গরুর নাম ‘লাল বাদশাহ’ ও ‘সাদা বাদশাহ’, দাম হাঁকানো হচ্ছে ১৭ লাখ টাকা
Published: 28th, May 2025 GMT
হোলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের বড় দুটি ষাঁড়। খামারি একটির নাম রেখেছেন—‘লাল বাদশাহ’, অপরটির ‘সাদা বাদশাহ’। একটির ওজন ১৫ মণের মতো, অন্যটি প্রায় ১৬ মণ। ষাঁড় দুটি প্রস্তুত করা হয়েছে কোরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্য। দুটি ষাঁড়ের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৭ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত ১২ লাখ টাকা দাম উঠেছে বলে জানিয়েছেন খামারি। কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের সদর ইউনিয়নের লম্বরী গ্রামের নুর অ্যাগ্রো খামারে রয়েছে ষাঁড় দুটি।
গত মঙ্গলবার দুপুরে খামারটিতে গিয়ে দেখা যায়, খামারের আঙিনায় থাকা বড় একটি গাছে ষাঁড় দুটি বেঁধে রাখা হয়েছে। ষাঁড়গুলো দেখতে স্থানীয় অনেক মানুষ ভিড় করেছেন। তবে মানুষ কাছে গেলেই তেড়ে আসছে ষাঁড় দুটি।
সরেজমিনে কথা হয় খামারি আবদুল করিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, কালো বাদশাহর ওজন ১৫ মণের মতো। দৈর্ঘ্য ১০ ফুট ৫ ইঞ্চি, উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। অন্যদিকে সাদা বাদশাহর ওজন ১৬ মণ। দৈর্ঘ্য ১০ ফুট ৭ ইঞ্চি, উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি। আগামী ১ জুন টেকনাফ সদরের লম্বরীর পর্যটন মাঠের কোরবানির পশুর হাটে ষাঁড় দুটি বিক্রির জন্য তোলা হবে।
‘অনেক ক্রেতা ষাঁড় দুটি দেখতে খামারে আসছেন। ১৭ লাখ দাম চেয়েছিলাম। এর মধ্যে ১২ লাখ টাকায় কেনার ক্রেতা রয়েছে। দুটি ষাঁড়ের পেছনে যে পরিমাণ টাকা ব্যয় হয়েছে, এই মূল্যে বিক্রি করা সম্ভব নয়’আবদুল করিম, খামারিআবদুল করিম বলেন, ‘অনেক ক্রেতা ষাঁড় দুটি দেখতে খামারে আসছেন। ১৭ লাখ টাকা দাম চেয়েছিলাম। এর মধ্যে ১২ লাখ টাকায় কেনার ক্রেতা রয়েছে। দুটি ষাঁড়ের পেছনে যে পরিমাণ টাকা ব্যয় হয়েছে এই মূল্যে বিক্রি করা সম্ভব নয়।’
খামারের পাঁচ শ্রমিক মনির আহমদ, মো.
খামারের কর্মচারীরা বলেন, প্রতিদিন ১০ কেজি গমের ভুসি, ভুট্টা, খেসারি ও মটর ডাল; ৫ কেজি ছোলা বুটের গুঁড়ার মিশ্রণ, ২০ কেজি ঘাস, ৫ কেজি খড় খাওয়ানো হয় ষাঁড় দুটিকে। খাবারের পেছনে দৈনিক খরচ হয় ১ হাজার টাকার বেশি। তা ছাড়া সাবান ও শ্যাম্পু দিয়ে প্রতিদিন দুই বেলা করে গোসল করাতে হয় ষাঁড় দুটিকে।
শখ করে ষাঁড়ের নাম লাল বাদশাহ ও সাদা বাদশাহ রেখেছেন জানিয়ে খামারের মালিক আবদুল করিম বলেন, দুই বছর আগে ষাঁড় দুটি বাজার থেকে কেনা হয়। তখন ওজন ছিল তিন মণের কাছাকাছি। মোটাতাজাকরণের কোনো ওষুধ প্রয়োগ ছাড়াই সম্পূর্ণ দেশি ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ষাঁড় দুটিকে মোটাতাজা করেছেন তিনি।
খামারে কথা হয় উপজেলার সাবরাং এলাকার ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামের সঙ্গে। একটি ষাঁড় কেনার উদ্দেশে তিনি খামারে এসেছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছয় লাখ টাকায় তিনি লাল বাদশাহকে কিনতে চেয়েছেন। তবে খামারি সাড়ে ৮ লাখের কমে বিক্রি করতে রাজি নন। এত টাকা দিয়ে ষাঁড়টি কিনলে প্রতি কেজি মাংসের দাম ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি পড়বে।
খামারের এই দুটি ষাঁড় ছাড়াও কয়েকটি শেডে আরও ১১০টি গরু ও মহিষ রাখা। খামারি জানান, এর মধ্যে ৪২টি গরু-মহিষ এবারের কোরবানির হাটে বিক্রি হবে। খামার মালিক আবদুল করিম বলেন, সাত বছর ধরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খামারটি পরিচালনা করে আসছেন তিনি। খামারের কয়েকটি গাভি থেকে নিয়মিত দুধ সংগ্রহ করা হয়। প্রতিবছর খামারের পশু বিক্রি করে অন্তত ২০-৩০ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। গত বছর কোরবানির হাটে তিনি ৭৪টি গরু-মহিষ বিক্রি করেছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, টেকনাফে এবারের কোরবানির পশুর চাহিদা আছে ৭ হাজার ৬৯৬টি। খামারে বিক্রির উপযোগী পশু প্রস্তুত আছে ৬ হাজার ৭৪১টি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হারাধন চন্দ্র সুশীল বলেন, আবদুল করিমের মতো বহু খামারি পশু লালন-পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। কোরবানির হাটে মিয়ানমারের চোরাই গরু কিংবা রোগাক্রান্ত পশু যেন বিক্রির জন্য তোলা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল কর ম র ক রব ন র ল ল ব দশ হ ১৭ ল খ র জন য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ড. ফরিদ আহমদ সোবহানীকে সংবর্ধনা দিল গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) হিসেবে অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী নিয়োগ পাওয়ায় তাকে সংবর্ধনা জানিয়েছে পেশাদার মানবসম্পদ উন্নয়নভিত্তিক সংগঠন ‘গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ’।
