প্রধানমন্ত্রীর অসীম ক্ষমতাকে সীমায় আনবে কে
Published: 17th, May 2025 GMT
যখন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ বেড়ে চলেছে, তখন নাগরিক কোয়ালিশন নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গুরুত্বপূর্ণ এক সংলাপের আয়োজন করেছে। ১১ মে আয়োজিত এই সংলাপে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কয়েকটি সংস্কার কমিশনের প্রধান ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
নাগরিক জোটের পক্ষ থেকে সাত দফা প্রস্তাবও উত্থাপন করা হয়, যা জট কাটাতে সহায়ক হতে পারে। তবে ওই সংলাপে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তৃতায় মনে হয়, তাঁরা নিজ নিজ অবস্থানে অনড় আছেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে দেওয়া বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। অনেকটা সেই গ্রামীণ প্রবাদের মতো, ‘সালিস মানি, কিন্তু তালগাছটা আমার।’
সংলাপে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অসীম ক্ষমতার বিষয়টিও উঠে আসে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ১৯৯১ সালের দ্বাদশ সংশোধনীর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বাংলাদেশ যখন সংসদীয় পদ্ধতিতে প্রবেশ করল, তখন রাষ্ট্রপতির হাতে যে অভাবনীয় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল, সেই ক্ষমতার প্রতিটি অংশ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।
তবে আমাদের এটাও জানা আছে যে ১৯৭৫ সালে একদলীয় বাকশাল রাষ্ট্রপতিকে যে ক্ষমতা দিয়েছিল, পরবর্তী রাষ্ট্রপতিরাও তা ভোগ করেছেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে। আমাদের এখানে একদলীয়, বহুদলীয়, রাষ্ট্রপতিশাসিত কিংবা সংসদীয় শাসন—সবই পরিচালিত হয় ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে। এক ব্যক্তি কয়বার প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেটা নিয়ে যে বিএনপি ও অন্যান্য দল বিতর্ক করছে, তা–ও ওই ব্যক্তিকে সামনে রেখে। আগে আপনারা সংস্কারের মৌলিক বিষয়ে একমত হোন, এরপর মেয়াদ ঠিক করা যাবে।
আমাদের রাজনীতিকেরা ভুলে যান যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে দলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্রে যা–ই লেখা থাকুক না কেন, তাদের গণতান্ত্রিক উপায়ে নেতৃত্ব নির্বাচনের রেওয়াজ নেই। দলের সম্মেলন হওয়ার আগে ‘নেতা’ ঠিক করে রাখে।
সাম্প্রতিক কালে রাষ্ট্র সংস্কারের যেসব গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে, এর প্রায় সবটা নিয়ে আলোচনা করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান তাঁর অবাক বাংলাদেশ: বিচিত্র ছলনাজালে রাজনীতি বইয়ে। ২০১৭ সালে প্রকাশিত এ বইয়ে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আকবর আলি খান যে প্রশ্ন রেখেছিলেন, নির্বাহী বিভাগ নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্রের পথে যাচ্ছে কি না। আমরা তার চূড়ান্ত রূপ দেখলাম আওয়ামী লীগ শাসনামলে। তিনি আরও লিখেছেন, ক্ষমতার দিক থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ফ্রান্সের বুরবন সম্রাট, রাশিয়ার জার ও মোগল বাদশাহর সঙ্গে তুলনীয়।
সংবিধানের ৫৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ১.
১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে রাষ্ট্রের অন্য সব নাগরিকের ওপর স্থান দিলেও কোনো ক্ষমতা দেয়নি। সংবিধানের ৪৮(৩) ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ ছাড়া সব ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ১৯৯১ সালে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টি যুক্ত হয়।
সংসদীয় ব্যবস্থায় এত দিন একই ব্যক্তি ছিলেন একাধারে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রধান। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ, দুই দলের আমলেই এমনটি ছিল। এতে সরকার, সংসদ ও দলে এক ব্যক্তির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ থাকে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান এবং সংসদ নেতা হতে পারবেন না।বাংলাদেশে সংসদীয় ব্যবস্থায় মন্ত্রিপরিষদ শাসিত ব্যবস্থার বদলে প্রধানমন্ত্রী শাসিত ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে। অন্যান্য দেশে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত ব্যবস্থায় অন্য মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীর অধীন নন, তিনি তাঁর সহকর্মীদের মধ্যে ‘প্রথম’। আর বাংলাদেশে এত দিন যা চলছিল, সেটি হলো প্রধানমন্ত্রীই মন্ত্রিসভার প্রধান, অন্যরা তাঁর অধীন। তিনি চাইলে যেকোনো সংসদ সদস্যকে মন্ত্রী করতে পারেন, যেকোনো মন্ত্রীকে যেকোনো সময় বিদায় দিতে পারেন। এমনকি তিনি বিরোধী দল থেকেও মন্ত্রী নিতে পারেন।
