হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে তিনি বেরিয়ে আসেন।

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার কাওয়ালীন নাহার তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছায়। যাচাই-বাছাই শেষে তাঁকে স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন।

গত রোববার সকালে থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে নুসরাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর ভাটারা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন এনামুল হক (৩৫)। ৩ মে তিনি ঢাকার সিএমএম আদালতে ২৮৩ জনের বিরুদ্ধে নালিশি মামলা করেন। এর মধ্যে নুসরাত ফারিয়াসহ ১৭ জন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে আসামি করা হয়।

আদালতের নির্দেশে মামলাটি ৩ মে এজাহার হিসেবে রেকর্ড হয়। মামলা করার দুই সপ্তাহ পর গ্রেপ্তার করা হয় নুসরাতকে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কাঠগড়ায় নুসরাত ফারিয়ার ৩০ মিনিট

হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে একটি মাইক্রোবাসে আদালতে আনা হয়। তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়।

সকাল ১০টার পর নুসরাত ফারিয়াকে আদালতে ওঠানোর জন্য হাজতখানা থেকে বের করে আনা হয়। নুসরাত ফারিয়ার মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট। পরেছিলেন বুলেট প্রুফ জ্যাকেট। নারী পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে কড়া পাহারায় নুসরাত ফারিয়া সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় ওঠেন। আদালতের কাঠগড়ায় তোলার পর একজন পুলিশ সদস্য তাঁর মাথায় পরানো হেলমেটটি খুলে ফেলেন। তখন সময় সকাল দশটা ২০ মিনিট।

নুসরাত ফারিয়া দেয়ালের দিকে মুখ করে ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন। প্রায় দুই থেকে তিন মিনিট তিনি দেয়ালের দিকে তাকিয়েছিলেন। পরে একজন আইনজীবী নুসরাত ফারিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তখন নুসরাত ফারিয়া সেই আইনজীবীর সঙ্গে ইশারায় কথা বলেন। তখনই বিচারক সারাহ ফারজানা হক এজলাসে আসেন।

আদালতে নুসরাত ফারিয়াকে বিমর্ষ দেখা গেছে। কাঠগড়ায় ৩০ মিনিট রেলিং ধরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। আদালতে কোনো বক্তব্য দেননি।

ঘটনার সময় নুসরাত দেশে ছিলেন না, বললেন আইনজীবী

মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর ভাটারা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন এনামুল হক। গত ৩ মে ভুক্তভোগী এনামুল বাদী হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় নুসরাত ফারিয়াকেও তিনি আসামি করেন। মামলাটি গত ৩ মে এজাহার হিসেবে রেকর্ড হয়।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে নুসরাত ফারিয়াকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। শুনানির শুরুতে নুসরাতের আইনজীবী মোহাম্মদ ইফতেখার হাসান আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমার মক্কেল একজন সুপরিচিত অভিনেত্রী। অভিনয় তাঁর পেশা। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। শুধু তাই নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নুসরাত ফারিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনের পক্ষেও লেখালেখি করেছিলেন, সহমর্মিতাও প্রকাশ করেছিলেন।’

আইনজীবী মোহাম্মদ ইফতেখার হাসান আদালতকে আরও বলেন, যে মামলায় নুসরাত ফারিয়াকে আসামি করা হয়েছে, সে মামলার ঘটনার তারিখ গত বছরের ১৯ জুলাই। বাস্তবতা হচ্ছে নুসরাত ফারিয়া তখন বিদেশে অবস্থান করছিলেন। নুসরাত ফারিয়া যে ওই সময় বিদেশে অবস্থান করছিলেন, তাঁর স্বপক্ষে সব প্রমাণপত্র রয়েছে বলে জানান তিনি।

নুসরাত ফারিয়া তখন কানাডাতে ছিলেন। পেশাগত কাজ শেষে গত বছরের ১৪ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন বলে জানান আইনজীবী। আইনজীবী মোহাম্মদ ইফতেখার হাসান নুসরাত ফারিয়ার পাসপোর্ট এবং ভিসার কাগজপত্র আদালতের কাছে জমা দেন।

ভাটারা থানায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কালো গ্লাসের গাড়িতে কারাগার থেকে বের হন নুসরাত ফারিয়া, কারও সঙ্গে কথা বলেননি
  • জামিনে মুক্তি পেলেন নুসরাত ফারিয়া
  • নুসরাত ফারিয়ার জামিন মঞ্জুর
  • ঘটনার সময় নুসরাত কানাডায় ছিলেন, বললেন আইনজীবী
  • কাঠগড়ায় নুসরাত ফারিয়ার ৩০ মিনিট
  • নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন