রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) অপসারিত মেয়র ও কাউন্সিলদের পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভে অপসারিত জনপ্রতিনিধিদের সমর্থকরা ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেয়। এ সময় সিটি করপোরেশনকে কার্যকর করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়ে ঈদের পর লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন রসিকের অপসারিত মেয়র ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

বুধবার (২৮ মে) দুপুর ১২টার দিকে নগরীর শাপলা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগর ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন স্লোগান দেন সাবেক মেয়র মোস্তফা ও কাউন্সিলরদের সমর্থকরা।

নগর ভবনের মূল ফটকে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন জনপ্রতিনিধিরা। এ সময় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে মোস্তফা বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টাকে বলব, আগামী সাত দিনের মধ্যে সিটি পরিষদকে পূর্বের মতো কার্যকর করবেন। আর যদি না করেন, তাহলে ঈদের পরে ১২ অথবা ১৩ জুন থেকে নগর ভবনের মূল ফটকের সামনে মঞ্চ বসিয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে।’’ 

আরো পড়ুন:

দলীয় সিদ্ধান্ত পেলে মেয়র পদে শপথ: ইশরাক

সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা কাউন্সিলরদের অপসারণ

তিনি বলেন, ‘‘সবাই প্রস্তুত থাকবেন। দাবি আদায় করতে গেলে আঙুল বাঁকা করতে হবে। মব ভায়োলেন্স আপনারা করতে পারেন, শাহবাগ অবরোধ করতে পারেন, রংপুরের মানুষ করতে পারে না? আপনারা আপনাদের পূর্বপুরুষদের কাছে জেনে নেবেন, রংপুরের মানুষ কী করতে পারে, আর কী করতে পারে না। আগামী দিনে জ্বলে উঠবে রংপুরের সাধারণ মানুষ। আপামর জনতা দলমত নির্বিশেষে সবাইকে রংপুরকে অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।’’

সিটি করপোরেশনের বর্তমান প্রশাসক দুর্নীতিগ্রস্ত আখ্যা দিয়ে সাবেক মেয়র মোস্তফা বলেন, ‘‘এই সিটি করপোরেশনে এমন একজন দুর্নীতিবাজ বিভাগীয় কমিশনারকে দায়িত্ব দিয়েছেন, যে টাকা ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না। প্রত্যেকটা ফাইলে এক পারসেন্ট কমিশন গুনে নিয়ে তারপরে সই করবেন। এরকম একজন বিভাগীয় কমিশনারকে দায়িত্ব দিয়ে রংপুর সিটিবাসীর প্রতি স্টিম রোলার চালানো হচ্ছে।’’ 

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন সাবেক কাউন্সিলর মোখলেসুর রহমান তরু, মকবুল হোসেন, ফেরদৌসী বেগম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাকসহ সিটি করপোরেশনের অপসারিত কাউন্সিলররা। 

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হলে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর রংপুর সিটি করপোরেশনের পরিষদ ভেঙে দেন। এরপর থেকে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। 

ঢাকা/আমিরুল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র অপস র অপস র ত ক উন স সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আমি কখনোই এনসিপিকে সমর্থন করব না: সায়ান

জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কোলাকুলি করে ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে এই দেশে কিছুদিন আগেই একটা বড় দলের ত্রাহি মধুসূদন দশা হয়েছিল। আওয়ামী এমন নতুন ধারাবাহিক-গুরুতর পাপকর্ম করেছে দেশের মানুষের বিপক্ষে যে সেই দলের গুরু পাপকে ভুলিয়ে দিয়েছে প্রায়। নতুন দল এনসিপির সারজিস, হাসনাতরা প্রথম থেকেই তাদের রাজনীতি পরিষ্কার করে দিয়েছে। ধন্যবাদ। সেই হিসেবে দেশের মানুষের, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের অনেক সুবিধা হলো। দিনের শেষে ভোটেই তো দাঁড়াতে হবে আপনাদের।
জামায়াতকে বুকের সঙ্গে আগলে রেখে, রাজাকারের ‘বেকসুর খালাসকে’ সেলিব্রেট করে আপনারা আমাদের ভোট চান? বিবেকবান স্বাভাবিক সাধারণ মানুষের? একাত্তরের পরে জন্মেছি বলে কি জামায়াত চিনি না? আলবদর চিনি না? বীরাঙ্গনার ব্যথা বুঝি না? এই দেশের ছোট ছোট বাচ্চারাও ইতিহাসবিদদের মতো দিন–তারিখের রেফারেন্স দিয়ে জামায়াতের জন্ম–ইতিহাস বলতে পারবে না হয়তো। কিন্তু জামায়াত কী, তাদের আদর্শ কী, তারা এই দেশের মানুষকে নিয়ে কী করতে চায়, তা আজকে সকালে জন্ম নেওয়া বাচ্চটাও কালকে বিকেলের মধ্যে শিখে যায়।