২০১৪-২০১৮ সংসদে জাতীয় পার্টি ছিল বিরোধী দলে। অথচ সেই দলের একাধিক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। এটা ছিল বিরোধী দলহীন সংসদকে বিরোধী দল হিসেবে দেখানোর চেষ্টা। সংসদীয় গণতন্ত্রে একই সঙ্গে মন্ত্রিসভা ও বিরোধী দলে থাকার সুযোগ নেই।
আকবর আলি খানের মতে, কেবল আইন করেই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বাড়ানো হয়নি, বিধিমালায়ও তাঁকে যথেচ্ছ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাঁর ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং এর দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটছে।
বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে ছয়জন মন্ত্রী পদমর্যাদার উপদেষ্টা, দুজন সচিব এবং তাঁদের সমর্থনের জন্য উপযুক্ত অতিরিক্ত, যুগ্ম ও সহকারী সচিবের সমন্বয়ে এক বিরাট দাপ্তরিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই সচিবালয়ের কর্মকর্তারা মন্ত্রীদের দ্বারা পরিচালিত মন্ত্রণালয়গুলোর বিভিন্ন কাজে হস্তক্ষেপ করতেন। এর ফলে মন্ত্রীরাও হয়ে পড়েন হুকুমবরদার।
সংসদীয় ব্যবস্থায় এত দিন একই ব্যক্তি ছিলেন একাধারে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রধান। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ, দুই দলের আমলেই এমনটি ছিল। এতে সরকার, সংসদ ও দলে এক ব্যক্তির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ থাকে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান এবং সংসদ নেতা হতে পারবেন না।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এটাকে এই মুহূর্তে অসম্ভব মনে হলেও আমাদের সেখানেই যেতে হবে, যদি আমরা ব্যক্তিতন্ত্রের স্থলে গণতন্ত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শাসিত শাসনব্যবস্থার বদলে মন্ত্রিসভা শাসিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
আমরা রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির সরকারকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক বলে পরিত্যাগ করেছি। এর জন্য জনগণকে দীর্ঘ সংগ্রাম করতে হয়েছে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। কিন্তু একানব্বই সালে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংসদীয় ব্যবস্থা কায়েম হলো, তাতে রাষ্ট্রপতির সমুদয় ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতেই অর্পণ করা হলো। আইন ও বিধিমালা এমনভাবে তৈরি করা হলো, যাতে প্রধানমন্ত্রী পদটি থেকে গেল সবার ওপরে।
প্রধানমন্ত্রীও একটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন করে জয়ী হন। অন্য মন্ত্রীরাও নিজ নিজ আসনে নির্বাচন করে জয়ী হন। অর্থাৎ দুজনই জনপ্রতিনিধি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হাতে অবারিত ক্ষমতা।
৭০ অনুচ্ছেদ দিয়ে যেমন সাধারণ সদস্যদের হাত–পা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তেমনি মন্ত্রীদেরও প্রধানমন্ত্রীর কৃপাপ্রার্থী করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঠিক করেন কাকে কোন মন্ত্রণালয় দেবেন, ওই মন্ত্রণালয়ে তাঁর কাজের কোনো যোগ্যতা থাকুক আর না–ই থাকুক।
খালেদা জিয়ার প্রথম শাসনামলে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিরোধী দল আন্দোলন করছিল, তখন স্যার নিনিয়ান একটি আপস প্রস্তাব দিয়েছিলেন, নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় সরকারি ও বিরোধী দল থেকে সমানসংখ্যক মন্ত্রী নেওয়া হবে এবং আগের সংসদের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীই সরকারের প্রধান থাকবেন। সে সময় বিরোধী দল তা মানেনি এই যুক্তিতে যে প্রধানমন্ত্রীর হাতেই তো সব ক্ষমতা। অন্য মন্ত্রীরা নিমিত্ত মাত্র।
যে বিরোধী দল আন্দোলন–সংগ্রাম করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা কায়েম করেছিল, তারাই ক্ষমতায় এসে সেটি বাতিল করে দেয় আদালতের রায়ের দোহাই দিয়ে। আওয়ামী লীগ সরকার যখন পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের তোড়জোড় করে, তখন দলের ভেতরে ও বাইরে প্রায় সবাই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
দেশের শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীরাও সেই রকম মত দিয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে সেটি বাতিল করা হয়। অর্থাৎ গণতন্ত্রের চেয়ে ব্যক্তির ইচ্ছাই প্রাধান্য পেয়েছে। ভবিষ্যতে যে তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না, সেই নিশ্চয়তা কে দেবে?
সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি
[email protected]
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন য মন ত র র ষ ট রপত ব যবস থ য় গণতন ত র প রস ত ব অন য ন য সরক র র আম দ র র প রস ক ষমত অবস থ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
শামীম ওসমান দিনের পর দিন না’গঞ্জবাসীর সাথে প্রতারণা করেছে: কম. সাঈদ
নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনে শক্তির জানান দিলেন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কমরেড সাঈদ আহমেদ। সদর-বন্দরবাসী কাছে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করে নগরীতে শোডাউনের মাধ্যমে ধানের শীষের প্রচারণা করলেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ এই নেতা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে শহরের আমলাপাড়াস্থ নিজ কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু সড়কজুড়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের প্রধান এই নেতা।
মিছিল ও ধানের শীষের প্রচারণা শেষে কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহু দুঃখজনক ও বিতর্কিত ঘটনা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার ও দমন পীড়নের অভিযোগ যেভাবে উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর স্মৃতি আজও জাতির মনে গভীর ক্ষত হিসেবে রয়ে গেছে।
১৯৭৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহীতে আমাদের দলের ৪৪ জন নেতাকে হত্যার অভিযোগ, কিংবা ১৯৭৫ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে আটক করে পরে হত্যার ঘটনাকে ঘিরে উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি এসবই ইতিহাসে গভীর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একইভাবে, তৎকালীন সংসদ সদস্য শাহিন আলীর মৃত্যুকেও অনেকেই রাজনৈতিক নিপীড়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাগুলো আমরা ইতিহাসের দাবি হিসেবে তুলে ধরি জবাবদিহির প্রয়োজন থেকে, সত্য উন্মোচনের প্রয়োজন থেকে। কারণ যদি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অতীত ও কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে শুরু করি, তবে তা একদিনে শেষ করা যাবে না।
দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যেভাবে দমন-পীড়ন হয়েছে অনেকে মনে করেন, তার নজির পৃথিবীর ইতিহাসেই খুব কম রয়েছে। আর ঠিক সেই কারণেই আমরা, দেশ ও জনগণের স্বার্থে, আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।
কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছেন এ অভিযোগ জনগণের মুখেই শোনা যায়। প্রেসিডেন্টের গাড়ি থামিয়ে স্মারকলিপি দেয়ার ঘটনায় তিনি নিজেকে যুক্ত করার চেষ্টা করলেও, সেদিন ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
তিন জানান, নারায়ণগঞ্জকে জেলা করা এবং তুলারাম কলেজকে সরকারি করার দাবিতে সেই স্মারকলিপি তিনি নিজেই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে প্রদান করেছিলেন সেই সময় শামীম ওসমানের রাজনৈতিক অস্তিত্বই ছিল না।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের জনগণ যেভাবে প্রতারণার জবাব দিয়েছে, ভবিষ্যতেও ঠিক সে ভাবেই দেবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, তালবাহানা, কিংবা অগ্নিসংযোগ বা কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা কোনোটাই বরদাস্ত করা হবে না। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এবং জনগণের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালে যেভাবে অরজগতা সৃষ্টি করেছিল (১১ ডিসেম্বরে) আমাদের পার্টির ৪৪ জন নেতাকে রাজশাহীতে হত্যা করেছিল রক্ষী বাহিনীর মঞ্জুরের নেতৃত্বে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, ১৯৭৫ সালের (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে ধরে এনে ঢাকা সাভারে নিয়ে শেখ মুজিবের রকিবাহিনী হত্যা করেছিল, আরো হত্যা করেছিল পার্লামেন্টে শাহিন আলিকে শেখ মুজিব নিজ হাতে,
তিনি আরও বলেন, যদি আমরা শেখ হাসিনার ইতিহাস বলতে চাই, বলে শেষ করা যাবে না বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম নৃশংস গণহত্যা পৃথিবীর বুকে আর কোন স্বৈরাচার করে নাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেভাবে মানুষকে হত্যা করেছে সারা পৃথিবীর বুকে নজির হয়ে থাকবে, আমরা চাই দেশ এবং জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের আপোসিন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছে, প্রেসিডেন্টের গাড়ি সে থামিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল, শামীম ওসমান মিথ্যা কথা বলেছে, সেই দিন শামীম ওসমান কোনভাবেই এর সাথে জড়িত ছিল নাভ
ঐদিন আমি নিজে জিয়াউর রহমান কে স্মারকলিপি প্রদান করেছিলাম নারায়ণগঞ্জ কে জেলা করার জন্য, তোলারাম কলেজকে সরকারি করার জন্য, সেই সময় শামীম ওসমানের অস্তিত্ব ছিল না, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে যেভাবে প্রতারণা করেছে নারায়ণগঞ্জের জনগণ ঠিক ওইভাবেই তাকে এর জবাব দিয়ে দিয়েছি, আমরা নারায়ণগঞ্জের জনগণকে নিয়ে কোন তালবাহানা কোন অগ্নিসংযোগ যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটাতে চায় তাহলে আমরা কোন ছাড় দিব না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল এর) পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড মেহেবুব, কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড নওশাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি কমরেড নুরুলদীন ঢালী, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড সুমন হাওলাদার, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কমরেড জাকির শিকদার, আহবায়ক নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমরেড গোলজার প্রধান, সদস্য সচিব নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড শাকিল ও সভাপতি বন্দর থানা ইরফান খন্দকার ।