তামহার মালিকদের অর্থ আত্মসাৎ: ন্যায়বিচার চায় প্রতারণার শিকার ক্রেতা
Published: 30th, May 2025 GMT
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ তামহা সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের ৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিকেরা বিনিয়োগকারীদের অর্থ লোপাট করেই ক্ষান্ত হননি, তারা ব্রোকারেজ হাউজটি বিক্রি করতে গিয়ে ক্রেতা রহমান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমানের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এদিকে আইনি কাঠামো অনুযায়ী তামহা সিকিউরিটিজের দায়-দেনা নিষ্পত্তি এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় সহযোগিতা করলেও, বিনিয়োগকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আনিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুর রহমান তদন্তসাপেক্ষে ন্যায়বিচার পেতে গত ২০ মে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বরাবর আবেদন করেন।
এর আগে গত ১১ মে ‘দুদকে বিএসইসির চিঠি: তামহার মালিকদের সম্পত্তি বিক্রির অর্থ আত্মসাৎ, তদন্তের অনুরোধ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি ডটকম। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে ওবায়দুর রহমান বিএসইসির কাছে বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক ধারণা তুলে ধরতে এবং বিভ্রান্তি দূর করতে চিঠি দেন।
এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “আমি তামহা সিকিউরিটিজ কিনতে চেয়েছিলাম। সেজন্য প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষকে অগ্রীম টাকাও প্রদান করেছি। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির মালিকেরা তাদের দায়-দেনার তথ্য আমার কাছে গোপন করেছেন। এটি জানার পর অগ্রীম টাকা ফেরত চাইলে তারা জানায়, বিনিয়োগকারীদের টাকা পরিশোধ করে আমাকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বুঝিয়ে দেবে। এ কাজের জন্য তারা আমার কাছে সহযোগিতাও চেয়েছিল, যেটা আইন অনুযায়ী আমি করেছি। এখন তারা আমাকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বুঝিয়ে দিচ্ছে না। টাকাও ফিরিয়ে দিচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে আমি কমিশনের কাছে ন্যায়বিচার পেতে অনুরোধ জানিয়েছি।”
স্পষ্টীকরণ ও বিভ্রান্তি দূরীকরণ প্রসঙ্গে চিঠিতে ওবায়দুর রহমান উল্লেখ করেন, তিনি রহমান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দীর্ঘদিন স্বচ্ছ ও আইনি কাঠামোর ভেতরে থেকে তামহা সিকিউরিটিজের দায়-দেনা নিষ্পত্তি ও বিএসইসি'র নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিষ্ঠানটিকে রক্ষা করার জন্য কাজ করছেন। তামহা সিকিউরিটিজের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.
সে সময় চুক্তি মোতাবেক তামহা সিকিউরিটিজের সমস্ত দায়-দেনা আমাদের কাছে প্রকাশ করতে উক্ত পরিচালকগণ আইনগতভাবে বাধ্য ছিল। কিন্তু তারা অসৎ উদ্দেশ্যে সেগুলো গোপন করে। পরে অডিটের মাধ্যমে জানা যায়, উক্ত কোম্পানির ৬৫ কোটি টাকার দায়-দেনা আছে যা উক্ত পরিচালকগণ চুক্তি স্বাক্ষরের সময় জানায়নি এবং এ কাজে তারা দুইটি সফটওয়্যার ব্যবহার করেছে। এটি বাংলাদেশ সিকিউরিটি আইন অনুযায়ী আইনসম্মত নয়।
চিঠিতে ওবায়দুর রহমান আরো উল্লেখ করেন, উক্ত পরিচালকগণ বিনিয়োগকারীদের টাকা নিজেরাই তুলে ফেলেছেন এবং গ্রাহকের যে শেয়ার ছিল সেগুলো বিক্রি করে তারা টাকা নিয়ে নিয়েছেন। সত্যি হলো, এ কথা আমি এবং আমার প্রতিষ্ঠান জানত না। মূলত আমরা ভিকটিম। তামহা সিকিউরিটিজের পরিচালকেরা প্রতারণা করেছে এবং আমাদের অর্থ আত্মসাৎ করেছে।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর যখন প্রতিষ্ঠানটির কী কী দেনা আছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) জানতে চায়, তখন হারুনুর রশিদ তার ট্রেড সাসপেনশন এবং পুনরায় অডিট করার জন্য আবেদন করে। ৩০ নভেম্বর ডিএসই তামহা সিকিউরিটিজকে চিঠি দেয়, অডিট শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের সেল এবং ট্রান্সফার না করার। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করার জন্য বিএসইসি চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। কমিটি তদন্ত করে ১০০ কোটির উপরে গ্রাহকের দায় পায়। তামহা সিকিউরিটিজের পরিচালকগণ গ্রাহকের টাকা এবং শেয়ার আত্মসাৎ করেছে বলে রিপোর্টে প্রতিয়মান হয় যা সে সময় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। এরপর বিএসইসি, ডিএসই তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকগণের নামে মামলা করে।
