নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে : ঊষাতন তালুকদার
Published: 20th, May 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার।
নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘‘প্রথমে ডিসেম্বর, পরে জুন। এখন আবার শোনা যাচ্ছে, সেটাও সম্ভব না। তাহলে কি আপনাদের মধ্যে এখন ক্ষমতার লোভ দানা বেঁধেছে? সাধারণ জনগণ এমনটাই কানাঘুষা করছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘দেশে এখন আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছুই নেই। আন্দোলনের নামে দেশের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হচ্ছে। এটা কি বার্তা দেয়? এগুলো বুঝতে হবে।’’
আরো পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচনে ব্যক্তিতেই আস্থা শিক্ষার্থীদের
শিগগিরই দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করবে কমিশন: আলী রীয়াজ
আজ মঙ্গলবার (২০ মে) পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের ৩৬ বছর পূর্তি ও ২৯তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন উপলক্ষে রাঙামাটিতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
‘সকল প্রকার বিভেদ ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থি ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করুন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর আন্দোলনে জুম্ম ছাত্র সমাজ অধিকতর সামিল হউন’- স্লোগানে রাঙামাটি শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় অতিথি ছিলেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমিত্র চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ম্রানুসিং মারমা প্রমুখ।
ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘‘দেশের সকল জাতি, গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, সরকারসহ সকলের কাছে দাবি জানাই আসুন আমরা সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে পার্বত্য সমস্যাগুলো অনুধাবন করি। সমাধানের পথ খুঁজি। কিন্তু দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী ও সরকার তা করছে না। এটা চরম হতাশার, একইসঙ্গে আমরা ক্ষুব্ধ হচ্ছি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘চুক্তি বাস্তবায়নে এই সরকার তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না।’’
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নতুন নেতৃত্বকে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে আরো এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা/শংকর/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।
মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।
ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।
স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।
শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’
তার জন্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”
"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।
প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"
ঢাকা/ইয়াসিন