কুষ্টিয়ায় টেনেহিঁচড়ে নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন
Published: 13th, May 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে নারী চিকিৎসক ও তাঁর স্বামীকে মারধরের প্রতিবাদ ও জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন কুষ্টিয়ায় কর্মরত বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এতে উপস্থিত হয়ে সংহতি জানান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের কয়েকজন শিক্ষকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
চিকিৎসকেরা জানান, দ্রুততম সময়ে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হোক। একই সঙ্গে জেলায় কর্মরত চিকিৎসকেরা যাতে নির্বিঘ্নে নিজেদের সেবা কার্যক্রম চালাতে পারেন, তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন।
আরও পড়ুনটেনেহিঁচড়ে রাস্তার ওপর মারধর : থানা থেকে বাড়ি ফিরলেন ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক ০৬ মে ২০২৫বক্তারা জানান, ৫ মে সোমবার দুপুরে চিকিৎসক শারমিন সুলতানা (৩৭) শহরের কোর্টপাড়া র্যাব গলির লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ফোনকল পেয়ে রোগী দেখতে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর রিকশা থেকে নামামাত্রই ওত পেতে থাকা কয়েকজন নারী তাঁকে মারধর করেন। তাঁকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মেরে জখম করা হয়। খবর পেয়ে তাঁর চিকিৎসক স্বামী মুহাম্মদ মাসুদ রানা ও গাড়িচালক ওই নারী চিকিৎসককে রক্ষা করতে গেলে তাঁদের মারধর করা হয়। এ ছাড়া ভুক্তভোগীদের সঙ্গে থাকা স্মার্টফোন, সোনার গয়না ও দেড় লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন তাঁরা। এ ঘটনার পরদিন ওই চিকিৎসকের স্বামী বাদী হয়ে তিন নারীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
চিকিৎসকদের ভাষ্য, চিকিৎসক দম্পতিকে মারধরের ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত। মব সৃষ্টি করে মারধর কোনোভাবেই স্বাধীন দেশে কাম্য নয়। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত রাজপথে তাঁদের আন্দোলন চলবে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নাসিমুল বারী বলেন, আসামিদের রিমান্ডে নিতে হবে। মব তৈরির পেছনে কোনো মাস্টারমাইন্ড আছে কি না, তা খুঁজে বের করতে হবে। এটি পরিকল্পিত একটি ঘটনা।
ওই মামলায় ইতিমধ্যে চার আসামিকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনকুষ্টিয়ায় টেনেহিঁচড়ে নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় তিন নারীর নামে মামলা০৬ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক র ম রধর র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্র–জনতার ওপর হামলায় মদদ ও পরীক্ষার অনিয়মে জড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন জাতীয় ছাত্রশক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক কাজী মেহরাব। এতে বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনে হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার না করে গাদ্দারি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একাডেমিক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের আক্রোশের শিকার হয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘রেজাল্ট টেম্পারিংয়ের’ শিকার হচ্ছেন। এই প্রশাসন ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের বলির পাঁঠা বানিয়ে তারা শিক্ষক সিন্ডিকেট জিইয়ে রেখেছে। অবিলম্বে এসব শিক্ষকের বিচারকাজ শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।
ইংরেজি বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক খন্দকার আল ফাহাদ বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিচারের দাবি করে আসছি। কিন্তু আমাদের প্রশাসন একটা কথা বলে যে, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। ঠিক কথা, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। কিন্তু তারা ঠিকই প্রতিবার শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করতে পারে; এমনটি আগেও করেছে, বর্তমানেও করছে। যে প্রশাসনকে আমরা একটি গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসিয়েছি, তারা আজ এটিকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করছে।’
ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক নাদিয়া রহমান বলেন, হামলাকারী শিক্ষার্থীদের বিচার যদি এই দেড় বছরে করা সম্ভব হয়, তাহলে মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার কেন এই দেড় বছরে করা সম্ভব নয়? তারা জাকসুর আগে মিটিংগুলোয় বলেছিল, জাকসু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব শিক্ষকের বিচার সম্ভব। কোথায় সেই বিচার? জাকসু হওয়ার পর আজ প্রায় দুই মাস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোনো ধরনের বিচারের তৎপরতা প্রশাসনের ভেতরে দেখা যাচ্ছে না।
অবিলম্বে শিক্ষকদের বিচার না হলে এই প্রশাসনকে টেনেহিঁচড়ে নামানোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, এই শিক্ষকদের বিচার না হওয়ার পেছনে আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট জড়িত আছে। যে শিক্ষকেরা রেজাল্ট টেম্পারিং করছেন, তাঁদের অধিকাংশই আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট। যদি প্রশাসন এসব শিক্ষকের বিচার না করে, তাহলে সাবেক ভিসি নুরুল আলমের প্রশাসন যেভাবে বিদায় নিয়েছিল, এই প্রশাসনকেও সেভাবে নামানো হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইমন প্রমুখ।