রাইজিংবিডি ডটকমে প্রকাশিত সংবাদের কেন্দ্রবিন্দু অর্থাৎ সম্পত্তি বিক্রয় নিয়ে যে সন্দেহ উত্থাপিত হয়েছে, সেটির বিক্রয় দলিলে ‘পক্ষ ছিলেন না’ উল্লেখ করে চিঠিতে ওবায়দুর রহমান বলেন, আমি ওই সম্পত্তির সাথে কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট নই। যেসব আর্থিক লেনদেনের কথা সংবাদে তুলে ধরা হয়েছে, তা বাস্তব প্রেক্ষাপটে ছিল তামহা সিকিউরিটিজের গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের জন্য। উক্ত প্রতিষ্ঠানের তৎকালীন পরিচালকেরা বিএসইসি'র নজরদারির সময় তাদের নিজস্ব ব্যাংক এ্যাকাউন্ট জব্দ থাকায় আমাকে অনুরোধ করেন, যেন রহমান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের নামে একটি হিসাব খুলে শুধু গ্রাহকের পাওনা পরিশোধে সহায়তা করি। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ধরনের ব্যবস্থায় অনিচ্ছুক থাকলেও, গ্রাহকদের স্বার্থ এবং কমিশনসহ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের নির্দেশনার প্রতি সম্মান রেখে আমি সহযোগিতা করেছি।
ওবায়দুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ বিএসইসি’র
তামহা সিকিউরিটিজের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা চলতি বছরের ২৭ মার্চ চিঠির মাধ্যমে কমিশনকে অবহিত করে, এই ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নামে সম্পত্তি (গুলশানের বাড়ি) বিক্রির অর্থ মালিকপক্ষ আত্মসাৎ করেছেন এবং এ অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে ওবায়দুর রহমান সহায়তা করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পাওনা ফেরতের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। তামহা সিকিউরিটিজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উক্ত সম্পত্তি (গুলশানের বাড়ি) বিক্রয় করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণ করবে বলে তাদের মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তিপত্র কমিশনে দাখিল করে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পাওনা ফিরিয়ে দিতে ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নামে সম্পত্তি বিক্রির অর্থ মালিকপক্ষের আত্মসাৎ এবং ওবায়দুর রহমানের সহায়তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।
তামহা সিকিউরিটিজের মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
২০২১ সালে তামহা সিকিউরিটিজ অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে বিনিয়োগকারীর ৮৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগে আরো জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির মালিক ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি করেছেন। ব্রোকারেজ হাউজটি দুটি ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এর মধ্যে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মিথ্যা ও ভুয়া বিবরণী ও পোর্টফোলিও স্টেটমেন্ট প্রদান করা হতো। হাউজটিতে গ্রহকদের মোট ঘাটতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্রাহকের সমন্বিত হিসাবে ঘাটতি ৯২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ও শেয়ারের বাজার মূল্যের ঘাটতি ৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকা।
উপরিউক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর বিএসইসি তামহা সিকিউরিটিজের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে দেয়। ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ ও তার সহযোগীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এদিকে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের দায়ে পুঁজিবাজারে শেয়ার লেনদেন ও ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট (ডিপি) স্থগিত হওয়া ব্রোকার হাউজ তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
ঢাকা/তারা//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর প র ক ষ ত গ র হক র ব এসইস প রক শ র জন য অন র ধ কর ছ ন ন র পর র পর চ র সদস ড এসই সহয গ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে: ড. আনিসুজ্জামান
