আত্রাই নদীর ভারতীয় অংশে বাঁধ ভেঙে পড়া নিয়ে নাম উহ্য রেখে বাংলাদেশকে নিশানা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। 

বুধবার রাজ্যটির জলপাইগুঁড়ি জেলার উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের একটা সমস্যা হয়েছে। তার কারণ, আমাদের একটি সীমান্তবর্তী দেশ রয়েছে, তার নাম বলছি না। তারা দুটো দেশ (বাংলাদেশ চীন) মিলে একটা বাঁধ তৈরি করেছিল। আমরা সেই বাঁধ তৈরির বিষয়ে বারবার ভারত সরকারকে জানিয়েছি। ফলে দক্ষিণ দিনাজপুর, বালুরঘাটের সাধারণ মানুষ আত্রাই নদীর পানি পায় না। যখন আত্রেয়ী নদীর পানি পুরোপুরি আটকে দেয়া হলো, তখন তো (কেন্দ্র) কিছু বলল না।’’

‘‘আমরা যেটুকু কাজ করতে যাচ্ছি তা খুব লিমিটেড। তা সত্ত্বেও যেটা ভেঙেছে তার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং কাজটা অবিলম্বে করার কথা বলা হয়েছে।’’ যোগ করেন মমতা। 

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে আত্রাই নদীর ওপর ২০২৪ সালে নির্মিত বাঁধের একটি বড়ো অংশ গত ২০ মে প্রবল স্রোতে ভেঙে পড়ে। 

আত্রাই নদী বাংলাদেশ হয়ে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর দিয়ে আবার বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ভারতের অংশে নদীটি ‘আত্রেয়ী’ নামে পরিচিত। আত্রাই নদীর উপর রাবার ড্যাম বানালে নদীর পানি প্রবাহ কমে যাবে এমন আশঙ্কায় বারবার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নদীর পানি ধরে রাখতে ও তীব্র ভাঙন ও বন্যার কবল থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষায় ২০২২ সালে বালুরঘাটের চকভৃগুতে বাঁধ নির্মাণ শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ২০২৪ সালে কাজ শেষ হয়।  

চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো সেই বাঁধের গার্ডওয়াল ভেঙে পড়ে। এরপর দ্রুততার সঙ্গে বালির বস্তা ফেলে সেটি মেরামতের কাজ চলছিল। কিন্তু এর চার মাসের মধ্যে গত ২০ মে ভোররাতে পানির তোড়ে বাঁধের প্রায় ৪০ ফুট অংশ ধসে পড়ে। এরপরই শুরু হয় রাজনৈতিক উত্তাপ। 

কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাজ্য সরকারকে এ জন্য দায়ী করেন।  এর একদিনের মধ্যেই নির্ধারিত প্রশাসনিক সভায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। 

এদিন বক্তব্যে তিস্তা প্রসঙ্গও টেনে এনে প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমকে হুঁশিয়ারি দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সিকিমে ১৪টা হাইড্রেল পাওয়ার করা হয়েছে। ফলে ওখান দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারছে না। সব পানি এসে পড়ছে বাংলার বুকে। যে যার নিজেকে নিয়ে আছে। তারা একবার তো ভাববে। ওদের আমরা ভালোবাসি। আমাদের কত পর্যটক ওখানে যায়। আপনারা এতগুলো বিদ্যুৎ প্রকল্প করলেন সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার কেন অনুমতি দিল?’’

‘‘কেউ যদি মনে করে যে অপরের উপরে নিঃশ্বাস ফেলবে, বাংলার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে, তবে মনে রাখতে হবে তারা যেন নিজের রাজ্যকে সামলায়। নিঃশ্বাস আমরাও ফেলতে পারি। আমরা মনে করি প্রত্যেকটা জিনিসের সীমাবদ্ধতা আছে, কারোরই লক্ষণ রেখা অতিক্রম করা উচিত নয়।’’ 

ঢাকা/কংসবণিক//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র নদ র প ন মন ত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ডামি নির্বাচন ও ভোট চুরির অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের নামে টাঙ্গাইলের আদালতে মামলা

২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন আয়োজন ও ভোট চুরির অভিযোগে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের নামে মামলা হয়েছে। সোমবার ভূঞাপুর উপজেলা আমলি আদালতে কামরুল হাসান (৫৫) নামের এক ব্যক্তি মামলার আরজি করেন। আদালতের বিচারক রুমেলিয়া সিরাজাম মামলাটি আমলে নিয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্তের নির্দেশ দেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন।

বাদী কামরুল হাসান ভূঞাপুর উপজেলার ভারই গ্রামের মৃত মমতাজউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। বাদীপক্ষের আইনজীবী আবু রায়হান খান বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। পরে ভূঞাপুর থানার ওসিকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মামলার আরজি থেকে জানা যায়, মামলায় ১৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর হাসান (ছোট মনির), সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আওয়াল, পুলিশের তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন ও টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। এ ছাড়া পুলিশ ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও মামলার আসামি।

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, ভারতের নির্দেশক্রমে শেখ হাসিনা অন্য আসামিদের যোগসাজশে বিগত ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একটি ডামি নির্বাচনের আয়োজন করেন। তিনি (বাদী কামরুল হাসান) ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়নের ভারই উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন। তিনি অন্য ভোটারদের সঙ্গে ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁকে মারধর করা হয় এবং হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। নির্বাচনে পুলিশ ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সহায়তায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে জোর করে নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভর্তি করেন। এভাবে অন্যের ভোট চুরি করে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান (ছোট মনিরকে) সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত করা হয়। এতে দেশ ও জনগণের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হোয়াইট হাউসে থাকাকালে কি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন বাইডেন
  • রাজ্যের পাওনা আটকে রাখায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুর মামলা
  • আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আসন বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি
  • ‘মনোনীত হয়ে সত্যি সম্মানিত বোধ করছি’
  • ‘এই পুরস্কার নিরপেক্ষতা রাখে’
  • ডামি নির্বাচন ও ভোট চুরির অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের নামে টাঙ্গাইলের আদালতে মামলা
  • লন্ডনে কোকো ক্রিকেট টুর্নামেন্টের শিরোপা তুলে দিলেন তারেক রহমান 
  • শেয়ারহোল্ডাররা পেলেন গ্রামীণফোনের নগদ লভ্যাংশ
  • আন্দোলন শেষে ক্লাস পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা, প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ২২ জুন