেতে হবে, অথচ আবেদনের কাজটি আমি বাসা থেকেই করতে পারতাম কিংবা একজন সাধারণ কম্পিউটার দোকান থেকেও করা যেত।’ এ কথার উত্তরে নাগরিক সেবা উদ্যোক্তা মীর ফাতেমা বলেন, ‘জন্মনিবন্ধন সার্ভারের এক্সেস না থাকায় সেবাকেন্দ্র থেকে আবেদন, ভেরিফিকেশন ও জন্মনিবন্ধন সনদ প্রিন্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে পরিপূর্ণ সুবিধা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেবাকেন্দ্রে আসা আরেকজন নাগরিক জানান, গুলশানের নাগরিক সেবা কেন্দ্রটি মহাখালী বা কড়াইল বস্তিতে থাকা ভাসমান বা নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য বড় সেবা কেন্দ্র হতে পারে। অনেক মানুষের এখনো জন্মসনদ নেই। এখানে এসে জন্মসনদ করার সুযোগ আছে। তবে সম্পূর্ণ প্রসেসটি এখান থেকেই করা গেলে জনদুর্ভোগ কমত এবং ভাসমান ব্যক্তিরাও জন্মনিবন্ধনের সুযোগ পেত।

গুলশান নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, দ্রুতই এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আরও নতুন নতুন সেবা নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে নেওয়া যাবে। সেবা কেন্দ্র পরিচালনায় নারী উদ্যোক্তারা আছেন বলে অনেক নারী ও শিশু-কিশোরবান্ধব এখানকার পরিবেশ। পাইলট পর্যায় থেকে সরাসরি চালু হলে অনেক সেবার সুযোগ মিলবে।

প্রথম সিটিজেন সার্ভিস কানেকটিভিটি হাব

নাগরিক সেবা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বিশেষ উদ্যোগ। তৃণমূল পর্যায়ে ডিজিটাল সরকারি সেবাগুলো আরও সহজলভ্য করে তুলছে এই কেন্দ্র। প্রশিক্ষিত উদ্যোক্তাদের পরিচালিত স্থানীয় সেবা কেন্দ্রের বর্ধমান নেটওয়ার্কের মাধ্যমে, নাগরিকেরা দ্রুত, পেশাদারভাবে এবং বাড়ির কাছেই প্রয়োজনীয় কাজে সহায়তা পাচ্ছেন। বর্তমানে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন, এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) সংক্রান্ত সেবাসহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদের মোট ৪০০টি সেবা নিয়ে নাগরিক সেবার পাইলট এবং লার্নিং প্রোগ্রাম চলছে। প্রতিটি সরকারি অফিসের সেবাকে এক জায়গায় এনে নাগরিকদের হয়রানিমুক্ত সেবাদানের লক্ষ্যে নাগরিক সেবার মাধ্যমে ‘ন্যাশনাল এপিআই কানেকটিভিটি হাব’ তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে ভিন্ন ভিন্ন অফিসের ওয়েবসাইটে গিয়ে আলাদাভাবে সেবার আবেদন করার প্রয়োজন পড়বে না। বরং এক জায়গায় সব সেবা পাওয়ার জন্য একটি ন্যাশনাল কানেকটিভিটি হাব দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সব সেবা এক জায়গায় দিতে এটি বাংলাদেশের প্রথম সিটিজেন সার্ভিস কানেকটিভিটি হাব।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং আইসিটি বিভাগের তত্ত্বাবধানে নাগরিক সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) জানিয়েছে, বিভিন্ন সরকারি অফিসের সেবাকে এক ছাদের নিচে আনার জন্য নাগরিক সেবা কেন্দ্র ধারণাকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা চলছে। নাগরিকেরা যেন বাড়ির আশপাশে সরাসরি বিভিন্ন নাগরিক সেবা গ্রহণ করতে পারে, তার সব সুবিধা আছে এখানে। প্রায় সব মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাচ্ছে নাগরিক সেবা কেন্দ্র। এসব সেবা কেন্দ্র স্থানীয় উদ্যোক্তারা পরিচালনা করছেন বলে এলাকাভিত্তিক উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের এসব নাগরিক সেবা কেন্দ্রের দায়িত্ব গ্রহণে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন সেবা কেন্দ্রের ঠিকানা:

১. নাগরিক সেবা কেন্দ্র, গুলিস্তান

ঠিকানা: রমনা টেলিফোন ভবন, গুলিস্তান (নগর ভবনের পাশে)। গুগল ম্যাপে এই অবস্থান (https://maps.app.goo.gl/cAet4WzmPEBeJTXG9) । ফোন: ০১৭৪৪৯৮৭৬০৬

২. নাগরিক সেবা কেন্দ্র, বনশ্রী

ঠিকানা: হাউস নম্বর ১/এ, রোড ০২, ব্লক ডি, বিটিসিএল, বনশ্রী, ঢাকা-১২১৯১ গুগল ম্যাপে এই অবস্থান (https://maps.app.goo.gl/LifX6NDRcU22dazD7)। ফোন: ০১৮১১২৫৬৩৪১

৩. নাগরিক সেবা কেন্দ্র, মোহাম্মদপুর

ঠিকানা: প্লট-৪৭, আসাদ অ্যাভিনিউ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭। গুগল ম্যাপে এই অবস্থান (https://maps.app.goo.gl/DHqACmu21nys38nh9)। ফোন: ০১৭১৮৮৬৩৩৭১

৪. নাগরিক সেবা কেন্দ্র, গুলশান

প্লট নম্বর-২৫, রোড-১৬, গুলশান-১, ঢাকা, গুগল ম্যাপে এই অবস্থান (https://maps.app.goo.gl/9btSKptu5nsR92VaA)

ফোন: ০১৯১১৩১০৩৫৭

৫. নাগরিক সেবা কেন্দ্র, উত্তরা

ঠিকানা: ৩ এবং ৫, শাহজালাল অ্যাভিনিউ, সেক্টর-৬, উত্তরা, ঢাকা, গুগল ম্যাপে এই অবস্থান (https://maps.app.goo.gl/N93mhjMjK294wmAG6)। ফোন: ০১৯১৩৭৩৭৩৪৭

৬ নাগরিক সেবা কেন্দ্র, নীলক্ষেত

ঠিকানা: নীলক্ষেত টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, ১, বাবুপুরা রোড, নীলক্ষেত, ঢাকা-১২০৫, গুগল ম্যাপে এই অবস্থান (https://g.co/kgs/tNihsqQ)

ফোন: ০১৪০৯৫৬২৩৯৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সঞ্চয়পত্র বেচবে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক 
  • সঞ্চয়পত্র বিক্রিসহ ৫ সেবা দেবে না বাংলাদেশ ব্যাংক
  • বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ৩০০ জন
  • মাত্র ২০ মিনিটে পাসপোর্ট আবেদন করা যাবে যেখানে
  • নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই নাফাখুম ঝরনায় যান ১৭ পর্যটক, গোসলে নেমে একজন নিখোঁজ
  • মেহেরপুর সীমান্তে ১২ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ
  • মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