সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, আমাদের জাদুঘরটা নির্মোহ। এখানে কোনো দলমতের পক্ষ নেই। নির্মোহভাবে আমাদের ভালোমন্দ সবকিছু তুলে ধরা উচিত এবং এটা করাটা আমাদের জন্য খুব জরুরি। 

গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। 

এর আগে সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। দিবসটি ঘিরে এই আয়োজনে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে ‘ফেয়ার ওয়াটার’ শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনী। 

ফারুকী বলেন, আমি বিশ্বাস করি সবাই যদি কমিটেড হন, তাহলে আমরা যাওয়ার আগে পরিবর্তনের সূচনা করতে পারব। প্রতিটি জাদুঘরের নিজস্ব চরিত্র থাকে। আমাদের জাতীয় জাদুঘরে ‘আমরা কারা’, এ বিষয়টি আমি মনে করি না সঠিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে এখন পর্যন্ত। 

তিনি বলেন, জাদুঘরের সঠিকভাবে কিউরেশন করা প্রয়োজন। এখানে শুধু পেশাদার কিউরেশন করলেই হবে না, এখানে সামগ্রিক বিষয় তুলে ধরতে হবে। আমি আশা করব, স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমদের নেতৃত্বে বোর্ড যখন একটি সম্পূর্ণ দল পাবে, তখন তারা সঠিক লোকদের নিয়োগ দেবেন, যেন এই কাজগুলো ঠিকঠাক মতো হয়। 

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদ সদস্য লুভা নাহিদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আজকের এই দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য জাদুঘরগুলোকে অবশ্যই বিকশিত হতে হবে। সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে প্রযুক্তির বিকাশ এবং মানুষের প্রত্যাশা পরিবর্তিত হওয়ার সঙ্গে জাদুঘরকেও আধুনিক সমাজের চাহিদা পূরণের জন্য খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এ জন্য জাদুঘরকে সব সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া অত্যাবশ্যক। জাদুঘরের ভবিষ্যৎ শুধু অতীত সংরক্ষণের মধ্যেই নয়, বরং একটি উন্নত-জ্ঞাত এবং ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠনের মধ্যেও নিহিত। 

জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো.

ফরহাদ সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় জাদুঘর পর্ষদ সভাপতি মেরিনা তাবাসসুম। আলোচক ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদ সদস্য ড. সৈয়দ মোহম্মদ কামরুল আহছান। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় জাদুঘরের সচিব মো. সাদেকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় জাদুঘরের জনশিক্ষা বিভাগের কিপার আসমা ফেরদৌসি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় জ দ ঘর র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