উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বৃহস্পতিবার (২২ মে) একটি নতুন যুদ্ধজাহাজ লঞ্চের সময় ‘গুরুতর দুর্ঘটনার’ নিন্দা করেছেন এবং এটিকে ‘অপরাধমূলক কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন, যা মেনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, পাঁচ হাজার টনের একটি যুদ্ধজাহাজ আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিভাবে যাত্রা শুরু করার আগে সেটির তলদেশের কিছু অংশ ভেঙে পড়েছিল, যার ফলে জাহাজটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিম জং উন উপস্থিত ছিলেন। তিনি আগামী মাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলীয় সভার আগে জাহাজটি পুনরুদ্ধার করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং জাহাজটির নকশা তৈরির সাথে জড়িতদের এই ঘটনার জন্য দায়ী করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেন যুদ্ধে সেনা পাঠানোর কথা স্বীকার করল উত্তর কোরিয়া

এআই পরিচালিত আত্মঘাতী ড্রোন পরীক্ষা করে দেখলেন কিম

অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার নেতা বলেন, “এক মুহূর্তের মধ্যে আমাদের জাতির মর্যাদা এবং গর্বকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।”

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার ফলে কোনো হতাহত বা আহত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

কিম বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনার জন্য ‘সম্পূর্ণ অসাবধানতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও অবৈজ্ঞানিক অভিজ্ঞতা’কে দায়ী করেছেন। উত্তর কোরিয়ার পূর্বাঞ্চলের বন্দর শহর চংজিনের একটি শিপইয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

কিম আরো বলেন, “জড়িতদের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ভুল’ আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য পূর্ণাঙ্গ সভায় মোকাবিলা করা হবে।”

বিবিসি প্রতিবেদন বলছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কী শাস্তি হতে পারে তা স্পষ্ট নয়। তবে উত্তর কোরিয়ার মানবাধিকারের রেকর্ড খুবই খারাপ।

দক্ষিণ কোরিয়ার সিনেমা দেখা থেকে শুরু করে দেশত্যাগের চেষ্টা পর্যন্ত নানা কারণে উত্তর কোরিয়া তার নাগরিকদের দীর্ঘমেয়াদে কারাগারে আটক রাখে।

সামরিক দুর্ঘটনার তথ্য উত্তর কোরিয়া সাধারণত প্রকাশ করে না, যদিও তারা অতীতে কয়েকবার এটি করেছে।

গত নভেম্বরে, একটি সামরিক উপগ্রহের মধ্য-আকাশে বিস্ফোরণকে ‘মারাত্মক ব্যর্থতা’ হিসাবে বর্ণনা করেছিল এবং ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে প্রস্তুতি নেওয়া’ কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেছিল।

২০২৩ সালের আগস্টে, দেশটি জরুরি বেস্টিং সিস্টেমের ত্রুটির জন্য আরেকটি ব্যর্থ উপগ্রহ উৎক্ষেপণকে দায়ী করেছিল। কিন্তু বলেছিল যে, এটি ‘কোনো বড় সমস্যা নয়’।

বৃহস্পতিবারের ঘটনাটি উত্তর কোরিয়া দেশের পশ্চিম উপকূলে একটি নতুন পাঁচ হাজার টনের যুদ্ধজাহাজ উন্মোচনের কয়েক সপ্তাহ পরে ঘটলো। দেশটির কর্মকর্তারা সেসময় জানিয়েছিলেন যে, এ ধরনের যুদ্ধজাহাজ ৭০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সজ্জিত।

কিম এই যুদ্ধজাহাজকে দেশের নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে একটি ‘অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এটি আগামী বছরের শুরুতে মোতায়েন করা হবে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন র কর ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা: নাহিদের জবানবন্দি পেশ

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি পেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জবানবন্দি পেশ শেষ করেন নাহিদ। তিনি গতকাল জবানবন্দি পেশ শুরু করেন।

আরো পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন নাহিদ ইসলাম

মালয়েশিয়া যাচ্ছেন নাহিদ ইসলাম

আজ বিকেলে তাকে জেরা করবেন এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।

এ মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে আজ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। 

উক্ত মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। 

একপর্যায়ে এ মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীকালে এ মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।খবর বাসসের।

এ মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরো দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