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, “সরকার পুঁজিবাজার এবং বিনিয়োগকারীদের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। বিনিয়োগকারীদের মতামতগুলো নিয়ে সরকার কাজ করবে। পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি'র মাল্টিপারপাস হলে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে ড. আনিসুজ্জামান বলেন, “সবাইকে দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং কাজ করতে হবে। পুঁজিবাজারের সব বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি শীর্ষ সংগঠন বা ফোরাম গঠন করার অনুরোধ করছি। যাতে আগামীতে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সরকার ও বিএসইসির সংযোগের সুযোগ বৃদ্ধি পায় এবং সংযোগ আরো কার্যকরী হয়।”
আরো পড়ুন:
চবিতে বিআইসিএমর বিনিয়োগ শিক্ষা প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত, এমওইউ স্বাক্ষর
এনআরবিসি ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে ১০০ শতাংশ
এবাই প্রথম পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে সরকার। এতে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় বিএসইসি'র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, কমিশনার মো. আলী আকবর এবং বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও বিএসইসির শীর্ষ কর্মকর্তাগণ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এ সময় দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নের পথে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও করণীয় বিষয় উঠে আসে।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট নিরসনে নতুন ফান্ড আনয়ন ও সরকারের পুঁজিবাজার সহায়ক ভূমিকা গ্রহণ, অন্যান্য সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণ, ডিভিডেন্ড ট্যাক্স ও ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স মওকুফকরণ, পুজিবাজারে ক্যাটাগরি পরিবর্তনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় ও কোম্পানিগুলোকে আরো দায়বদ্ধ করা, পুঁজিবাজারে সব অনিয়ম-কারসাজির বিরুদ্ধে তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রেখে সংস্কার বাস্তবায়ন, পুঁজিবাজারের প্রতি সবার আস্থা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ, বাইব্যাক আইন বা শেয়ার পুনঃক্রয় আইন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ, ইস্যুয়ার কোম্পানিগুলোর অনিয়মসমূহের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিকাশ ও উন্নয়ন, পুঁজিবাজারে ভালো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে এবং ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন সরকারি-বেসরকারি কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তকরণে উদ্যোগ গ্রহণ, গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সাধন, বিনিয়োগ বান্ধব নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, পুজিবাজারে অপ্রদর্শিত আয়ের অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান, ইস্যুয়ার কোম্পানিগুলোর আর্থিক বিবরণীর স্বচ্ছতা ও যথার্থতা নিশ্চিতকরণে অডিটরের দায়িত্ব নিরূপণ ও ব্যবস্থা গ্রহণ, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রণোদনা প্রদান, আইসিবি'র বাজার সহায়ক ভূমিকা নিশ্চিতকরণ, পুঁজিবাজারের সকল স্তরে দক্ষতা-পেশাদারিত্ব নিশ্চিতকরণ, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের সংযোগ বৃদ্ধি, বিএসইসিতে পরামর্শ বক্স স্থাপন ও সময়ে সময়ে মতবিনিময় সভা আয়োজন ইত্যাদি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
সভায় ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বিএসইসির চেয়ারম্যান-কমিশনারবৃন্দ বিনিয়োগকারী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের বিভিন্ন মতামত এবং প্রশ্নের জবাব দেন।
বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের প্রস্তাবনাগুলো বিবেচনায় নিয়ে আগামীতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে সরকার ও বিএসইসির পক্ষ হতে আশ্বস্ত করা হয়। সভায় বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিবৃন্দ পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিবৃন্দ তথা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এ ধরণের সংযোগের ফলে আগামীতে সবার মিলিত প্রচেষ্টায় পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে বলে বিএসইসি আশা করে।
ঢাকা/এনটি/মেহেদী