আত্রাই নদীর বাঁধ ভেঙে পড়া নিয়ে বাংলাদেশকে মমতার নিশানা
Published: 21st, May 2025 GMT
আত্রাই নদীর ভারতীয় অংশে বাঁধ ভেঙে পড়া নিয়ে নাম উহ্য রেখে বাংলাদেশকে নিশানা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
বুধবার রাজ্যটির জলপাইগুঁড়ি জেলার উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের একটা সমস্যা হয়েছে। তার কারণ, আমাদের একটি সীমান্তবর্তী দেশ রয়েছে, তার নাম বলছি না। তারা দুটো দেশ (বাংলাদেশ চীন) মিলে একটা বাঁধ তৈরি করেছিল। আমরা সেই বাঁধ তৈরির বিষয়ে বারবার ভারত সরকারকে জানিয়েছি। ফলে দক্ষিণ দিনাজপুর, বালুরঘাটের সাধারণ মানুষ আত্রাই নদীর পানি পায় না। যখন আত্রেয়ী নদীর পানি পুরোপুরি আটকে দেয়া হলো, তখন তো (কেন্দ্র) কিছু বলল না।’’
‘‘আমরা যেটুকু কাজ করতে যাচ্ছি তা খুব লিমিটেড। তা সত্ত্বেও যেটা ভেঙেছে তার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং কাজটা অবিলম্বে করার কথা বলা হয়েছে।’’ যোগ করেন মমতা।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে আত্রাই নদীর ওপর ২০২৪ সালে নির্মিত বাঁধের একটি বড়ো অংশ গত ২০ মে প্রবল স্রোতে ভেঙে পড়ে।
আত্রাই নদী বাংলাদেশ হয়ে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর দিয়ে আবার বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ভারতের অংশে নদীটি ‘আত্রেয়ী’ নামে পরিচিত। আত্রাই নদীর উপর রাবার ড্যাম বানালে নদীর পানি প্রবাহ কমে যাবে এমন আশঙ্কায় বারবার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নদীর পানি ধরে রাখতে ও তীব্র ভাঙন ও বন্যার কবল থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষায় ২০২২ সালে বালুরঘাটের চকভৃগুতে বাঁধ নির্মাণ শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ২০২৪ সালে কাজ শেষ হয়।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো সেই বাঁধের গার্ডওয়াল ভেঙে পড়ে। এরপর দ্রুততার সঙ্গে বালির বস্তা ফেলে সেটি মেরামতের কাজ চলছিল। কিন্তু এর চার মাসের মধ্যে গত ২০ মে ভোররাতে পানির তোড়ে বাঁধের প্রায় ৪০ ফুট অংশ ধসে পড়ে। এরপরই শুরু হয় রাজনৈতিক উত্তাপ।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাজ্য সরকারকে এ জন্য দায়ী করেন। এর একদিনের মধ্যেই নির্ধারিত প্রশাসনিক সভায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
এদিন বক্তব্যে তিস্তা প্রসঙ্গও টেনে এনে প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমকে হুঁশিয়ারি দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সিকিমে ১৪টা হাইড্রেল পাওয়ার করা হয়েছে। ফলে ওখান দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারছে না। সব পানি এসে পড়ছে বাংলার বুকে। যে যার নিজেকে নিয়ে আছে। তারা একবার তো ভাববে। ওদের আমরা ভালোবাসি। আমাদের কত পর্যটক ওখানে যায়। আপনারা এতগুলো বিদ্যুৎ প্রকল্প করলেন সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার কেন অনুমতি দিল?’’
‘‘কেউ যদি মনে করে যে অপরের উপরে নিঃশ্বাস ফেলবে, বাংলার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে, তবে মনে রাখতে হবে তারা যেন নিজের রাজ্যকে সামলায়। নিঃশ্বাস আমরাও ফেলতে পারি। আমরা মনে করি প্রত্যেকটা জিনিসের সীমাবদ্ধতা আছে, কারোরই লক্ষণ রেখা অতিক্রম করা উচিত নয়।’’
ঢাকা/কংসবণিক//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র নদ র প ন মন ত র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