ভারতে সাজাভোগ শেষে বেনাপোল দিয়ে ফিরলেন ৩৬ জন
Published: 28th, May 2025 GMT
বিভিন্ন প্রলোভনে পড়ে ভারতে যাওয়া ৩৬ বাংলাদেশি নারী-পুরুষ ও শিশুকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগের পর বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ ওই ৩৬ জনকে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
ফেরত আসা বাংলাদেশিরা যশোর, রাজশাহী, খুলনা, নোয়াখালী, কুড়িগ্রাম, নাটোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কক্সবাজার, ঢাকা, নেত্রকোনা, রংপুর, মাদারীপুর, নরসিংদী ঠাকুরগাঁ, দিনাজপুর লক্ষীপুর ও চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা। আইনি সহায়তা দিতে রাইটস যশোর, জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবি সমিতি এবং জাস্টিস ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা এই ৩৬ বাংলাদেশিকে বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে গ্রহণ করেছেন।
দেশের বিভিন্ন সীমান্তপথে তারা ভারতে গিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় পুলিশের হাতে তারা আটক হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
জাস্টিজ অ্যান্ড কেয়ারের যশোর শাখার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আব্দুল মুহিত সমকালকে জানান, ভালো কাজের প্রলোভনে দেশের বিভিন্ন সীমান্তপথে দালালের মাধ্যমে ওই ৩৬ জন ভারতের কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় যায়। সেখানে বিভিন্ন বাসাবাড়ি বা অন্যান্য কাজ করার সময় পুলিশ তাদের আটক করে। এ সময় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলখানায় পাঠায়। পরে আইনি সহায়তা দিতে ভারতীয় একাধিক মানবাধিকার সংস্থা তাদের আদালত থেকে ছাড়িয়ে নিজেদের হেফাজতে নেয়।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগের পর দুদেশের সরকারের সহযোগিতায় বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে ওই ৩৬ জন দেশে ফেরার সুযোগ পায়। ফেরত আসা বাংলাদেশিরা যদি পাচারকারীদের শনাক্ত করে আইনি সহায়তা চায়, তাহলে সেই ব্যবস্থা করা হবে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের উপপরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, ভারত ফেরত ৩৬ বাংলাদেশি নারী-পুরুষ ও শিশুকে আমরা গ্রহণ করেছি। কার্যক্রম শেষে বেনাপোল পোর্ট থানায় তাদের সোপর্দ করা হয়েছে। সেখান থেকে এনজিও সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার ও রাইটস যশোর মহিলা আইনজীবি সমিতি ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা তাদের গ্রহণ করেছে। পরে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার কাজ চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: আজহারুলের আইনজীবী
জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছেন, আপিল বিভাগের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সত্য বিজয়ী ও মিথ্যা পরাভূত হয়েছে।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন আজহারুল ইসলাম। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আজহারুলের করা আপিল সর্বসম্মতিতে মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন। আপিল বিভাগের এই রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী শিশির মনির এসব কথা বলেন।
আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াত ও বিএনপির ছয়জন শীর্ষস্থানীয় নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। অন্ততপক্ষে পাঁচজন কারাগারেই মৃত্যুবরণ করেছেন। দুনিয়ার ইতিহাসে এটি নজিরবিহীন নির্যাতনের শামিল।
আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ টি এম আজহারুল ইসলাম সৌভাগ্যবান, তিনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন। আল্লাহতায়ালা তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তাই। আমরা এটাও মনে করি, এই রায়ের মাধ্যমে সিন্ডকেটেড ইনজাস্টিসের অবসান হয়েছে। আমরা এটাও মনে করি, এই রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আদালতের মর্যাদা সমুন্নত হয়েছে।’
আরও পড়ুনমৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেলেন জামায়াত নেতা আজহারুল১ ঘণ্টা আগেআদালত চারটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, ‘প্রথমটি বলেছেন অতীতের রায়ে বাংলাদেশসহ এই ভারতীয় উপমহাদেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার পদ্ধতি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছিল। এটা ছিল সবচেয়ে বড় ভুল। আদালতের সামনে উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ মূল্যায়ন করা ছাড়াই আজহারুল ইসলামকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন যে পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি বিচারের নামে অবিচার। আরও বলেছেন, যেসব তথ্যপ্রমাণ আদালতে হাজির করা হয়েছিল, অতীতের আপিল বিভাগ তা সঠিকভাবে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলশ্রুতিতে আজকে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা হয়ে থাকবে। এর মাধ্যমে আমরা মনে করি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সত্য বিজয়ী হয়েছে মিথ্যা পরাভূত হয়েছে।’