আরও পড়ুনক্ষমতার সঙ্গে সখ্য শিল্পীর জন্য ক্ষতিকর: সায়ান২৮ ডিসেম্বর ২০২৩

এনসিপি যে এই জায়গাটা ধরতে পারে নাই, তা তাদের বুদ্ধিমত্তার নির্দেশক। তারা নতুন দেশ গড়ার কথা বলে নিজেদের ভোটের জন্য জামায়াতকে বুকে টেনেছে বলে মনে হয়। আবার তাদের আরেকটি সঞ্চয় হলো ‘আওয়ামী-ঘৃণা’। আজকে দেশে অনেক অন্যায় ঘটছে। তাদের সেসবে হেলদোল নেই। কিন্তু জামায়াত আর আলবদরকে ভালোবাসায় তারা আগুয়ান। ধন্যবাদ এই স্বচ্ছতার জন্য।

আমি প্রতিমুহূর্তে নিজের রাজনীতিকে পরিবর্তন করার পক্ষে। আজকে যাকে ভালো লাগছে, কালকে তাকে ছুড়ে ফেলে দিতে দ্বিধা করি না, মাটির প্রশ্নে। সেই হিসাবে আমার রাজনৈতিক ইমান খুব তরল এবং সেটাই আমি চাই। নাহিদরা যখন বুক পেতে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল গত জুলাইতে, ওদের জন্য ভালোবাসা ছিল, সমর্থন ছিল। সেদিন সেটাই ছিল আমার রাজনীতি। ওদের সেই মৃত্যুর মুখে দাঁড়ানো, সেটাকে সেই সময়ের সত্যিকারের দেশপ্রেম, আর মানুষপ্রেম, মাটিপ্রেম মনে হয়েছিল। তার জন্য আমি একটুও দুঃখিত হব না কোনো দিন। আমার সেই দিনের সমর্থনের জন্য আমি কোনো দিন অনুতপ্ত হব না। নেভার! কিন্তু গত কয়েক মাসের তাদের অনেক আচরণ, অনেক কিছু দেখতে দেখতে দেখছি, আজকে সেই একই দলের ছেলেমেয়েরা যে আজহারের বেকসুর খালাসকে উদ্‌যাপন করল, আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সমর্থন করল, (এমনকি লজ্জায় বা কৌশলে চুপ করে থাকল না, প্রকাশ্যে সমর্থন করল), আর নাদিরা ইয়াসমিনের অন্যায়ভাবে বদলির বিরুদ্ধে একটা কথাও বলল না, এই দেশের একজন মানুষ হিসেবে এটাই আমার আপাতত রাজনীতি যে এরপর এই নতুন দলটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আজকে থেকে বর্জন করলাম। এইটুকু করার কথা ভেবেই নিজের অশান্ত মনকে আমি খানিকটা শান্তি দিতে পারছি। আগামী নির্বাচনে আমি এনসিপি, জামায়াত, এই সমমনা দলগুলোকে ভোট নিজে তো দেবই না; বরং মানুষকে অনুরোধ করব যেন তারা এই দলগুলো থেকে দূরে থাকে। একজন একক ব্যক্তি হিসেবে এটাই আমার সাধ্য। আমি এনসিপিকে সমর্থন করব না।

আরও পড়ুনআমি ভোট দেব, তবে আজীবনের আনুগত্য দেব না২২ নভেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৭ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে রাবি, হল বন্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
  • আপস করে তো ভিতু মানুষ, আপস করে তো মেরুদণ্ডহীন প্রাণী: হুমায়ুন ফরীদি
  • চট্টগ্রামে ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার মামলার এক আসামির জামিন
  • ‘ব্যবসায় বাজিমাত’ শুধু গান নয়, এটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জোরালো বার্তা
  • মস্কো থেকে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’
  • বাংলাদেশ ব্যাংকে ‘আয়নাবাজি’
  • বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়নাবাজি
  • ভুয়া নিয়োগে একযুগ ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি
  •  বলয় নাটকের জোড়া মঞ্চায়ন
  • আমি কখনোই এনসিপিকে সমর্থন করব না: সায়ান