সংগঠনটির ৩০৯তম পাঠচক্র শেষে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ড. সোবহানীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশের সদস্য, উপদেষ্টা এবং কর্পোরেট ও শিক্ষাজগতের বিভিন্ন পেশাজীবী।
অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শিক্ষাবিদ ও গবেষক। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার কিম্বারলেতে অবস্থিত সোল প্লাতজে ইউনিভার্সিটির ইকোনমিক্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস অনুষদের ভিজিটিং প্রফেসর, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক অস্ট্রেলিয়ান একাডেমি অব বিজনেস লিডারশিপের একজন রিসার্চ ফেলো এবং মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি এমএআরএ এর অ্যাকাউন্টিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটেরও ভিজিটিং প্রফেসর।তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের নিয়োগ বোর্ডে এক্সটারনাল মেম্বার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
অধ্যাপক সোবহানীর শিক্ষা জীবনের শুরু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, যেখানে তিনি অ্যাকাউন্টিংয়ে মেজরসহ বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি সায়েন্স মালয়েশিয়া থেকে এইচআর অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন।তিনি দেশে-বিদেশে সম্মানিত জার্নাল ও ম্যাগাজিনে প্রায় ১০০টিরও বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে একাডেমিক জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. রওশন আলী বুলবুল। তিনি বলেন, “ড. সোবহানী আমাদের সংগঠনের অ্যাডভাইজার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে জ্ঞান ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন। আমরা গর্বিত যে তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এটি আমাদের সবার জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা।”
তিনি আরো জানান, গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে গ্রিন এইচআর ধারণা ছড়িয়ে দিতে এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সংগঠনটি ইতোমধ্যে ৫৫টিরও বেশি বই পাঠের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ৩০৯টি পাঠচক্র সম্পন্ন করেছে, যেখানে সফট স্কিল, পাওয়ার বিআই, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং সমসাময়িক উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৮টি ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোগ্রাম এবং তিনটি ট্রেইনার অব ট্রেইনার্স (টিওটি) প্রোগ্রাম সম্পন্ন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে “গ্রীন এইচআর ফাউন্ডেশন” গঠনের মাধ্যমে আরো সুসংগঠিত কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনাও রয়েছে।
সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির চিফ অ্যাডভাইজার ড. মোশাররফ হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম (সাবেক হেড অব এইচআর, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ), এস এম জাহিদ হাসান (সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ওয়ালটন গ্রুপ), রানা চক্রবর্তী (সিওও, বাংলাদেশ স্পেশালিস্ট হসপিটাল), মোহাম্মদ ইকরাম হোসেন, সৈয়দ আকরাম হোসেন, সৈয়দ মো. আসিফ রহমান, সাইফুল আমিন হাসানাত, প্রণব চন্দ্র, এমরান হোসেন, তৌহিদ হোসেনসহ কোর মেম্বাররা।
সংবর্ধনায় অংশ নেওয়া সদস্যরা জানান, “গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ শুধু পেশাগত উন্নয়নের প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি একে অপরকে শেখার ও সহমর্মিতার বন্ধনে আবদ্ধ করার একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ।”
ঢাকা/এসবি