নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাতে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বাড়ছে। তবে তা এখনও বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি সমকালকে জানান, টানা বর্ষণ এবং ভারত থেমে আসা পানিতে গোমতীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রন কক্ষ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১০৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৮১ মিটার। যদিও বিপৎসীমা নির্ধারিত আছে ১১ দশমিক ৩০ মিটার। নদীর পানির উচ্চতাসীমা এখনও বিপৎসীমার ৪.
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতে কুমিল্লা রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে নগরীর অধিকাংশ প্রধান পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। জলাবব্ধতার সৃষ্টি হয় নগরীর বেশ কিছু এলাকায়। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে জনজীবনে। পানি ঢুকে পড়েছে বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। শুক্রবার সকাল থেকে সরেজমিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লা সিটি কপোরেশনে সামনের সড়ক, রেইসকোর্স, বিসিক শিল্পনগরী, জিলা স্কুল সড়ক, নগরীর টমছম ব্রিজ থেকে কান্দিরপাড় সড়ক, ঠাকুরপাড়া, মুরাদপুর, ছাতিপট্টি, কান্দিরপাড়-রাণীর বাজার সড়ক, অশোকতলা, ধর্মপুর ছায়া বিতান ও শুভপুরসহ নগরীর নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। অনেকেই ড্রেনে পড়ে আহত হন।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি রোকেয়া বেগম শেফালী বলেন, নগরীতে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই জলাবব্ধতার সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতামুক্ত নগরীর জন্য নাগরিক ও নগর কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে। পানি প্রবাহের ড্রেন ও খাল গুলি এখনই খনন করতে হবে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন সমকালকে বলেন, গত দুই দিনের হঠাৎ বৃষ্টিতে নগরীর বেশ কিছু সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। এতে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা পানি সরাতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, নগরীর পানি প্রবাহের প্রধান প্রধান বড় বড় ড্রেন ও খালের মাটি অপসারণে ৯ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ঈদের পর কাজ শুরু হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ও ব পৎস ম নদ র প ন শ ক রব র প রব হ নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
হাতিয়ায় যাত্রীবাহী ট্রলারডুবিতে এখনও নিখোঁজ ৬, একজনের মরদেহ উদ্ধার
হাতিয়ায় ভাসানচর থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী ট্রলারডুবিতে এক পুলিশ সদস্যসহ এখনও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন জেলেরা। নিহত ব্যক্তির নাম গিয়াস উদ্দিন। তিনি ডাক বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
এর আগে শনিবার বিকেলে ভাসানচরের উত্তর পাশে মেঘনা নদীতে জাহাঙ্গীর মাঝির ট্রলারটি ৩৯ জন যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। এতে ২২ জন সাধারণ যাত্রী, ৬ জন রোহিঙ্গা, ৩ জন পুলিশ, ৪ জন আনসার ও ৪ জন ট্রলারের মাঝি-মল্লা ছিলেন। এটি হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের করিম বাজার ঘাটে আসার পথে দুর্ঘটনা ঘটে।
ট্রলার থেকে উদ্ধার হওয়া জিয়াউল হক নামে একজন সমকালকে জানান, তারা ঈদের ছুটিতে ভাসানচর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে নদীতে ট্রলারের তলা ফেটে পানি ঢুকে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় সবাই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্য একটি মাছের ট্রলারে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এদিকে জীবিত উদ্ধার হওয়া ৪ জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন, ফারহানা বিনতে মমিন, ইসমত আরা, মো. তারেক, ফাতেমা খাতুন। এদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান হাতিয়া নলচিরা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আশিষ চন্দ্র সাহা।
ট্রলার দুর্ঘটনার বিষয়ে হাতিয়া নলচিরা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বলেন, ‘উদ্ধার অভিযান চলছে। অনেকে উদ্ধার হয়েছে। আবহাওয়া খারাপ থাকায় উদ্ধার কাজে বিলম্ব হচ্ছে। নৌবাহিনীর একটি দল, কোষ্টগার্ডের একটি দল ও নৌপুলিশ উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।’ বৈরী আবহাওয়ায় ট্রলারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বলে জানান তিনি।