বগুড়ায় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠানে হামলা হয়েছে। আজ বুধবার শহরের সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন অনুষ্ঠানে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ’–এর ব্যানারে অর্ধশত তরুণ প্রথমে বাধা দেন। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত উদীচীর অনুষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে উদীচী বগুড়া জেলা সংসদ কার্যালয়ের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়।

উদীচী বগুড়া জেলা সংসদ সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মুক্তমঞ্চে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের আয়োজন করা হয়। বিকেল চারটা থেকেই উদীচীসহ বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা মঞ্চে অবস্থান নেন। বিকেল পাঁচটার দিকে অর্ধশত তরুণ সেখানে যান। তাঁরা ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে ফ্যাসিস্ট ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একপর্যায়ে তাঁরা সেখানে মাইক টানিয়ে দেন। এ কারণে মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান করতে না পেরে উদীচীর শিল্পীরা শহরের শহীদ খোকন পার্কে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন অনুষ্ঠান আয়োজনের চেষ্টা করেন। একদল তরুণ সেখানেও হামলা চালান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর উদীচীর শিল্পীরা শহরের সাতমাথায় জেলা সংসদ কার্যালয়ে অবস্থান নেন। আর ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে আসা তরুণেরা সাতমাথায় মুক্তমঞ্চের সামনে অবস্থান নেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একপর্যায়ে উদীচীর জেলা শিল্পী সংসদ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়া আয়োজক ও শিল্পীদের ধাওয়া দেন তরুণেরা। এ সময় তাঁরা উদীচী কার্যালয়ের ব্যানার ছিঁড়ে তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে।

উদীচী বগুড়া জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাহিদুর রহমান (বিপ্লব) বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে আসা লোকজনের মধ্যে এনসিপির নেতা-কর্মীসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছিলেন। হামলার সময় পুলিশ নির্বিকার ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির বগুড়া জেলা সংগঠক আহমেদ সাব্বির প্রথম আলোকে বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ বা উদীচীর অনুষ্ঠানে হামলার সঙ্গে এনসিপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এনসিপির দু–একজন নেতা–কর্মী সেখানে সংহতি প্রকাশ করতে গেলে তাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে গেছেন।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ দমন) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে উদীচী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে শহীদ খোকন পার্কে উদীচী অনুষ্ঠান আয়োজন করতে গেলে সেখানেও ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ ঝামেলা করার চেষ্টা করে। পুলিশের বাধায় উদীচীর কার্যালয়ে কেউ হামলা করতে পারেনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ক তমঞ চ অবস থ ন ন অন ষ ঠ ন এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে নেমে নিখোঁজ, ৪০ ঘণ্টা পর মেঘনায় ভেসে উঠল কিশোরের লাশ

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মেঘনা নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে নেমে নিখোঁজের ৪০ ঘণ্টা পর সিয়াম মিয়া (১৬) নামের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরেরচর এলাকায় নদী পাড়ে তার লাশটি ভেসে ওঠে। পরে সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় লোকজন লাশটিকে তীরে তুলে আনেন।

এর আগে গত বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার পান্থশালা ফেরিঘাট এলাকার মেঘনা নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয় সিয়াম। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ও রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর এলাকার জুনায়েদ মিয়ার একমাত্র ছেলে।

সিয়ামের কয়েকজন বন্ধু জানায়, বুধবার দুপুরে তারা ১১ বন্ধু মিলে পান্থশালা ফেরিঘাটে গোসল করতে নামে। একপর্যায়ে তাদের কয়েকজন ফেরিঘাটের জেটির ওপর থেকে নদীতে ঝাঁপ দেয়। সিয়াম সাঁতার জানত না। তবু বন্ধুদের দেখাদেখি সে ঝাঁপ দেয় এবং তীব্র স্রোতের তোড়ে পানিতে ভেসে যায়। একপর্যায়ে নদীতে তলিয়ে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সিয়ামের নিখোঁজের খবরে ওই দিন বিকেল ৪টা থেকে রায়পুরা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। গতকাল দিনভর অভিযানে যুক্ত হয় টঙ্গী থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে অভিযানটি সমাপ্ত ঘোষণা হয়। আজ সকালে লাশটি ভেসে উঠলে সিয়ামের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ জানান, পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিয়ামের লাশটি ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে নেমে নিখোঁজ, ৪০ ঘণ্টা পর মেঘনায় ভেসে উঠল কিশোরের লাশ